প্রতিবছর বিশ্বে যত শিশু জন্ম নেয়, তার প্রায় ৬ শতাংশ জন্মগত ত্রুটি নিয়ে জন্মগ্রহণ করে। প্রসবকালীন ও নবজাতক মৃত্যুর অন্যতম কারণ এই জন্মগত ত্রুটি। সন্তান মায়ের গর্ভে আসার তিন মাসের মধ্যেই বেশির ভাগ অঙ্গপ্রত্যঙ্গ তৈরি হয়ে যায়। তাই এই সময়ে মায়ের যত্ন নেওয়া খুবই গুরুত্বপূর্ণ।
একটি নবজাতকের মাথা থেকে শুরু করে পা পর্যন্ত—যেকোনো জায়গায় এই ত্রুটি থাকতে পারে। তার মধ্যে কেন্দ্রীয় স্নায়ুতন্ত্রের জটিলতা তুলনামূলকভাবে বেশি (যেমন পিঠের মেরুদণ্ডে পানির ঠোসার মতো টিউমার)। এ ছাড়া পেটের ক্ষুদ্রান্ত্র-বৃহদন্ত্রের সমস্যা, নাভি দিয়ে বা পাশ থেকে পেটের নাড়ি বাইরে বের হয়ে আসা, হার্টের সমস্যা, কিডনির সমস্যা, লিঙ্গের সমস্যা, বিকলাঙ্গ হাত-পা, ঠোঁটকাটা, তালুকাটা ইত্যাদি।
যেসব কারণে জন্মগত ত্রুটি হতে পারে
যদিও বেশির ভাগ জন্মগত ত্রুটির কারণ চিকিৎসাবিজ্ঞানে এখনো অজানা, তবু কারণ বিশ্লেষণ করলে আমরা প্রাথমিকভাবে কয়েকটি বিষয় বিবেচনায় আনতে পারি।
১. বংশগত
২. মায়ের পুষ্টিহীনতা
৩. মায়ের গর্ভকালীন অসুস্থতা
৪. গর্ভকালীন সময়ে এক্স-রে বা সিটিস্ক্যান
৫. গর্ভকালীন সময়ে বিভিন্ন ধরনের ওষুধ সেবন
কীভাবে এই জন্মগত ত্রুটির হার কমিয়ে আনতে পারি
১. গর্ভকালীন সময়ে মায়ের শারীরিক ও মানসিক সুস্বাস্থ্য নিশ্চিত করা। এই সময়ে মায়ের স্ট্রেস হতে পারে শিশুর বড় কোনো ঝুঁকির কারণ। সন্তান মাতৃগর্ভে থাকা অবস্থায় মায়ের পাশাপাশি বাবার ভূমিকাও গুরুত্বপূর্ণ।
২. যেসব দম্পতি সন্তান নিতে আগ্রহী, তাঁদের সেই সময় থেকে চিকিৎসকের শরণাপন্ন হওয়া। গর্ভাবস্থায় ন্যূনতম চারবার চিকিৎসকের কাছে যাওয়া জরুরি। প্রথম তিন মাসে একবার, দ্বিতীয় তিন মাসে একবার, আর শেষের তিন মাসে দুইবার।
৩. গর্ভকালীন ফলিক অ্যাসিড ও ভিটামিন সাপ্লিমেন্ট জন্মগত ত্রুটির হার কমিয়ে আনতে সাহায্য করে।
৪. গর্ভাবস্থায় যেকোনো ধরনের তেজস্ত্রিয় বিকিরণ (রেডিয়েশন) থেকে দূরে থাকুন।
৫. চিকিৎসকের পরামর্শ ছাড়া ওষুধ সেবন থেকে বিরত থাকুন। আপনার গর্ভাবস্থা সম্পর্কে আপনার চিকিৎসককে অবহিত করুন।