স্ট ক্রিকেটে শততম ম্যাচ খেলার দ্বারপ্রান্তে মুশফিকুর রহিম। ২০০৫ সালে বাংলাদেশের জার্সিতে তাঁর এই সংস্করণে অভিষেক হয়েছে। দীর্ঘ ২০ বছরের চলার পথে তিনি নিজেকে ‘মিস্টার ডিপেন্ডেবল’ হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করেছেন। বাংলাদেশের ক্রিকেটে পঞ্চপাণ্ডবের একজন মুশফিক। সময় গড়ানোর সঙ্গে সঙ্গে ওয়ানডে এবং আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটে গুডবাই বলে দিয়েছেন ৩৮ বছর বয়সী এই উইকেটকিপার-ব্যাটার। এখন তিনি শুধু জাতীয় টেস্ট দলের একজন সদস্য। অভিজ্ঞ সেই মুশফিক এবার সাদা পোশাক লাল বলের ক্রিকেটে অনন্য এক মাইলফলক ছুঁতে চলেছেন। আগামীকাল থেকে শুরু হবে বাংলাদেশ ও আয়ারল্যান্ডের মধ্যকার সিরিজের দ্বিতীয় ও শেষ টেস্ট ম্যাচ। মিরপুর টেস্টের একাদশে থাকলে তা হবে মুশফিকের শততম টেস্ট ম্যাচ। বাংলাদেশের প্রথম কোনো ক্রিকেটার হিসেবে টেস্টে শততম ম্যাচ খেলবেন তিনি। অভিষেকের পর থেকে এখন পর্যন্ত ৯৯টি ম্যাচ খেলেছেন মুশফিক। দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ৭৪ ম্যাচ খেলেছেন মুমিনুল হক।
লর্ডসে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে টেস্ট অভিষেক হয়েছে মুশফিকের। ১৮২ ইনিংসে ৩৮ গড়ে বাংলাদেশের হয়ে সর্বোচ্চ ৬ হাজার ৩৫১ রান করেছেন মুশফিক। তিনি ক্যারিয়ারসেরা ২১৯* রানের ইনিংসটি খেলেছিলেন ২০১৮ সালে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে মিরপুরে। এ ছাড়া তাঁর আর দুটি ডাবল টেস্ট সেঞ্চুরি রয়েছে। সব মিলিয়ে টেস্ট ক্যারিয়ারে ১২টি সেঞ্চুরি ও ২৭টি হাফ সেঞ্চুরি করেছেন মুশফিক। বাংলাদেশের জার্সিতে তিনিই টেস্টে সর্বোচ্চ রানের মালিক। এ তালিকায় দ্বিতীয় স্থানে আছেন তামিম ইকবাল। ৭০ ম্যাচে ১০ সেঞ্চুরিতে ৫১৩৪ রান তাঁর। তিনে মুমিনুল হক। তিনি ৭৪ ম্যাচে ১৩ শতকে ৪৭০৯ রান করেছেন। এ ছাড়া সাকিব আল হাসান ৭১ ম্যাচে ৪৬০৯ এবং হাবিবুল বাশার ৫০ ম্যাচে ৩০২৬ রান করেছেন।
টেস্ট ক্যারিয়ারে বেশির ভাগ সময়ই ৫ নম্বর পজিশনে ব্যাট করেছেন মুশফিক। তাঁর শেষ ৫ ইনিংসে একটি সেঞ্চুরি রয়েছে। জুনে শ্রীলংকা সফরে গলে ১৬৩ রান করেছিলেন। এরপর ৪৯ এবং কলম্বো টেস্টে ৩৫ ও ২৬ রানের ইনিংস খেলেছেন মিস্টার ডিপেন্ডেবল। সর্বশেষ মুশফিক তাঁর ক্যারিয়ারের ৯৯তম টেস্ট ম্যাচ খেলেছেন আয়ার্যান্ডের বিপক্ষে সিলেটে। ৫-এ নেমে ২৩ রান করেছিলেন। সিলেট টেস্ট ইনিংস ও ৪৭ রানে জিতে নেয় বাংলাদেশ। এবার হোম ভেন্যু মিরপুর শেরেবাংলা স্টেডিয়ামে সিরিজের শেষ টেস্ট ম্যাচ খেলবে বাংলাদেশ। প্রিয় আঙিনায় মুশফিক খেলবেন তাঁর ক্যারিয়ারের শততম টেস্ট ম্যাচ। এখানে ২৭ টেস্টে (৪৯ ইনিংস) ১৮৫৫ রান করেছেন মুশফিক। ক্যারিয়ারসেরা ইনিংসও তাঁর এই মাঠেই। রয়েছে ৪টি শতক এবং ৮টি ফিফটি। ক্রিকেটের প্রতি মুশফিকের নিবেদন নিয়ে প্রশ্ন তোলার সুযোগ নেই। ক্যারিয়ারের শেষলগ্নে এসেও এখনও তিনি কঠোর অনুশীলন করেন। কাক ডাকা ভোরে প্র্যাকটিস করে নিজেকে শানিয়ে নেন। ফিটনেসের দিকেও বিশেষ মনোযোগী তিনি। নতুন মাইলফলক ছুঁতে যাওয়া মুশফিককে অভিনন্দন জানিয়ে আয়ারল্যান্ড কোচ হাইনরিখ মালান গতকাল বলেছেন, ‘দারুণ অর্জন। নিজের দেশের হয়ে ১০০ টেস্ট খেলা অনেক বড় অর্জন। অনেক পরিশ্রমের ফল এগুলো। টেস্টের জন্য অনেক পরিশ্রম করেছে সে। তাকে অভিনন্দন জানাই।’