রাজধানীর ভাটারা থানার জুলাই আন্দোলনে এনামুল হক হত্যাচেষ্টা মামলায় আত্মসমর্পণ করে জামিন পেলেন চিত্রনায়িকা অপু বিশ্বাস। আজ রবিবার ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে আইনজীবীর মাধ্যমে আত্মসমর্পণ করে জামিনের আবেদন করেন অপু বিশ্বাস।
ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মোহাম্মদ মোস্তাফিজুর রহমান শুনানি শেষে আদালত ১০ হাজার মুচলেকায় জামিনের আবেদন মঞ্জুর করেন। আজ রবিবার বেলা ১২ টা ৪০ মিনিটের ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের এজলাসে উপস্থিত হন। এরপর আদালতের শুনানিকালে এজলাসের কাঠগড়ায় দাঁড়িয়ে ছিলেন আপু বিশ্বাস।
অপু বিশ্বাসের পক্ষের আইনজীবী মো. মোজাফফর হোসেন (জিকু) ও আবুল বাশার কামরুলসহ অনেকেই তার জামিন চেয়ে শুনানিতে বলেন, গত ২ জুন উচ্চ আদালত থেকে ৬ সপ্তাহের জামিন পান অপু বিশ্বাস। উচ্চ আদালতের নির্দেশে জামিনের মেয়াদ শেষ হওয়ায় আদালত এসে স্বেচ্ছায় আত্মসমর্পণ করেছেন। মামলার অভিযোগে আসামির নাম একবারও বলা হয়নি। এই বিষয়ে মামলার বাদী হলফনামা দিয়ে ভুল স্বীকার করেছেন। মামলার অভিযোগে আওয়ামী লীগের অর্থের জোগানদাতা হিসেবে উল্লেখ করা হলেও তার নাম উল্লেখ নেই। তার বিরুদ্ধে মামলায় সুনির্দিষ্ট কোন অভিযোগ নেই। এই মামলায় নুসরাত ফারিয়াও জামিন পেয়েছে। সহ-আসামির শর্তে বা যে কোন শর্তে আসামির জামিনের প্রার্থনা করছি।
জামিনের বিরোধিতা করে রাষ্ট্রপক্ষের অতিরিক্ত পাবলিক প্রসিকিউটর শামসুজ্জামান সুমন বলেন, আসামি আওয়ামী লীগের অর্থের জোগানদাতা হিসেবে কাজ করেছেন। দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের জন্য আসামি প্রার্থী হয়েছেন। নির্বাচনের প্রচারও করেছে। আসামি ফ্যাসিস্ট শেখ হাসিনাকে বিভিন্নভাবে সহযোগিতা করেছে। এই মামলার জামিন পাওয়ার কোন সুযোগ নেই। আসামির জামিন নামঞ্জুর করে কারাগারে আটক রাখার প্রার্থনা করছি।
অপু বিশ্বাস বলেন, আমি একজন অভিনয় শিল্লী। সব জায়গায় আমাকে যেতে হয়। আমি কখনো রাজনীতি করিনি, রাজনীতি বুঝিও না। আমি অভিনয় করি। এটা আমার জব। আমার একটি ছোট বাচ্চাও আছে। তার কথা বলার সময় আদালতে উপস্থিত অন্যান্য আইনজীবীরা তাকে উদ্দেশ্য করে কটুবাক্য বলতে থাকলে তিনি মাথা নিচু করে দাঁড়িয়ে ছিলেন।
একই মামলায় গত ১৮ মে গ্রেপ্তার হন আরেক চিত্রনায়িকা নুসরাত ফারিয়া। পরদিন তাকে কারাগারে পাঠানো হয়। গত ২০ মে জামিন পান নুসরাত ফারিয়া।
মামলার বিবরণী থেকে জানা যায়, জুলাই আন্দোলনের সময় ১৯ জুলাই ভাটারা থানার সামনে অবস্থান নেন আন্দোলনকারীরা। তাদের ওপর গুলি চালানো হয়। এনামুল হকের পায়ে গুলি লাগে। তিনি হাসপাতালে চিকিৎসা নেন। পরে সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভানেত্রী শেখ হাসিনাসহ ২৮৩ জনের নাম উল্লেখ ও অজ্ঞাতনামা তিন-চারশ’ জনের বিরুদ্ধে ঢাকার সিএমএম আদালতে মামলাটি করেন এনামুল হক।
মামলায় অপু বিশ্বাস, আসনা হাবিব ভাবনা, নুসরাত ফারিয়া, অভিনেতা জায়েদ খানসহ ১৭ জন তারকাকেও আসামি করা হয়। মামলায় এসব অভিনেতা-অভিনেত্রীদের বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের বিপক্ষে অবস্থান নিয়ে আওয়ামী লীগের অর্থ অর্থের জোগানদাতা হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে।