পঞ্চগড়ে একদিনের ব্যবধানেমাঝারি থেকে মৃদু শৈত্যপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে। তবে দিন দিন তাপমাত্রার পারদ নিচের দিকে নামা শুরু করেছে। তাপমাত্রা নেমে এসেছে ৮ এর ঘরে। প্রায় দিন মৌসুমের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা বিরাজ করছে পঞ্চগড়ে ।
আজ শনিবার সকাল ৯ টায় পঞ্চগড়ে ৮ দশমিক ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়। এর আগে গতকাল শুক্রবার পঞ্চগড়ে সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ৭ দশমিক ৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এটি ছিল এই মৌসুমের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা এবং সারাদেশের মধ্যে সর্বনিম্ন তাপমাত্রা।
আজ শনিবার সকাল ১১টার পর সূর্যের দেখা মিলেছে এবং ঝলমলে রোদ উঠেছে। তিনদিন পর রোদের দেখা মেলায় সাধারণ মানুষের মধ্যে স্বস্তি ফিরে এসেছে।
পঞ্চগড়ের তেতুলিয়া আবহাওয়া পর্যবেক্ষণ কেন্দ্রের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা জিতেন্দ্রনাথ রায় তাপমাত্রা রেকর্ডের তথ্যটি নিশ্চিত করে জানান, বরফের পাহাড় হিমালয় থেকে হিমেল বাতাস প্রবাহিত হওয়ায় তাপমাত্রার পারদ নিচে নেমেছে। তবে বিকাল থেকে শুরু করে পর দিন সকাল দশটা পর্যন্ত ঘন কুয়াশা পড়া অব্যাহত থাকবে। কুয়াশা বেশি থাকলে বা ঘন থাকলে তাপমাত্রা বেড়ে যায়। আর কুয়াশা কেটে গিয়ে বাতাস প্রবাহিত শুরু হলে তাপমাত্রা নিচে নেমে যায়। শনিবার সকাল ১১টার পর কুয়াশা কেটে যাওয়ায় সূর্য দেখা গেছে। সূর্যের মুখ দেখা গেলেও হিমেল বাতাস প্রবাহিত হওয়ায় শীতের দাপট রয়েছে। শরীরে বেশ ঠান্ডা অনুভূত হচ্ছে।
এদিকে দরিদ্র ছিন্নমুল অনেক মানুষ দীর্ঘ এই শীতে গরম কাপড়ের অভাবে দুর্ভোগে পড়েছে । বিশেষ করে এই তীব্র শীতে চা, পাথর, বালু শ্রমিক, দিনমজুর, কৃষি শ্রমিক, রিকশা ও ভ্যান চালকসহ নিম্ন আয়ের কর্মজীবী মানুষেরা বেশী বিপাকে পড়েছেন। তীব্র শীতে তাদের আয় ইনকাম কমে যাওয়ায় তারা পরিবার পরিজন নিয়ে খুব কষ্টে দিনযাপন করছেন। শীতবস্ত্রের অভাবে অনেকে সকালে ও সন্ধ্যায় খড়কুটো জ্বালিয়ে আগুনের তাপ নিয়ে শীত নিবারনে চেষ্টা করছেন।
পঞ্চগড় জেলা প্রশাসক মো.সাবেত আলী জানান, এ পর্যন্ত পঞ্চগড় জেলায় ৪৫ হাজার কম্বল বিতরণ করা হয়েছে।
তবে, সরকারি বেসরকারী ভাবে কিছু শীত বস্ত্র বিতরণ করা হলেও তা প্রয়োজনের তুলনায় অনেক কম। এই শীতে শিশুরা বেশি কাবু হয়ে পড়েছে। এখন পর্যন্ত পঞ্চগড় জেলায় শিশুদের মাঝে কোনো গরম কাপড় বিতরণ করা হয়নি।
এদিকে শীতজনিত নানা রোগব্যাধি দেখা দিয়েছে। সর্দি, জ্বর, নিউমোনিয়া ও ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হয়ে তারা জেলা ও উপজেলা হাসপাতালগুলোতে ভর্তি হচ্ছে শিশু ও বৃদ্ধরা।
এছাড়া দীর্ঘদিন কুয়াশা অব্যাহত থাকায় শীতকালীন ফসল বিশেষ করে আলু, শীতকালীন শাক সবজি ও বীজ তলায় বোরো বীজের চারার ক্ষতির শঙ্কা করছে কৃষকরা।
এ প্রসঙ্গে কৃষি বিভাগ জানায়, ফসল রক্ষায় কৃষকদের পরামর্শ প্রদান করা হচ্ছে।