রংপুরের তারাগঞ্জে গণপিটুনিতে জামাই-শ্বশুর নিহতের ঘটনায় গ্রেপ্তার চার আসামির তিন দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত।
আজ বৃহস্পতিবার বেলা ১টার দিকে তারাগঞ্জ সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আমলি আদালতের বিচারক কৃষ্ণ কমল রায় এ রিমান্ড মঞ্জুর করেন।
এর আগে মামলার তদন্ত কর্মকর্তা পরিদর্শক (তদন্ত) রফিকুল ইসলাম পাঁচ দিনের রিমান্ডের আবেদন করেন। শুনানি শেষে আদালত তিন দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।
নিহত রুপলালের স্ত্রী ভারতী রানী বাদী হয়ে গত রবিবার দুপুরে তারাগঞ্জ থানায় ৭০০ জনকে অজ্ঞাতনামা আসামি করে হত্যা মামলা দায়ের করেন। এরপর পুলিশ ভিডিও ফুটেজ বিশ্লেষণ ও তথ্যপ্রযুক্তির সহায়তায় রাতে অভিযান চালিয়ে ঘটনার সঙ্গে জড়িত চারজনকে গ্রেপ্তার করে। তারা হলেন সয়ার ইউনিয়নের বালাপুর এলাকার এবাদত হোসেন (২৭), বুড়িরহাট এলাকার আক্তারুল ইসলাম (৪৫), রফিকুল ইসলাম (৩৩) ও রহিমাপুরের মিজানুর রহমান (২২)।
মামলার এজাহার সূত্রে জানা যায়, গত শনিবার রাত ৮টা ৩০ মিনিটের দিকে মিঠাপুকুরের ছড়ান বালুয়া এলাকা থেকে ভাগনিজামাই প্রদীপ লালকে নিয়ে ভ্যানে করে বাড়ি ফেরার পথে বুড়িরহাট বটতলা মোড়ে স্থানীয়রা রুপলাল ও প্রদীপকে থামিয়ে তল্লাশি চালান। এ সময় ‘স্পিড ক্যানের’ বোতলে দুর্গন্ধযুক্ত তরল ও কিছু ওষুধ পেয়ে উত্তেজিত জনতা তাদের বুড়িরহাট উচ্চ বিদ্যালয়ের মাঠে নিয়ে গিয়ে মারধর করে। গুরুতর আহত অবস্থায় হাসপাতালে নেওয়া হলে রুপলালকে মৃত ঘোষণা করা হয় এবং প্রদীপ লাল ভোরে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে মারা যান।
কোর্ট ইনচার্জ আমিনুল ইসলাম রিমান্ড মঞ্জুরের বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা পাঁচ দিনের রিমান্ডের আবেদন করেন। শুনানি শেষে বিচারক তিন দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।
এদিকে, দায়িত্বে অবহেলার ঘটনায় গতকাল বুধবার রাতে তারাগঞ্জ থানার দুই এসআইসহ ৮ পুলিশ সদস্যকে সাময়িক বরখাস্ত করেছে জেলা পুলিশ। তাদের রংপুর জেলা পুলিশ লাইন্সে সংযুক্ত করা হয়েছে। এ ছাড়া গণপিটুনীতে দুজনের মৃত্যুর ঘটনায় জেলা পুলিশের পক্ষ থেকে একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। গতকাল রাতে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার শরীফ মোহাম্মদ ফারুকুজ্জামানকে প্রধান করে তিন সদস্য বিশিষ্ট তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়। এ কমিটিকে আগামী ৭ কার্যদিবসের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দিতে বলা হয়েছে।