অন্য ভাষায় :
শনিবার, ০৬:৫৪ অপরাহ্ন, ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৪ই বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
নোটিশ :
মানব সেবায় নিয়োজিত অলাভজনক সেবা প্রদানকারী সংবাদ তথ্য প্রতিষ্ঠান।

আইপিএল আবারো শিরোপা জিতলো চেন্নাই

ক্রীড়া ডেস্ক:
  • আপডেট টাইম : মঙ্গলবার, ৩০ মে, ২০২৩
  • ৪৭ বার পঠিত

সোমবার আহমেদাবাদের নরেন্দ্র মোদি স্টেডিয়ামে ৫ উইকেটের রুদ্ধশ্বাস জয় পেয়েছে চেন্নাই। গুজরাটের স্বপ্নভঙ্গ করে পঞ্চমবারে মতো আইপিএল শিরোপা নিজেদের করে নিয়েছে তারা। এবার শিরোপা জিতে চেন্নাই বসে গেছে মুম্বাইয়ের পাশে। আইপিএলের ১৬ আসরে ১০ বারই শিরোপা ভাগ হয়েছে এই দুই দলের মাঝে৷ দুই দলই চ্যাম্পিয়ন হয়েছে সমান ৫ বার করে।

চেন্নাইয়ের জয়টা এদিন সহজ ছিল না। গুজরাতের দেয়া ২১৫ রানের লক্ষ্য বৃষ্টি বাধায় দেখা দেয় আরো কঠিন হয়ে; রূপ নেয় ১৫ ওভারে ১৭১ রানে। একটা পর্যায়ে শেষ ৬ বলে প্রয়োজন হয় ১৩ রানের। ছোট লক্ষ্য, হরহামেশাই যা সহজেই পাড় হয়ে যায় যেকোনো দল। তবে তা কঠিন করে তোলেন মোহিত শর্মা।

প্রথম ৪ বল থেকে মোটে ৩ রান দেন মোহিত। ফলে এবার শেষ ২ বলে চাই ১০ রান। এবার যখন জয়ের স্বপ্নে অনেকটাই বিভোর হয়ে গুজরাতবাসী। টানা দ্বিতীয়বারের মতো শিরোপা ধরে রাখার উল্লাসে প্রস্তুতি নিতে শুরু করে তারা। তবে সেই স্বপ্ন ভেঙে দেন জাদেযা। অসম্ভবকে সম্ভব করেন তিনি। প্রথমে ছয়, পরে চার; বল বাউন্ডারি ছোঁয়ার আগেই চেন্নাই সমর্থকরা হয়ে উঠেন উল্লাস মুখর।

এর আগে রিজার্ভ ডেতে টসে হেরে ব্যাট করতে নেমে অন্য আট-দশটা সাধারণ ম্যাচের মতোই খেলতে থাকে গুজরাত। পুরো আসরে যেই ছন্দ নিয়ে খেলেছে তারা, আজো যেন ধরে রাখে একই ধারা। সুবাদে রানের পাহাড় গড়ে তুলে গুজরাত, তাদের ভয়-ঢরহীন ইনিংস শেষ হয় ৪ উইকেটে ২১৪ রান তুলে।

বেশ ভালোই জমে উঠেছিল গুজরাতের উদ্বোধনী জুটি। ছন্দ ধরে রেখে উইকেটের চারদিক থেকে রান খুঁজে নিতে শুরু করেন গিল, ভয়ঙ্কর হয়ে উঠতে শুরু করে তার ব্যাট৷ তবে আজ আর ইনিংসটা তিন অঙ্কের ঘরে নিতে পারেননি। বাধা হয়ে দাঁড়ান এম এস ধোনি। চেন্নাই কাপ্তানের অবিশ্বাস্য স্ট্যাম্পিংয়ে ২০ বলে ৩৯ রান করে থামতে হয় তাকে।

ধোনি যেন বাইশ গজের এক অপরূপ সৌন্দর্য।জাতীয় দল ছেড়েছেন অনেক দিন, বয়সও বাড়ছে সময়ের সাথে, চুলগুলোও হয়ে আছে সাদা-কালা। কিন্তু ধোনি ধোনিই আছেন, আছেন তার মতো করেই। আজ যেভাবে গিলকে সেকেন্ডের ভগ্নাংশে স্ট্যাম্পিং করলেন, কে বলবে আইপিএল ছাড়া সারা বছরে ধোনির দেখা মেলে না!

এদিকে শুভমান গিলের সাথে ভালোই তাল মেলাচ্ছিলেন ঋধিমান সাহা। গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচের গুরুত্ব বুঝে জ্বলে উঠে তার ব্যাট। শেষ পাঁচ ম্যাচে যেখানে তার মোট রান ৪৪, সেখানে আজ তুলে নেন আসরে নিজের দ্বিতীয় ফিফটি। তার ব্যাটে আসে ৩৯ বলে করেন ৫৪ রান। আউট হবার আগে সাই সুদর্শনের সাথে মিলে সংগ্রহ করেন ৪৪ বলে ৬৪ রান।

তবে সুদর্শনের ব্যাট আরো সুদর্শন হয়ে উঠে সাহা আউট হলে৷ রীতিমতো ঝড় তুলেন তিনি। অর্ধশতক ছুঁয়ে ছুটতে থাকেন শতকের দিকে। যদিও শতকের আশা পূরন হয়নি। ইনিংসের ৩ বল থাকতে ৪ রানের আক্ষেপ নিয়ে ফিরতে হয় তাকে৷ ৪৭ বলে ৯৬ রান আসে তার ব্যাটে। ১২ বলে ২১ রানে অপরাজিত থাকেন অধিনায়ক হার্দিক পান্ডিয়া।

জবাবে অবশ্য ইনিংস শুরু করতে নেমেছিল চেন্নাই। তবে ৩ বল খেলতেই বাঁধা হয়ে দাঁড়ায় বৃষ্টি।দলীয় সংগ্রহ তখম বিনা উইকেটে ৪ রান। বৃষ্টি থামার পর মাঠ পরিচর্যা শেষে ফের খেলা শুরু হয় ১২:৪০ মিনিটে। বৃষ্টি আইনে ওভার কমে চেন্নাইয়ের নতুন লক্ষ্য দাঁড়ায় ১৫ ওভারে ১৭১ রান!

তৃতীয় দিনে গড়ালো আইপিএল ফাইনাল। বিস্মিত হলেও এটাই সত্য। তবে এবার আর রিজার্ভ ডে নয়, ২৯মে খেলা শুরু হলেও বৃষ্টি বাধায় দিনের গণ্ডি পাড়ি দিয়ে ক্যালেন্ডারের পাতা ৩০ মে ছুঁয়েছে। অথচ আইপিএল ফাইনালের তারিখ নির্ধারণ ছিল ২৮ মে। তবে বৃষ্টির তীব্রতায় সেদিন মাঠেই গড়ায়নি একটি বল, হয়নি টসও। ফলে ম্যাচটি গড়ায় ২৯ মে রিজার্ভ ডেতে।

৯০ বলে ১৭১ রান, অসম্ভব না হলেও সহজ নয় মোটেও। তবে দমে যায়নি চেন্নাই। ডেভন কনওয়ে ও রিতুরাজের উদ্বোধনী জুটি স্বপ্ন দেখাতে থাকে, ঝড়ো ব্যাটিংয়ে কমাতে থাকে ব্যবধান। তবে বাঁধা হয়ে দাঁড়ান নূর আহমেদ। সপ্তম ওভারে বল করতে এসে দুই ওপেনারকেই নিজের শিকার বানান এই আফগান। ১৬ বলে ২৬ করে রিতুরাজ ও কনওয়ে আউট হন ২৫ বলে ৪৭ রানে।

উদ্বোধনী জুটি ফেরার পর ঝড় তোলেন রাহানে। যদিও তা বড় হয়নি, তবে প্রয়োজন বিবেচনায় তার ১৩ বলে ২৭ রান দলের জন্য বড় অবদান। তাকে ফেরান মোহিত শর্মা। পরের ওভারে এসেও জোড়া আঘাত হানেন মোহিত, ফেরান শেষ আইপিএল ম্যাচ খেলতে নামা আম্বাতি রায়দু ও ধোনিকে। রায়দু আউট হবার আগে ৮ বলে ১৮ করলেও, ধোনি ফেরেন হতাশ করে, গোল্ডেন ডাক মেরে।

এমতাবস্থায় চেন্নাইয়ের দলীয় সংগ্রহ ১২.৫ ওভারে ৫ উইকেটে ১৪৯। জয়ের জন্য ২১ রান চাই শেষ দুই ওভারে। সহজ সমীকরণ, তবে তা কঠিন করে তুলেন শিভাম দুবে। ওয়ানডাউনে নেমেও ঠিক ব্যাটে-বলে মেলাতে পারছিলেন না তিনি। ফলে খেলা গড়ায় শেষ ওভারে। এবার ১৩ রান দরকার ছিল শেষ ৬ বলে।

ছোট লক্ষ্য, হরহামেশাই যা সহজেই পাড় হয়ে যায় যেকোনো দল। তবে গুজরাতবাসীকে আশা দেখান মোহিত শর্মা। প্রথম ৪ বল থেকে মোটে ৩ রান দেন তিনি। এবার শেষ ২ বলে চাই ১০ রান। ছয়-চার হাঁকিয়ে দলকে সেই লক্ষ্যে পৌঁছে দেন জাদেযা৷ শেষ বলে রুদ্ধশ্বাস জয় পায় চেন্নাই। শিরোপা পুনরুদ্ধার করে তারা। ৬ বলে অপরাজিত থাকেন জাদেযা, দুবের সংগ্রহ ২১ বলে ৩২ রান।

নিউজটি শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এ জাতীয় আরো খবর..
© All rights reserved © 2021 SomoyerKonthodhoni
Theme Dwonload From ThemesBazar.Com