রবিবার, ০৬:৪৩ অপরাহ্ন, ১৯ জানুয়ারী ২০২৫, ৫ই মাঘ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ , ই-পেপার
নোটিশ :
মানব সেবায় নিয়োজিত অলাভজনক সেবা প্রদানকারী সংবাদ তথ্য প্রতিষ্ঠান।

মহান শ্রমিক দিবস উপলক্ষ্যে শ্রমজীবী মানুষদের শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশনের শুভেচ্ছা

রিপোর্টারের নাম
  • আপডেট টাইম : সোমবার, ১ মে, ২০২৩
  • ৫৪ বার পঠিত

১ মে আন্তর্জাতিক শ্রমিক দিবস উপলক্ষ্যে সর্বস্তরের শ্রমজীবী মানুষদের সংগ্রামী শুভেচ্ছা জানিয়েছে বাংলাদেশ শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশন। আজ এক যৌথ বিবৃতিতে সংগঠনের ভারপ্রাপ্ত কেন্দ্রীয় সভাপতি অধ্যাপক হারুনুর রশিদ খান ও সাধারণ সম্পাদক এডভোকেট আতিকুর রহমান বলেছেন, বিশ্বের লাখো কোটি মেহনতি শ্রমিকদের কাছে এই দিবসের গুরুত্ব অপরিসীম। এই দিন অধিকার বঞ্চিত শ্রমিকদের শোষণের শৃঙ্খল ভাঙার প্রেরণা যুগ যুগ ধরে প্রেরণা জুগিয়ে যাচ্ছে।

নেতৃদ্বয় বলেন, ১৮৮৬ সালের আমেরিকার শিকাগো শহরে হে মার্কেটের সামনে উপযুক্ত মজুরি ও আট ঘণ্টা কর্মঘণ্টার দাবিতে শ্রমিকরা ব্যাপক আন্দোলন গড়ে তুলে। আন্দোলনরত শ্রমিকদের ওপর শোষকদের নির্দেশে পুলিশ গুলি চালিয়ে এগারো জন ও ফাঁসিতে ঝুলিয়ে আরও ছয় জন শ্রমিককে হত্যা করে। আজকে দেখা যাচ্ছে শোষকরা ইতিহাসে বিলীন হয়ে গেছে। অপরপক্ষে আত্মত্যাগকারী শ্রমিকরা ইতিহাসের পাতায় জ্বলজ্বল করছে। শতাব্দীর পর শতাব্দী ধরে মেহনতি শ্রমিকসহ বিশ্ববাসী তাদের স্মরণ করছে। আমরা আত্মত্যাগকারী শ্রমিকদের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করছি।

তারা বলেন, আমাদের দেশে শ্রমিকরা সবচেয়ে অবহেলিত, নির্যাতিত-নিপীড়িত। প্রতিনিয়ত বেঁচে থাকার জন্য তাদের সংগ্রাম করতে হচ্ছে। মালিক ও রাষ্ট্রের যৌথ জাঁতাকলে পড়ে তাদের জীবন যাপন দুর্বিষহ হয়ে পড়েছে। দুই বেলা কোনো মতে খেয়ে বেঁচে থাকার জন্য তারা দিনরাত অমানুষিক পরিশ্রম করে যাচ্ছে। পৃথিবীতে আজ পুঁজিবাদের উন্মুক্ত চর্চা চলছে। বাংলাদেশ এর বাইরে নেই। এক শ্রেণির মালিকরা সম্পদ বৃদ্ধির নেশায় মগ্ন হয়ে আছে। ফলে ১৮৮৬ সালে শোষণের যে চিহ্ন ছিল আজকের দিনে তার রূপ বদল হলেও ভেতরের ভয়াবহতা ঠিকই থেকে গেছে। আজও শ্রমিকদের দিয়ে অতিরিক্ত সময় কাজ করানো হয়। এখনো শ্রমিকরা তাদের ন্যায্য মজুরি থেকে বঞ্চিত। এখনো শ্রমিকরা শ্রেণি বৈষম্যের নামে অবহেলা ও লাঞ্চনার শিকার হচ্ছে। সমাজ-রাষ্ট্রে তাদের ন্যূনতম মূল্যায়ন করা হয় না। অথচ শ্রমিকের রক্ত-ঘামে রাষ্ট্রের চেহারার উন্নয়ন ঘটছে। তা সত্ত্বেও রাষ্ট্র শ্রমিকদের অধিকারের ব্যাপারে নিশ্চুপ।

নেতৃদ্বয় বলেন, দেশের অর্থনীতির চাকা সচল রাখতে প্রাতিষ্ঠানিক-অপ্রাতিষ্ঠানিক সকল খাতের শ্রমিকদের সমান অবদান আছে। প্রাতিষ্ঠানিক খাতের শ্রমিকরা যৎ সামান্য অধিকার পেলেও অপ্রাতিষ্ঠানিক খাতের শ্রমিকরা শূন্যের ঘরে রয়ে গেছে। অপর দিকে নারী ও পুরুষ শ্রমিকদের মজুরির মাঝে বিস্তর ফারাক রয়ে গেছে। আমরা সম কাজে নারী ও পুরুষের মজুরি সমান চাই। একই সাথে সকল খাতের শ্রমিকদের ন্যায় সঙ্গত অধিকার প্রতিষ্ঠার জন্য শ্রমজীবী মানুষদের দুর্বার আন্দোলন গড়ে তোলার আহ্বান জানাচ্ছি।

আন্তর্জাতিক শ্রমিক দিবস যথাযথ মর্যাদায় পালনের জন্য সর্বস্তরের শ্রমজীবী মানুষসহ দেশবাসীর প্রতি নেতৃদ্বয় আহ্বান জানান। একই সাথে বাংলাদেশ শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশন ও ফেডারেশনের অর্ন্তভুক্ত ট্রেড ইউনিয়ন, ক্রাফট ফেডারেশনের সকল পর্যায়ের নেতাকর্মীদের দিবসটি যথাযথভাবে পালনের জন্য আহ্বান জানান। ফেডারেশন আন্তর্জাতিক শ্রমিক দিবস উপলক্ষ্যে সাত দিন ব্যাপী নিম্নোক্ত কর্মসূচি গ্রহণ করেছে।
১.মহানগরী, জেলা, উপজেলা ও থানার উদ্যোগে আলোচনা সভা, র‌্যালি ও শ্রমিক সমাবেশ।
২.ট্রেড ইউনিয়ন ও ক্রাফট ফেডারেশনের উদ্যোগে আলোচনা সভা, র‌্যালি ও শ্রমিক সমাবেশ।
৩.আন্তর্জাতিক শ্রমিক দিবসের ডাক শীর্ষক লিফলেট শ্রমিকদের মাঝে বিতরণ করা।
৪.অস্বচ্ছল ও কর্ম-অক্ষম শ্রমিকদেরকে আর্থিক সহায়তা প্রদান।
৫.বেকার শ্রমিকদের কর্মসংস্থানের জন্য সহায়তা প্রদান।
৬.শ্রমিক পরিবারের মেধাবী ছাত্র-ছাত্রীদের মাঝে শিক্ষা উপকরণ বিতরণ করা।
৭.শ্রমিকদের নিয়ে বনভোজন, সামষ্টিক ভোজ ও ক্রীড়া প্রতিযোগিতার আয়োজন করা।
৮.অন্যান্য শ্রমিক সংগঠনের নেতৃবৃন্দের সাথে সৌজন্য সাক্ষাৎ ও মতবিনিময়।

নিউজটি শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এ জাতীয় আরো খবর..
© All rights reserved © 2021 SomoyerKonthodhoni
Theme Dwonload From ThemesBazar.Com