শনিবার, ০৫:৫৪ অপরাহ্ন, ০৯ অগাস্ট ২০২৫, ২৫শে শ্রাবণ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ , ই-পেপার
নোটিশ :
মানব সেবায় নিয়োজিত অলাভজনক সেবা প্রদানকারী সংবাদ তথ্য প্রতিষ্ঠান।
শিরোনাম :
নির্বাচনের ওপর মানুষের আস্থা নষ্ট হয়ে গেছে: সিইসি কয়েদিরা পাচ্ছেন ধর্মীয় বই, কারাগারে প্রতি ওয়ার্ডে নামাজের ব্যবস্থা-ধর্ম উপদেষ্টা ডেঙ্গুতে ৩ জনের মৃত্যু, হাসপাতালে ভর্তি ৩২৫ দেশবাসীর কাছে নিঃশর্ত ক্ষমা চাইলেন চুন্নু জুলাই সনদের প্রশ্নে বিএনপির বিরোধিতা জামায়াত ও এনসিপির, সংকট কোথায়? বড় কিছু ঘটার অপেক্ষায় : শাকিব খান রাজশাহীতে ১২ প্রকল্পের উদ্বোধন উপদেষ্টা আসিফের আগামীতে দেশ পরিচালনায় বিএনপির সম্ভাবনা বেশি, মানুষের প্রত্যাশাও বেশি-তারেক রহমান গাজীপুর : সাংবাদিক তুহিন হত্যায় সরাসরি অংশ নেওয়া সাতজন গ্রেপ্তার: পুুলিশ কাদেরবিরোধীদের কাউন্সিল আজ, আবার ভাঙছে জাপা

কাদেরবিরোধীদের কাউন্সিল আজ, আবার ভাঙছে জাপা

সময়ের কণ্ঠধ্বনি ডেস্ক:
  • আপডেট টাইম : শনিবার, ৯ আগস্ট, ২০২৫
  • ৭ বার পঠিত

জাতীয় পার্টির (জাপা) নেতৃত্ব নিয়ে বিরোধ আদালতে গড়ানোর পর দলটি ষষ্ঠবারের মতো ভাঙতে যাচ্ছে। দলটির চেয়ারম্যান জি এম কাদেরের বিরোধীরা আজ শনিবার জাপার নামে কাউন্সিল করতে যাচ্ছে। যদিও জি এম কাদের নিযুক্ত মহাসচিব ব্যারিস্টার শামীম হায়দার পাটোয়ারী এ কাউন্সিলকে অবৈধ আখ্যা দিয়েছেন।

চার নির্বাচনে আওয়ামী লীগের সঙ্গে সমঝোতা করে অংশ নিয়ে স্বৈরাচারের দোসর তকমা পাওয়া গত তিন সংসদে জাপা গৃহপালিত বিরোধী দলের ভূমিকায় ছিল। ১৯৮৬ সালে হুসেইন মুহম্মদ এরশাদের প্রতিষ্ঠিত দলটি তাঁর জীবদ্দশায় চারবার ভাঙে। ২০১৯ সালে জি এম কাদের দলের নেতৃত্বে আসার পর এটি আরও একবার ভেঙেছে।
গত বছরের ৭ জানুয়ারির নির্বাচনের পর রওশন এরশাদের নেতৃত্বে তাঁর অনুসারীরা একই নামে দল করেছে। জুলাই গণঅভ্যুত্থানে শেখ হাসিনার পতনের পর জি এম কাদের সমর্থন করেন অন্তর্বর্তী সরকারকে। কিন্তু অভ্যুত্থানের ছাত্র নেতৃত্বের প্রবল আপত্তির মুখে সরকারি বৈঠকে জাপাকে ডাকা বন্ধ করা হয়। স্বৈরাচারের দোসর আখ্যা দিয়ে জাপার কার্যালয়-কর্মসূচিতেও হামলা হয়। এরপর জি এম কাদের সরকারের সমালোচক হিসেবে আবির্ভূত হন।

তাঁর এ ভূমিকার পর জাপার গঠনতন্ত্রের ২০(১) ‘ক’ ধারা সংশোধনের দাবি তোলেন দলটিতে আওয়ামী লীগপন্থি হিসেবে পরিচিত নেতারা, যারা শেখ হাসিনার সময়ে মন্ত্রী-এমপি ছিলেন। জি এম কাদেরের সভাপতিত্বে গত মে মাসে জাপার প্রেসিডিয়ামে সিদ্ধান্ত হয়, ২৮ জুন দলের কাউন্সিল হবে।

প্রধান উপদেষ্টার কর্মসূচির কারণে চীন মৈত্রী সম্মেলন কেন্দ্র ভাড়া পাওয়া যাচ্ছে না– অজুহাতে এ কাউন্সিল স্থগিত করেন জি এম কাদের। যদিও এতে চেয়ারম্যান পদে প্রার্থী হওয়ার ঘোষণা দিয়েছিলেন দলটির জ্যেষ্ঠ কো-চেয়ারম্যান ব্যারিস্টার আনিসুল ইসলাম মাহমুদ, মহাসচিব পদে প্রার্থী হতে চেয়েছিলেন কো-চেয়ারম্যান রুহুল আমিন হাওলাদার।

জি এম কাদের কাউন্সিল স্থগিত করে এ দুজন এবং জাপার মহাসচিব মুজিবুল হক চুন্নুকে দলের সব পদ থেকে অব্যাহতি দেন। ২০ (১) ‘ক’ ধারার ক্ষমতাবলে আরও চার প্রেসিডিয়াম সদস্যকেও বহিষ্কার করা হয়। এ সিদ্ধান্ত চ্যালেঞ্জ করে জাপার ১০ নেতা মামলা করেন। মামলায় চেয়ারম্যানের দায়িত্ব পালনে জি এম কাদেরকে নিষেধাজ্ঞা দেন আদালত।

দলের ভাঙন নয়, নবযাত্রা
এরই ধারাবাহিকতায় নিজেকে জাপার ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান দাবি করে কাউন্সিল ডেকেছেন আনিসুল ইসলাম মাহমুদ। গতকাল শুক্রবার রাজধানীর গুলশানের হাওলাদার টাওয়ারে সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, কাউন্সিলের মাধ্যমে দীর্ঘদিনের বিভেদ মি‌টি‌য়ে ঐক্যবদ্ধ হয়ে নবযাত্রা করবে জাপা। কাউন্সিলে সারাদেশ থেকে হাজার হাজার কাউন্সিলর ও ডেলিগেট অংশ নেবেন।

জাপার ভাঙনের ভাষ্যকে নাকচ করে তিনি বলেন, পৃথক দল নয়, আদালতের আদেশ ও গঠনতন্ত্র অনুযায়ী কাউন্সিল করছি। নির্বাচন কমিশনকে অবহিত করেছি। কাউন্সিলে তাদের প্রতিনিধি পাঠাতে জানিয়েছি। ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারির একতরফা নির্বাচনের পর গঠিত শেখ হাসিনা সরকারের মন্ত্রী আনিসুল ইসলাম বলেন, কাউন্সিলের মাধ্যমে জাপায় গণতন্ত্র ফিরিয়ে আনতে চাই। কাউন্সিলে গঠনতন্ত্রের বিতর্কিত ধারা বাতিল করা হবে। জাতীয় পার্টি চলবে যৌথ নেতৃত্বে।

কাউন্সিল আহ্বানের প্রেক্ষাপট ব্যাখ্যা করে হাসিনা সরকারের সাবেক প্রতিমন্ত্রী মুজিবুল হক চুন্নু বলেন, ৩০ জুলাই আদালত চেয়ারম্যানের সাংগঠনিক কার্যক্রমে সাময়িক নিষেধাজ্ঞা জারি করেন। ফলে দলের সাংগঠনিক কার্যক্রম স্থবিরতার মুখে পড়ে। তাই রাজনৈতিক বাস্তবতা, আসন্ন নির্বাচন, নির্বাচন কমিশনের সময়সীমার বিধিবিধান মেনে গঠনতন্ত্রের ২০(২) (খ) ধারা অনুযায়ী যথাযথ সাংগঠনিক উদ্যোগ নেওয়া হয়। এ ধারার ক্ষমতাবলে গত ৫ আগস্ট আনিসুল ইসলাম মাহমুদের সভাপতিত্বে প্রেসিডিয়াম সভা হয়। এতে সর্বসম্মতিক্রমে নেতৃত্বের ধারাবাহিকতা রক্ষায় কাউন্সিল আয়োজনের সিদ্ধান্ত হয়।

চুন্নু বলেন, নির্বাচন কমিশনের নির্ধারিত সময় অনুযায়ী কাউন্সিল আয়োজনের সময়সীমা ছিল ৩০ জুন। পরে নির্বাচন কমিশনের কাছে দুই মাসের সময় বৃদ্ধি চেয়ে আবেদন করা হয়, যা এখনও প্রক্রিয়াধীন। রুহুল আমিন হাওলাদার বলেন,  ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে যে পরিবর্তনের প্রত্যাশা সৃষ্টি হয়েছে, তা বাস্তবায়নে জাতীয় পার্টি নতুন অভিযাত্রায় নেমেছে। গত বছরের মার্চে রওশনের নেতৃত্বাধীন জাপায় চলে যাওয়া কো-চেয়ারম্যান সৈয়দ আবু হোসেন বাবলাও ছিলেন সংবাদ সম্মেলনে। ছিলেন জি এম কাদেরের সিদ্ধান্তে পদ হারানো নেতারা।

রায়ের অপব্যাখ্যা দেওয়া হচ্ছে
রাজধানীর কাকরাইলে জাপার কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে শামীম হায়দার পাটোয়ারী বলেন, বহিষ্কৃত নেতারা কাউন্সিল ডাকার এখতিয়ার রাখেন না। আদালত বহিষ্কৃত নেতাদের বিষয়ে আদেশ দেননি। এ কারণে তারা এখনও বহিষ্কৃত রয়েছেন। আদালতের আদেশে শুধু চেয়ারম্যান এবং দপ্তর সম্পাদককে দায়িত্ব পালনে নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়েছে।

শামীম হায়দার বলেন, বহিষ্কৃত এক নেতা নিজেকে মহাসচিব দাবি করছেন। তাঁর পদের বিষয়ে কোর্ট কোনো আদেশ দেননি। অতীতে যারাই জাতীয় পার্টি ভেঙেছে, তারাই একটি বা দুটি এমপির দলে পরিণত হয়েছে।

আসন্ন নির্বাচনে জাপার অংশগ্রহণের সম্ভাবনার বিষয়ে রাতের ভোটখ্যাত ২০১৮ সালের নির্বাচনের এমপি শামীম হায়দার বলেন, প্রথমত নির্বাচনের কোনো পরিবেশ নেই; মানুষের নিরাপত্তা নেই। নির্বাচন স্বচ্ছ করতে সরকারের সদিচ্ছা ও সক্ষমতা থাকতে হবে। তা দেখা গেলে জাপা নির্বাচনে অংশ নেবে।

নিউজটি শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এ জাতীয় আরো খবর..
© All rights reserved © 2021 SomoyerKonthodhoni
Theme Dwonload From ThemesBazar.Com