মঙ্গলবার, ০১:৪৬ অপরাহ্ন, ১৯ অগাস্ট ২০২৫, ৪ঠা ভাদ্র, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ , ই-পেপার
নোটিশ :
মানব সেবায় নিয়োজিত অলাভজনক সেবা প্রদানকারী সংবাদ তথ্য প্রতিষ্ঠান।

রাজনীতির বলি আর হতে চান না আমলারা

সময়ের কণ্ঠধ্বনি ডেস্ক:
  • আপডেট টাইম : মঙ্গলবার, ১৯ আগস্ট, ২০২৫
  • ৪ বার পঠিত

২০২৪ সালের জুলাই গণ-অভ্যুত্থানে শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর প্রশাসন ও পুলিশের ভেতরে ব্যাপক পরিবর্তন এসেছে। এক বছরের মাথায় এখন কর্মকর্তাদের বড় অংশের উপলব্ধি- রাজনীতির বলি হয়ে জেল, মামলা বা চাকরিচ্যুতির খেসারত আর দেওয়া যাবে না। তারা বলেছেন, প্রজাতন্ত্রের কর্মচারী হিসেবে কাজ হবে রাষ্ট্রের প্রতি দায়বদ্ধ থেকে। কোনো রাজনৈতিক দলের স্বার্থে কাজ করে নিজের সম্মান ও ভবিষ্যৎ নষ্ট করতে চান না।

বিসিএস ক্যাডারের বিভিন্ন কর্মকর্তাদের ক্যাডার ও ব্যাচভিত্তিক পৃথক সংগঠন রয়েছে। এসব ক্যাডারের মধ্যে বিশেষ করে প্রশাসন ও পুলিশ ক্যাডারের কর্মকর্তারা আসন্ন নির্বাচনে স্বচ্ছতা ও নিরপেক্ষতায় কর্মকর্তাদের ভূমিকা নিয়ে আলোচনা করছেন। তারা বলছেন, আসন্ন নির্বাচনে জেলা প্রশাসক (ডিসি) ও পুলিশ সুপারদের (এসপি) লটারির ভিত্তিতে দায়িত্ব দেওয়ার আলোচনা আছে। এটি কর্মকর্তাদের আত্মশুদ্ধির জন্য জরুরি। যে কোনো প্রক্রিয়ার লটারি হলো সর্বশেষ মাধ্যম। যখন কোনো উপায় থাকে না, তখন লটারি করা হয়। সরকারি কর্মকর্তাদের দলীয় লেজুড়বৃত্তি ঠেকাতে এ ব্যবস্থা করতে হচ্ছে।

প্রজাতন্ত্রের কর্মচারীরা কেন রাজনৈতিক ব্যক্তির দলীয় স্বার্থ বাস্তবায়নে নেমে পড়েন- এ নিয়ে সাধারণ কর্মকর্তারা বেশ ক্ষুব্ধ। তারা মনে করেন, এতে করে সামাজিকভাবে বেশ সম্মানহানির শিকার হচ্ছেন কর্মকর্তারা। নির্বাচনের মতো গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব যিনি পালন করবেন, তাকে লটারির মাধ্যমে পছন্দ করার অনেক ঝুঁকি রয়েছে। একেকটি জেলার পরিস্থিতি একেক রকম। সে অনুযায়ী দক্ষ কর্মকর্তা বাছাই করার সুযোগ থাকবে না। অন্যদিকে লটারির মাধ্যমে বাছাই করতে গিয়ে তুলনামূলক কম দক্ষ কর্মকর্তা চলে আসার সুযোগ সৃষ্টি হতে পারে। এমনটি সরকারকে ভাবতে হচ্ছে ওই ভোটচুরির সঙ্গে সরকারি কর্মকর্তাদের যুক্ত থাকার জের।

অ্যাসোসিয়েশনের কর্মকর্তারা বলেছেন, গেল সরকারের অন্যায্য হুকুম পালনকারী সচিব-আইজিপি থেকে শুরু করে প্রশাসন ও পুলিশ ক্যাডারের সর্বোচ্চ কর্মকর্তারা এখন কারান্তরীণ। অনেক কর্মকর্তা বিদেশে পালিয়ে গেছেন। কেউবা সীমান্তে অবৈধভাবে পাড়ি দিতে গিয়ে এখন জেলের ঘানি টানছেন। সরকারের কর্মকর্তাদের এভাবে পালিয়ে যাওয়া কিংবা জেলে থাকার ঘটনা নজিরবিহীন।

সাজানো নির্বাচনে ক্রীড়নকের ভূমিকা পালনকারী বিভাগীয় কমিশনার, জেলা প্রশাসক, পুলিশ সুপার, থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাদের (ওসি) মধ্যে চাকরির বয়স ২৫ বছর পার হলে বাধ্যতামূলক অবসরে পাঠানো হয়েছে। বাকিদের কিছু অংশ ওএসডি, কিছু পলাতক আর কিছু কর্মকর্তা শাস্তির আতঙ্কে আছেন। ২০১৪, ২০১৮ ও ২০২৪ সালের বিতর্কিত নির্বাচনের দায়িত্বে থাকা ম্যাজিস্ট্রেটদের অবস্থানও খোঁজা হচ্ছে। সম্প্রতি নির্বাচন কমিশনের (ইসি) কাছে তাদের তথ্য চেয়ে চিঠি দিয়েছে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)।

সেখানে বলা হয়- শেরেবাংলা নগর থানায় দায়ের করা মামলার সুষ্ঠু তদন্ত ও ন্যায় বিচারের স্বার্থে বিগত তিন নির্বাচনে ম্যাজিস্ট্রেটের দায়িত্ব পালনকারীদের তথ্য সরবরাহ করতে বলা হয়েছে। এর বাইরে অবৈধ ভোটের সঙ্গে যুক্ত পুরস্কৃত কর্মকর্তাদের পুলিশ পদক বাতিলের খবর বেরিয়েছে। এমন প্রেক্ষাপটে জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে নিরপেক্ষভাবে মাঠ প্রশাসন সাজানোর জন্য জেলা প্রশাসক (ডিসি) ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) পদায়নও লটারির মাধ্যমে করার দিকে এগোচ্ছে সরকার।

এরই মধ্যে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী (অব.) সাংবাদিকদের জানিয়েছেন, নির্বাচনের আগে পুলিশ সুপার ও থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) পদায়ন করা হবে লটারির মাধ্যমে। এরও আগে গত ৯ জুলাই আইনশৃঙ্খলাবিষয়ক উচ্চপর্যায়ের প্রতিনিধিদের সঙ্গে এক বৈঠকে প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস ডিসি, এসপি, ইউএনও, ওসি পদে রদবদল লটারির মাধ্যমে করা যায় কি না, তা ভেবে দেখার নির্দেশনা দেন। সর্বশেষ গত ১৭ আগস্ট স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেছেন, কর্মকর্তাদের কোনো দলীয় লেজুড়বৃত্তি করা যাবে না। দেশের মান, সম্মান ক্ষুণœ হয়- এমন কাজ থেকে বিরত থাকতে হবে।

জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় সূত্র জানিয়েছে, জেলা প্রশাসক নিয়োগ বা পদায়নে সাধারণত কিছু নীতিমালা অনুসরণ করা হয়। প্রথমে জেলা প্রশাসক হওয়ার উপযুক্ততা যাচাইয়ে উপসচিব পর্যায়ের কর্মকর্তাদের মৌখিক পরীক্ষার মাধ্যমে একটি ফিটলিস্ট তৈরি করে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়। ওই ফিটলিস্ট থেকে কর্মজীবনের দক্ষতা, জ্যেষ্ঠতা ও অন্যান্য যোগ্যতার ভিত্তিতে ডিসি নিয়োগ করা হয়ে থাকে। একজন ডিসি একটি জেলার প্রধান প্রশাসনিক কর্মকর্তা। জেলার তিন শতাধিক কমিটির প্রধানের দায়িত্ব পালন করেন তিনি। জাতীয় নির্বাচনে ডিসিরা রিটার্নিং অফিসারের দায়িত্ব পালন করেন। এ দায়িত্ব পাওয়ার পর তারা পোলিং অফিসার, প্রিসাইডিং অফিসার ও সহকারী প্রিসাইডিং অফিসার নিয়োগ দেন। শেষ পর্যন্ত ভোটের মাঠপ্রশাসন সাজান তারা। জেলা পুলিশ সুপাররা আইনশৃঙ্খলার সার্বিক বিষয় দেখভাল করেন।

এবার চাকরিচ্যুতি, জেল ওসডির মতো ঘটনার পুনরাবৃত্তি এড়াতে আসন্ন নির্বাচনের আগে ডিসির দায়িত্ব পালনে অনাগ্রহী কিছু উপসচিব। নির্বাচন নিয়ে প্রশ্ন উঠলে ডিসি হিসেবে দায় থাকে। আবার ভিন্ন চিত্রও আছে। পতিত শেখ হাসিনা সরকারের স্টাইলে অনেক কর্মকর্তা দলীয় পরিচয় দিতে স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করেন। ডিসি হতে করেছেন দৌড়ঝাঁপ। অবশ্য যোগ্য ও মেধাবী কর্মকর্তাদের বড় অংশই মনে করছে, কোনো রাজনৈতিক দলের স্বার্থ হাসিল করা কর্মকর্তাদের কাজ হতে পারে না। সময় এসেছে ওই বদনাম ঘোচানোর।

২০০৯ সালে ক্ষমতায় ফিরে তত্ত্বাবধায়ক ব্যবস্থা বাতিল করে আওয়ামী লীগ সরকার। এরপর থেকে ক্ষমতাসীন সরকারের অধীনে রাষ্ট্রীয় ব্যবস্থাপনায় নির্বাচন কারচুপি হয়েছে। তখন দলীয় সরকারের অধীনে ভোটের বিরোধিতা করে রাজনৈতিক দলগুলো। স্বৈরাচার শেখ হাসিনার সরকার তা কানে নেয়নি। গেল তিনটি নির্বাচনের মধ্য দিয়ে নিজেরাই ক্ষমতায় থাকে। নিজেদের অধীনস্থ মাঠপ্রশাসনের কর্মকর্তাদের মাধ্যমে ভোটের আয়োজন করে তৎকালীন সরকার। তত্ত্বাবধায়ক ব্যবস্থা নিয়ে বিতর্কিত রায় প্রদানকারী প্রধান বিচারপতি খায়রুল হক এখন কারাগারে। একই অবস্থা প্রধান নির্বাচন কমিশনার কেএম নুরুল হুদা ও কাজী হাবিবুল আউয়ালের।

জনপ্রশাসন বিশেষজ্ঞ আইয়ুবুর রহমান খান আমাদের সময়কে বলেন, প্রশাসন, পুলিশ বা যে ক্যাডারই হোক, সরকারের কোনো কর্মজীবীর রাজনীতি করার সুযোগ নেই। চাকরিবিধিতে তা স্পষ্টভাবে উল্লেখ আছে। কোনো কর্মকর্তা তার বিষয়ে রাজনৈতিক দলের সরণাপন্ন হতে পারবে না। কিন্তু বাস্তবতা ভিন্ন। অনেকেই লাঠিয়াল হয়ে ওঠেন। গুটি কয়েক কর্মকর্তার কারণে সবাই বিতর্কিত। দেখাদেখি অনেকেই রাজনৈতিক প্রভাবের আশায় ধরনা দিচ্ছেন। পদোন্নতি বা বদলিতে রাজনীতিবিদদের সুপারিশের সুযোগ নেই। অথচ তাই হয়ে আসছিল। এমনও আছে- বঞ্চিত হয়ে কেউ কেউ দলীয় প্রভাব তালাশ করেন। এটি বন্ধ করা উচিত।

সংশ্লিষ্টরা জানান, রাজনৈতিক নিরপেক্ষতা বজায় রেখে দলমত নির্বিশেষে রাষ্ট্রের প্রত্যেক নাগরিককে বৈষম্যহীনভাবে সেবা প্রদান করা প্রজাতন্ত্রের কর্মচারীর সাংবিধানিক দায়িত্ব। কিন্তু তারা নিজেদের সরকারের কর্মচারী না ভেবে রাষ্ট্রের কর্মচারী ভাবেন কি না- এ নিয়ে জনমনে সংশয় রয়েছে। বিশেষ করে পতিত শেখ হাসিনা সরকারের আমলে প্রশাসন ও পুলিশের কর্মকর্তাদের দলীয় কর্মীর মতো আচরণ করতে দেখা গেছে। এর ফলে তিনটি বিতর্কিত নির্বাচন করার সুযোগ পায় আওয়ামী লীগ সরকার। দলীয় স্বার্থে কাজ করা কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ শুরু হয়েছে এরই মধ্যে।

স্বচ্ছ ও নিরপেক্ষ নির্বাচন নিশ্চিতকরণে সরকারি কর্মচারীদের ভূমিকা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। কারণ, তারা নির্বাচন পরিচালনায় নির্বাচন কমিশনকে সহায়তা করেন। এসব সহায়তার মধ্যে গুরুত্বপূর্ণ হচ্ছে- ভোটকেন্দ্র স্থাপন, ভয়ভীতিহীন পরিবেশে নির্বিঘেœ ভোটাধিকার প্রয়োগের পরিবেশ সৃষ্টি করা, প্রিসাইডিং অফিসার ও পোলিং অফিসারের দায়িত্ব পালন এবং আইনশৃঙ্খলা বজায় রাখা। গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রব্যবস্থায় সরকারি কর্মচারীদের ভূমিকা হতে হয় রাজনৈতিকভাবে সম্পূর্ণ নিরপেক্ষ। কিন্তু দেখা গেছে, তাদের কর্মকা- ও বক্তব্য দুটোই দলীয় কর্মীর মতো। শেখ হাসিনাকে ফ্যাসিস্ট হতে ভূমিকা রাখেন অনেক কর্মকর্তা। তাদের দাপটে ক্ষেত্রবিশেষে দলীয় নেতাকর্মীরাও কোণঠাসা ছিলেন। ফলে জনগণের ভোটের চেয়ে কর্মকর্তাদের তুষ্ট রাখা গুরুত্ব পেয়েছে তৎকালীন সরকারপ্রধানের কাছে। এ জন্য কর্মকর্তারা যখন-তখন স্বপ্রণোদিত হয়ে টুঙ্গিপাড়া সফরকে রাষ্ট্রীয় কাজ হিসেবে তুলে ধরতেন। পদোন্নতি ও বদলি বিশেষ করে ডিসি-এসপির ফিটলিস্টে দলীয় পরিচয় যুক্ত করতেন বাড়তি যোগ্যতা দেখাতে।

দৃষ্টান্তস্বরূপ বলা যায়, ২০১৮ সালের নির্বাচনে ১০৩টি আসনের ২১৩ ভোটকেন্দ্রে শতভাগ ভোট পড়েছিল। সেগুলোর রিটার্নিং অফিসার, সহকারী রিটার্নিং অফিসার, এসপি, ওসিসহ সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের ভূমিকা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। কারণ, ওই সময় অন্তত ৫৮৬ কেন্দ্রে আওয়ামী লীগের নৌকা শতভাগ ভোট পায়। ধানের শীষ ১ হাজার ২৮৫ কেন্দ্রে একটি ভোটও পায়নি। গণ-অভ্যুত্থানে পটপরিবর্তনের পর নির্বাচনব্যবস্থা সংস্কার কমিশনে পুলিশ ও ডিসিরা একে অপরের ওপর দায় দিয়েছেন। বলে রাখা ভালো, ওই সময়ের নির্বাচন নিয়ে ৮০টিরও বেশি মামলা রয়েছে। নির্বাচনে অনিয়মের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা না নিয়ে পুরস্কারের দৃষ্টান্ত ছিল নজিরবিহীন।

নির্বাচনের আগে-পরে প্রতিপক্ষ রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মীকে দমনপীড়নের স্বীকৃতি ছিল পুলিশ পদক। তবে এসব বিপিএম-পিপিএম প্রত্যাহারের উদ্যোগ নিয়েছে বর্তমান সরকার। তখন রিটার্নিং অফিসারে দায়িত্ব পালন করা কর্মকর্তারাও পেয়েছিলেন প্রাইজ পোস্টিং। তাদের অনেকে এখন ওএসডি অথবা ‘জনস্বার্থে’ বাধ্যতামূলক অবসরের খবর পাচ্ছেন। এসব কারণে অস্বস্তিতে আছেন সরকারি কর্মকর্তারা। যদিও সরকারের একাধিক উপদেষ্টা স্পষ্টভাবে জানিয়েছেন, এবারের নির্বাচনে কর্মকর্তারা নির্ভয়ে এবং নির্ভারভাবে কাজ করতে পারবেন। কারণ, নির্বাচনের ফল কোনো দলের পক্ষ থেকে তাদের প্রভাবিত করার সুযোগ নেই। তবে কোন কর্মকর্তা নির্বাচনকে কলঙ্কিত করেছেন, তা-ও রয়েছে বিবেচনায়। আচরণবিধি অনুযায়ী, সরকারি কর্মচারীরা যেসব সংগঠনের সদস্য হতে পারেন না, সেসব সংগঠনের সদস্য হয়ে রাজনৈতিক কর্মকা-ে সরাসরি সম্পৃক্ত হচ্ছেন, নিজ স্বার্থে অথবা গোষ্ঠী স্বার্থে।

নিউজটি শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এ জাতীয় আরো খবর..
© All rights reserved © 2021 SomoyerKonthodhoni
Theme Dwonload From ThemesBazar.Com