বান্দরবানে র্যাবের অভিযানে গ্রেফতার হওয়া জামাতুল আনসার ফিল হিন্দাল শারক্বীয়ার ১৭ সদস্য ও কেএনএফ-এর তিন সদস্যকে বান্দরবান র্যাব কার্যালয়ে নিয়ে আসা হয়েছে। এদের কাছ থেকে উদ্ধার করা হয়েছে দুটি একে-৪৭ রাইফেলসহ বিপুল পরিমাণ অস্ত্র-সরঞ্জাম ও নগদ সাত লাখ টাকা।
মঙ্গলবার বান্দরবানের থানচি লিক্রে সড়কের ২৭ কিলোমিটার এলাকায় রংমল পাড়ার কাছে র্যাবের সাথে সশস্ত্র সংগঠন কেএনএফ-এর সদস্যদের মধ্যে গুলি বিনিময়ের পর অভিযানে ২০ জনকে গ্রেফতার করা হয়। রাতে অভিযান সমাপ্তির পর এদের আজ বুধবার সকালে বান্দরবানের র্যাব ১৫ কার্যালয়ে নিয়ে আসা হয়েছে।
গ্রেফতাররা হলেন- কুমিল্লার মাহাবুর রহমানের ছেলে সামির রহমান সাদ (১৯), বরগুনার মালেক মোল্লার ছেলে মো: সোহেল মোল্লা সাইফুল্লাহ (২২), পটুয়াখালীর ফোরকান ফকিরের ছেলে আল-আমিন ফকির ওরফে মোস্তাক (১৯), কুমিল্লার আব্দুল লতিফের ছেলে মো: জহিরুল ইসলাম ওরফে ওমর ফারুক (২৭), পটুয়াখালীর আনিস মির্জার ছেলে মিরাজ শিকদার আশরাফ ওরফে হোসেন দোলন (২৬), টাঙ্গাইলের দুলাল রহমানের ছেলে ইলিয়াস রহমান তানজিল (৩২), ঝালকাঠির আবু ইউসুফের ছেলে হাবিবুর রহমান মোড়া (২৩), কুমিল্লার মালেক ফরাজির ছেলে মো: সাখাওয়াত হোসেন মাবরুর (২১), বরিশালের নাসির হাওলাদারের ছেলে আব্দুস সালাম (৩১), কুমিল্লার মাওলানা হুসাইন আহমেদের ছেলে জোবায়ের আহমেদ আইমান (২৯), পটুয়াখালীর মাহবুব মাতব্বরের ছেলে মোহাম্মদ শামীম হোসেন আবু হুরাইরা (২৬), হবিগঞ্জের কুতুবুর রহমানের ছেলে রহমান সোহান মিন্টু (২০), বরিশালের গোলাম মোস্তফার ছেলে মাহমুদ ডাকুয়া (২০), মাগুরার শামসুর রহমানের ছেলে আবু হুরাইরা মিরাজ (২২) এবং পাহাড়ের বিচ্ছিন্নতাবাদী সংগঠনকে এনএফ-এর সদস্য লাল মোল সিয়াম বম, ফ্লাগ ক্রস ও মালসম পাংকুয়া (৫২)।
পরে সাংবাদিকদের ব্রিফ করেন র্যাবের গণমাধ্যম শাখার পরিচালক খন্দকার আল মুঈন।
তিনি জানান মঙ্গলবারের অভিযানটি ছিল সন্ত্রাসবিরোধী সবচেয়ে বড় অভিযান। গত অক্টোবর থেকে চলা সন্ত্রাসবিরোধী টানা অভিযানের কারণে উগ্রবাদী ও সশস্ত্র সংগঠনের সদস্যরা ছত্রভঙ্গ হয়ে পড়েছে। তাদের সাথে যোগাযোগও বন্ধ হয়ে গেছে। সম্প্রতি উগ্রবাদীদের কাছ থেকে উদ্ধার হওয়া প্রশিক্ষণের যে ভিডিও প্রকাশ হয়েছে, তাতে আটক ১৭ উগ্রবাদদের মধ্যে পাঁচজন রয়েছেন। এছাড়া দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে ‘হিজরতের’ জন্য নিখোঁজ হওয়া ৫৫ উগ্রবাদীর মধ্যেও গ্রেফতার ১৭ জন রয়েছেন। এরা বিভিন্ন সময়ে ‘হিজরতের’ কথা বলে নতুন গজিয়ে ওঠা উগ্রবাদী সংগঠন জামাতুল আনসারে যোগ দেন। পরে তারা পাহাড়ের সশস্ত্র সংগঠন কেএনএফ-এর ঘাটিতে প্রশিক্ষণ নেন। এ পর্যন্ত বান্দরবানের পাহাড়ি এলাকা থেকে উগ্রবাদী সংগঠনের ৩১ সদস্য ও কেএনএফ-এর ১৭ জনকে আইনের আওতায় আনা হয়েছে বলে র্যাব কর্মকর্তা জানিয়েছেন।
র্যাব জানায়, যারাই অপরাধের সাথে জড়িত থাকবে তাদের আইনের আওতায় আনা হবে এবং পাহাড়ে উগ্রবাদ ও সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড নির্মূল না হওয়া পর্যন্ত অভিযান অব্যাহত থাকবে বলেও ওই কর্মকর্তা জানান।
সংবাদ সম্মেলনে চট্টগ্রাম র্যাব-৭-এর অধিনায়ক লে. কর্নেল মাহাবুব ও র্যাবের গোয়েন্দা শাখার প্রধান লে. কর্নেল মশিউর রহমানসহ অন্য কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।