সোমবার, ০২:০১ অপরাহ্ন, ১৮ অগাস্ট ২০২৫, ৩রা ভাদ্র, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ , ই-পেপার
নোটিশ :
মানব সেবায় নিয়োজিত অলাভজনক সেবা প্রদানকারী সংবাদ তথ্য প্রতিষ্ঠান।
শিরোনাম :
নতুন বিতর্কের মুখে জুলাই শহীদদের ফ্ল্যাট প্রকল্প জুলাই হত্যাযজ্ঞ : শেখ হাসিনা-কামালের বিরুদ্ধে পঞ্চম দিনের সাক্ষ্যগ্রহণ আজ ডিবির হারুনসহ পুলিশের ১৮ কর্মকর্তা বরখাস্ত মহীউদ্দীন আলমগীরের ৪শ কোটি টাকার সন্দেহজনক লেনদেন ট্রাম্প-জেলেনস্কি বৈঠক : আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে ক্রিমিয়া ও ন্যাটো ‘দেখামাত্র গুলির নির্দেশ’ বার্তা ফাঁসকারী সেই পুলিশ সদস্য গ্রেপ্তার দাঁড়িয়ে থাকা পিকআপে কাভার্ডভ্যানের ধাক্কা, নিহত ৫ ঝিনাইদহের সাবেক এমপি অপু ধানমন্ডি থেকে গ্রেপ্তার স্বৈরাচার হাসিনা খালেদা জিয়াকে মে’রে ফেলার ষড়যন্ত্র করেছিলো : সেলিমা রহমান গৌরনদীতে খালেদা জিয়ার জন্মদিনের আলোচনা সভা ও দোয়া মাহফিল

নতুন বিতর্কের মুখে জুলাই শহীদদের ফ্ল্যাট প্রকল্প

সময়ের কণ্ঠধ্বনি ডেস্ক:
  • আপডেট টাইম : সোমবার, ১৮ আগস্ট, ২০২৫
  • ০ বার পঠিত

জাতীয় গৃহায়ন কর্তৃপক্ষের প্রস্তাবিত ‘৩৬ জুলাই আবাসিক ফ্ল্যাট নির্মাণ’ প্রকল্পটি বাস্তবায়নে একের পর এক জটিলতা তৈরি হচ্ছে। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে শহীদ পরিবারের জন্য বিনামূল্যে স্থায়ী বাসস্থান দেওয়ার লক্ষ্যে নেওয়া হলেও প্রকল্প প্রস্তাবনায় নানা ত্রুটি-বিচ্যুতি, বাড়তি ব্যয় এবং অনিয়ম ও অব্যবস্থাপনার অভিযোগ উঠেছে, যা নিয়ে প্রকল্প অনুমোদনের আগেই একের পর এক বিতর্কে জড়িয়ে পড়েছে প্রস্তাবটি। এসব কারণে প্রকল্পটি একনেকে উঠলেও অনুমোদন মেলেনি, বরং পুনর্মূল্যায়নের জন্য তা স্থগিত করা হয়। এর আগে পরিকল্পনা কমিশনের পিইসি সভায়ও প্রকল্পটির বাস্তবায়নে নানা জটিলতার কথা তুলে ধরা হয়।

পরিকল্পনা কমিশনের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, প্রকল্প প্রস্তাবে বিভিন্ন খাতে বাড়তি ব্যয় প্রস্তাব, সমন্বয়হীনতাসহ নানা অসংগতি ছিল। যথাযথভাবে এটির খরচের মূল্যায়নের পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। অনুমোদন না দেওয়ার বিষয়ে পরিকল্পনা উপদেষ্টা ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ বলেছিলেন, কাগজপত্রগুলো দেখে মনে হয়েছে টেন্ডারে যাওয়ার আগে প্রকল্প ব্যয় যথাযথভাবে মূল্যায়ন করা হয়নি। একাধিক মন্ত্রণালয়কে সমন্বয় করে খরচ পুনর্মূল্যায়ন করতে হবে।

সয়েল টেস্ট ছাড়াই বহুতল ভবন নির্মাণের প্রস্তাব:

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, প্রকল্প প্রণয়নের ক্ষেত্রে সয়েল টেস্টের বিধান থাকলেও আলোচ্য প্রকল্পের ক্ষেত্রে সেটা করা হয়নি। সয়েল টেস্ট ছাড়াই প্রকল্প প্রস্তাব করা হয়েছে। অথচ এ ধরনের প্রকল্পে আগে মাটি পরীক্ষা, ভূমিকম্প সহনশীলতার পরীক্ষা ও পরিবেশগত প্রভাব মূল্যায়ন বাধ্যতামূলক। কিন্তু সেটা মানা হয়নি। সয়েল টেস্ট ছাড়া ব্যয় প্রাক্কলন করা অসম্ভব হলেও টেস্ট না করেই ইচ্ছামতো ব্যয় নির্ধারণ করে নকশা ও প্রকল্প প্রস্তাব করা হয়েছে।

পরিকল্পনা কমিশনের সাবেক সচিব মামুন আল রশিদ কালবেলাকে বলেন, ‘সয়েল টেস্ট ছাড়া তো নির্মাণকাজের ব্যয় নির্ধারণ করা যায় না। তারা কীভাবে সেটা করল? এটা অনিয়ম ও অবহেলার উদাহরণ। নিরাপত্তার দিক থেকেও এটি মারাত্মক ঝুঁকিপূর্ণ।’

এদিকে, প্রকল্প অনুমোদনে জটিলতায় পড়ে সম্প্রতি সয়েল টেস্ট করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে গৃহায়ন কর্তৃপক্ষ। গত বৃহস্পতিবার গৃহায়ন কর্তৃপক্ষের একটি প্রতিনিধিদল না জানিয়ে সয়েল টেস্ট করতে গেলে স্থানীয় বাসিন্দাদের বাধার মুখে পড়ে। পরে পরীক্ষা না করেই তারা ফিরে যান।

মিরপুর গৃহসংস্থান বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী কাওসার মোর্শেদ জানান, প্রকল্প প্রস্তাবের আগে সয়েল টেস্ট করা হয়নি। প্রথমে ধারণা করে ব্যয় নির্ধারণ করা হয়েছিল। এখন যেহেতু প্রশ্ন উঠেছে, তাই সয়েল টেস্ট করে সেই রিপোর্টের ভিত্তিতে ব্যয় নির্ধারণের সিদ্ধান্ত হয়েছে।

প্রকল্প প্রস্তাবনায় তথ্য গোপন:

সবচেয়ে বড় জটিলতা তৈরি হয়েছে প্রকল্প এলাকায় বিদ্যমান সরকারি পরিবারগুলোকে ঘিরে। প্রকল্পের জন্য নির্ধারিত জায়গায় ১৮টি ভবন রয়েছে, যেখানে প্রায় ৫০ বছর ধরে ৫৭৬টি সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীর পরিবার বসবাস করছে। সেই জায়গাতেই প্রকল্পের আওতায় জুলাই শহীদদের জন্য ৮০৪টি ফ্ল্যাট নির্মাণের পরিকল্পনা করা হয়েছে। এজন্য সেখানকার ১৮টি ভবন ভেঙে ফেলা হবে। অথচ ডিপিপিতে প্রকল্পের জন্য নির্ধারিত জায়গায় বসবাসরতদের বিষয় কোনো পরিকল্পনা নেই।

ডিপিপি পর্যালোচনা এবং সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, মিরপুর হাউজিং এস্টেটের ১৪ নম্বর সেকশনে মিরপুর পুলিশ লাইন্স সংলগ্ন নিজস্ব জমিতে ‘৩৬ জুলাই’ আবাসিক ফ্ল্যাট নির্মাণ শীর্ষক প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করবে জাতীয় গৃহায়ন কর্তৃপক্ষ। প্রকল্পের আওতায় ছয়টি ১৪ তলা এবং ১২টি ১০ তলাবিশিষ্ট আবাসিক ভবন নির্মাণ করা হবে।

অথচ ওই ১৮টি ভবনে যারা বসবাস করেন তাদের বিষয়ে প্রকল্প প্রস্তাবনায় কোনো পরিকল্পনার কথা জানানো হয়নি। এমনকি ডিপিপিতে বিষয়টি উল্লেখও করা হয়নি, রাখা হয়েছিল গোপন। বসবাসরতদের পক্ষ থেকে বিষয়টি গৃহায়ন কর্তৃপক্ষকে জানালেও প্রকল্প প্রস্তাবনায় তা উল্লেখ করা হয়নি। এ নিয়ে শঙ্কায় পড়েছেন ৫০ বছর ধরে সেখানে বসবাসরত ৫৭৬ সরকারি পরিবারের সদস্যরা।

উচ্ছেদের উদ্বেগ থেকে স্টাফ কোয়ার্টার কর্মচারী কল্যাণ সমিতির পক্ষ থেকে গত ৩০ জুন জাতীয় গৃহায়ন কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান বরাবর আবেদন করা হয়। সেই আবেদনে বলা হয়, ২০০০ সাল থেকে একাধিক বোর্ড সভা, মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনা ও আদালতের রায়ে পরিষ্কার বলা হয়েছে—এ ৫৭৬ জন বৈধ বরাদ্দ প্রাপকের ফ্ল্যাট ‘হায়ার পারচেজ’ ভিত্তিতে বিক্রিতে কোনো নীতিগত বাধা নেই। তারপরও অ্যালোটিদের (বরাদ্দ গ্রহীতা) কাছে বিক্রি বা স্থায়ী বন্দোবস্ত দেওয়ার বিষয়টি উপেক্ষিত রয়েছে। বিষয়টি সুরাহা না হওয়ায় সরকার একদিকে যেমন বিপুল অঙ্কের রাজস্ব থেকে বঞ্চিত হচ্ছে, অন্যদিকে ৫৭৬ জন গ্রহীতা চরম উৎকণ্ঠা ও অনিশ্চয়তার মধ্যে রয়েছেন। বিষয়টি সমাধান না করে অন্য কোনো প্রকল্প নেওয়া ঠিক হবে না।

গত ৩ আগস্ট পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা বরাবর পাঠানো আরেকটি আবেদনে বলা হয়, বিষয়টি গৃহায়ন কর্তৃপক্ষকে জানানো হলেও প্রকল্প প্রস্তাবনায় তা উল্লেখ করা হয়নি। এতে মনে হচ্ছে, ইচ্ছাকৃতভাবে তথ্য গোপন করা হয়েছে, যা প্রকল্প অনুমোদন প্রক্রিয়ার স্বচ্ছতা ও জবাবদিহি প্রশ্নবিদ্ধ করেছে। এতে আরও বলা হয়, বোর্ড সভার সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন না করে বরাদ্দপ্রাপ্ত সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বাসস্থানকে শহীদ পরিবারের প্রকল্প এলাকায় অন্তর্ভুক্ত করা বৈষম্যমূলক।

পরিকল্পনা কমিশন সূত্রে জানা গেছে, ডিপিপিতে প্রকল্প এলাকার বিষয়ে বলা হয়েছে গৃহায়নের নিজস্ব জায়গায় জুলাই শহীদদের জন্য আবাসন প্রকল্প বাস্তবায়ন করা হবে। তবে প্রকল্প এলাকার বাস্তব চিত্র তুলে ধরা হয়নি। যে কোনো প্রকল্প নেওয়ার ক্ষেত্রে সে জায়গায় কী কী আছে এবং সেগুলোর বিষয়ে কী পরিকল্পনা করা হবে তা ডিপিপিতে স্পষ্টভাবে উল্লেখ করতে হয়। একই সঙ্গে ৫৭৬ পরিবারকে কোথায় এবং কীভাবে পুনর্বাসন করা হবে, সে বিষয়ে কোনো পরিকল্পনা নেই।

বাসিন্দাদের অভিযোগ, গৃহায়ন কর্তৃপক্ষ দীর্ঘদিন ধরে তাদের স্থায়ী বন্দোবস্তের প্রতিশ্রুতি দিলেও তা বাস্তবায়ন করেনি। বরং নতুন প্রকল্পের নামে তাদের উচ্ছেদের শঙ্কা তৈরি করেছে। তারা মনে করেন, গৃহায়ন কর্তৃপক্ষ ইচ্ছাকৃতভাবে তথ্য গোপন করেছে। কারণ একনেক সভার আগে তাদের বিষয় জানানো হলেও প্রস্তাবনায় সেটি উপেক্ষা করা হয়েছে।

তবে গৃহায়ন কর্তৃপক্ষের দাবি, তারা কিছু গোপন করেনি। ভবিষ্যতে পুনর্বাসনের আলাদা প্রকল্প নেওয়া হবে। তাই জুলাই শহীদদের ফ্ল্যাট প্রকল্পে বর্তমান বাসিন্দাদের বিষয় উল্লেখ করা হয়নি। এ ছাড়া সেখানকার বাসিন্দাদের কাছে ফ্ল্যাটগুলো হস্তান্তর করার বিষয়ে আগে কী সিদ্ধান্ত হয়েছিল, সে বিষয়টি তাদের জানা নেই।

জাতীয় গৃহায়ন কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান ফেরদৌসী বেগম বলেন, ‘আমি নতুন দায়িত্বে এসেছি। আগে কী করা হয়েছে জানি না। গৃহায়নের কাজ হলো মানুষের আবাসন নিশ্চিত করা, কাউকে উচ্ছেদ করা নয়। তাদের জন্য আলাদা পরিকল্পনা করা হচ্ছে।’

পরিকল্পনাবিদরা মনে করছেন, প্রকল্প প্রস্তাবনায় এভাবে অবকাঠামো ও জনবসতির তথ্য গোপন করা অদক্ষতা ও অবহেলার পরিচায়ক। তা ছাড়া সয়েল টেস্ট ছাড়াই বহুতল ফ্ল্যাট নির্মাণ প্রস্তাব শুধু অনিয়ম নয়, বাসিন্দাদের জীবনের জন্যও হুমকি। তাদের মতে, শহীদ পরিবারের জন্য প্রকল্প গ্রহণ মহৎ উদ্যোগ হলেও এর বাস্তবায়নে স্বচ্ছতা, জবাবদিহি ও সমন্বয়ের অভাব পুরো প্রকল্পকেই বিতর্কিত করছে।

পরিকল্পনা কমিশনের সাবেক সচিব মামুন আল রশিদ কালবেলাকে বলেন, ‘এটা স্পষ্টতই প্রস্তাবকারী সংস্থার অবহেলা। ডিপিপিতে বিদ্যমান অবকাঠামো ও জনবসতির তথ্য গোপন করে অনুমোদন চাওয়া অগ্রহণযোগ্য। এটা পরিকল্পনা প্রণয়ন নীতির পরিপন্থি। এ ছাড়া সেখানকার ফ্ল্যাটগুলো যদি তাদের কাছে হস্তান্তরের বিষয়টি আগেই সিদ্ধান্ত হয়ে থাকে, তাহলে সেখানে নতুন করে প্রকল্প নেওয়াও তো প্রশ্নবিদ্ধ।’

৫০ বছরের বসবাসকারীদের উপেক্ষা:

স্বাধীনতার পর সরকারি কর্মচারী ও পেশাজীবীদের জন্য মিরপুর-১৪-তে জাতীয় গৃহসংস্থান অধিদপ্তর ১৮টি ভবনে ৫৭৬টি ফ্ল্যাট বরাদ্দ দেয়। ভাড়া-বিক্রয় চুক্তিতে দেওয়া এসব ফ্ল্যাট কিস্তি পরিশোধ শেষে মালিকানা দেওয়ার কথা থাকলেও গৃহায়ন কর্তৃপক্ষের দীর্ঘসূত্রতায় তা হয়নি। বরাদ্দপ্রাপ্তদের অনেকে অবসর নিয়েছেন, কেউ মারা গেছেন, অথচ একই এলাকায় প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় ও পুলিশের কাছে হাজারো ফ্ল্যাট হস্তান্তর করা হয়েছে। ২০০০ থেকে ২০১২ সাল পর্যন্ত একাধিক সভায় বরাদ্দ প্রাপকদের কাছে ফ্ল্যাট বিক্রির সিদ্ধান্ত হলেও কার্যকর হয়নি। নতুন প্রকল্প নেওয়ায় ক্ষুব্ধ বাসিন্দাদের দাবি—আগে পুরোনো বরাদ্দ নিষ্পত্তি করা হোক।

বাসিন্দারা বলছেন, প্রকল্পটি অনুমোদনের আগে বর্তমান বাসিন্দাদের আবাসনের বিষয়টি নিষ্পত্তি না করে নতুন করে প্রকল্প নিলে সরাসরি বৈষম্যের শিকার হবেন তারা। তাদের দাবি, প্রথমে তাদের মালিকানা বন্দোবস্ত সম্পন্ন করতে হবে এবং যে কোনো নতুন প্রকল্প শুরু করার আগে বিকল্প আবাসন বা পুনর্বাসন নিশ্চিত করতে হবে।

হাউজিং স্টাফ কো-অ্যালোটি সন্তান কল্যাণ সমিতির সদস্য সচিব কাজী রাশেদুল হাসান সোহাগ কালবেলাকে বলেন, ‘সরকারের একাধিক নির্দেশনা ও আদালতের রায় সত্ত্বেও মালিকানা বন্দোবস্ত করা হয়নি। বিষয়টি গৃহায়ন কর্তৃপক্ষকে আগে অবহিত করলেও প্রকল্প প্রস্তাবনায় তা উল্লেখ করা হয়নি। বরং নতুন প্রকল্পের নামে আমাদের উচ্ছেদের চেষ্টা চলছে। বিষয়টি আমরা গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টাকেও জানিয়েছি। তিনি বিষয়টি দেখবেন বলে আশ্বাস দিয়েছেন।

নিউজটি শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এ জাতীয় আরো খবর..
© All rights reserved © 2021 SomoyerKonthodhoni
Theme Dwonload From ThemesBazar.Com