বন্দর নগরী চট্টগ্রামে মেট্রোরেলের নির্মাণ কাজের সম্ভাব্যতা যাচাইয়ের আনুষ্ঠানিকভাবে উদ্বোধন হয়েছে।
মঙ্গলবার দুপুরে চট্টগ্রামের হোটেল রেডিসন ব্লু বে ভিউতে আয়োজিত উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে মেট্রোরেলের সম্ভাব্যতা যাচাইয়ের কাজ উদ্বোধন ঘোষণা করেন সেতু ও সড়ক পরিবহন মন্ত্রী ওবায়দুল কাদের। তিনি ঢাকায় তার নিজ বাসা থেকে ভার্চুয়ালি যুক্ত হন।
সেতুমন্ত্রী বলেন, আন্দোলন-সংগ্রামের সূতিকাগার চট্টগ্রাম। চট্টগ্রামের উন্নয়ন প্রধানমন্ত্রী নিজ হাতে তুলে নিয়েছেন। দেশের সিংহভাগ আমদানি-রফতানি বাণিজ্য চট্টগ্রাম বন্দর দিয়ে হয়ে থাকে। শেখ হাসিনা চট্টগ্রামকে দেশের অর্থনীতির প্রাণকেন্দ্র হিসেবে রূপান্তরে অবিরাম প্রয়াস চালিয়ে যাচ্ছেন। তারই ধারাবাহিকতায় চট্টগ্রাম মহানগর এলাকায় এক হাজার ১৫২ বর্গ কিলোমিটার জুড়ে মেট্রোরেলের প্রাথমিক সম্ভাব্যতা যাচাইয়ের উদ্যোগ নেয়া হয়েছে।
তিনি বলেন, এ প্রকল্পে দক্ষিণ কোরিয়ার সহযোগিতায় মাস্টারপ্ল্যান প্রণয়ন ও প্রাথমিক সম্ভাব্যতা যাচাই করা হবে। আমি এই কাজের শুভ উদ্বোধন ঘোষণা করছি। আমি শিগগিরই চট্টগ্রাম যাব। চট্টগ্রামের উন্নয়নমূলক কর্মকাণ্ড বিশেষ করে ট্রান্সপোর্ট সেক্টরের কাজগুলো দেখব। ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে যানবাহনের চাপ বেশি। এটিকে ছয়লেন রূপান্তরের কাজ শিগগিরই শুরু করব। প্রধানমন্ত্রীর এ বিষয়ে নির্দেশনা রয়েছে।
তিনি বলেন, চট্টগ্রাম শহরে যানজট নিরসনে বন্দর থেকে ফৌজদারহাট পর্যন্ত উড়ালসড়কসহ পোর্ট এক্সেস সড়ক ছয় লেনে উন্নীত করার কাজ চলছে। মিরসরাই থেকে কক্সবাজার পর্যন্ত মেরিনড্রাইভ রোড নির্মাণের কাজ যাচাই-বাছাই করা হচ্ছে। জাইকার সহযোগিতায় চট্টগ্রাম-কক্সবাজার চারলেনে উন্নীত করার কাজ চলছে। কর্ণফুলীর তলদেশে নির্মাণাধীন টানেলের কাজ শেষ পর্যায়ে। এখন টানেলের নিরাপত্তায় যথাযথ ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে।
মন্ত্রী আরো বলেন, আজকে চট্টগ্রামের জন্য ঐতিহাসিক দিন। স্বপ্নের মেট্রোরেলের সম্ভাব্যতা যাচাইয়ের কাজের শুভ উদ্বোধন করা হচ্ছে। তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ আমাকে এ বিষয়ে অনেক অনুরোধ করেছেন। বাণিজ্যিক রাজধানী বিবেচনায় চট্টগ্রামে উন্নয়ন কর্মকাণ্ডের উদ্যোগ নেয়া হচ্ছে।
দক্ষিণ কোরিয়ার উন্নয়ন সংস্থা কোইকা চট্টগ্রামে মেট্রোরেল প্রকল্পের সম্ভাব্যতা যাচাইয়ের কাজ করছে। এ কাজে মোট ৭০ কোটি টাকার বেশি ব্যয় ধরা হয়েছে। তার মধ্যে কোইকো ৫০ কোটি টাকা ও যোগাযোগ মন্ত্রণালয় ২০ কোটি টাকা দেবে। প্রকল্পের মেয়াদকাল হচ্ছে জানুয়ারি ২০২৩ হতে জুন ২০২৫ পর্যন্ত।
সম্ভাব্যতা যাচাই প্রকল্পের কার্যাবলীর মধ্যে রয়েছে-চট্টগ্রাম শহরের পরিবহন সম্পর্কিত সমন্বিত পরিকল্পনা প্রণয়ন, চলমান ও সমাপ্ত প্রকল্পগুলো পর্যালোচনা এবং আপডেট করা, পরিবহন সংক্রান্ত জরিপ পরিচালনা, ভবিষ্যৎ ট্রাফিক চাহিদা নিরূপণ ও মূল্যায়ন, প্রকল্পসমূহের অর্থনৈতিক মূল্যায়ন, ম্যাস র্যাপিড ট্রানজিট নেটওয়ার্ক প্রস্তাবনার প্রি-ফিজিবিলিটি স্টাডি, গণপরিবহন ব্যবস্থা বিষয়ক পরিকল্পনা, ট্রাফিক সেফটি, পথচারী চলাচল ব্যবস্থার উন্নয়ন প্রভৃতি বিষয়াদি অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে।
উদ্বোধন অনুষ্ঠানে তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ, চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের মেয়র বীর মুক্তিযোদ্ধা এম রেজাউল করিম ও সিডিএ চেয়ারম্যান জহিরুল আলম দোভাষসহ অন্যান্য অতিথিরা উপস্থিত ছিলেন।