শনিবার, ০৯:৪২ অপরাহ্ন, ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ৮ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ , ই-পেপার
নোটিশ :
মানব সেবায় নিয়োজিত অলাভজনক সেবা প্রদানকারী সংবাদ তথ্য প্রতিষ্ঠান।

স্বাস্থ্য: ওষুধ-এর দাম বাড়ায় বিপাকে সাধারণ মানুষ

অনলাইন ডেস্কঃ
  • আপডেট টাইম : শুক্রবার, ২ সেপ্টেম্বর, ২০২২
  • ৯২ বার পঠিত

বাংলাদেশে নিত্য প্রয়োজনীয় পণ্যের মতো সম্প্রতি অতি প্রয়োজনীয় ওষুধের দাম গত দেড় মাসে শতকরা প্রায় ১০০ ভাগ বেড়েছে।

বাংলাদেশে এখনও মানুষের চিকিৎসা বাবদ মোট খরচের বড় অংশই ওষুধের পেছনে ব্যয় হয়, সেখানে ওষুধ ভেদে বড় ব্যবধানে দাম বাড়ায় বিপাকে পড়েছেন সাধারণ মানুষ।

জ্বালানি তেল ও ডলারের মূল্য বৃদ্ধির কারণে ওষুধের বাজারে এর প্রভাব পড়েছে বলে দাবি ওষুধ প্রশাসনের।

তবে বিশেষজ্ঞদের দাবি, এভাবে ওষুধের দাম বাড়লে চিকিৎসা বড় সংকটে পড়বে।

যেখানে নিত্য প্রয়োজনীয় প্রায় সব পণ্যের দাম বাড়ায় সাধারণ মানুষের নাভিশ্বাস ওঠার অবস্থা সেখানে গত জুলাই মাসে বহুল ব্যবহৃত ৫৩টি ওষুধের দাম বাড়ানোর ঘোষণা আসে।

ওষুধের দোকানগুলোয় খোঁজ নিয়ে জানা যায়, প্যারাসিটামল, সেইসাথে রক্তাচাপ, হৃদরোগ, ব্যাথানাশক ও পেটে গ্যাসের সমস্যার নিয়মিত ওষুধগুলোর দাম ৫০% থেকে ১৩৪% বেড়েছে। অর্থাৎ কিছু ওষুধের দাম দ্বিগুণ ছাড়িয়েছে।

ওষুধের দাম বাড়ানোর কারণ হিসেবে ডলারের মূল্যবৃদ্ধি, আন্তর্জাতিক বাজারে কাঁচামালের মূল্যবৃদ্ধিকে দুষছেন ওষুধ শিল্প সমিতির সিনিয়র ভাইস প্রেসিডেন্ট আবদুল মুক্তাদির।

তিনি বলছেন, গত মাসে ওষুধের কাঁচামাল আমদানির জন্য এলসি খোলা হয়েছিল ৮০ টাকা ডলারে। শিপমেন্ট পৌঁছানোর পর ডলারের দাম উঠেছে ১১০ টাকায়। প্রতি ডলারে ৩০ টাকা করে বেশি দিতে হয়েছে।

এছাড়া মোড়ক, পরিবহন, বিপণন ব্যয় বাড়ার প্রভাবও ওষুধের বাজারে দেখা যাচ্ছে। ফার্মাসিউটিক্যালস কোম্পানিগুলো আরও বেশকিছু ওষুধের দাম বাড়ানোর প্রস্তাব ঔষধ প্রশাসন অধিদফতরে জমা দিয়েছে।

সেগুলো যাচাই বাছাই করে, যৌক্তিক মনে হলেই দাম বাড়ানোর বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেয়া হবে বলে জানান অধিদফতরের পরিচালক আইয়ুব হোসেন। স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের স্বাস্থ্য অর্থনীতি ইউনিটের তথ্যমতে, বাংলাদেশে একজন মানুষের মোট চিকিৎসা ব্যয়ের ৬৪% ওষুধ বাবদ খরচ হয়। এবং এই খরচ করতে রোগীর পকেট থেকেই।

অর্থাৎ দেশের হাসপাতালগুলোয় চিকিৎসা নিতে গিয়ে ওষুধেই মানুষের সবচেয়ে বেশি ব্যয় হচ্ছে। বাংলাদেশে যেখানে স্বাস্থ্যবীমা খুবই সীমিত সেখানে ওষুধে এই বাড়তি দাম রোগীর ওপরে চাপ আরও বাড়াবে বলে আশঙ্কা করছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের স্বাস্থ্য অর্থনীতি বিভাগের অধ্যাপক নাহিদ আক্তার জাহান।

এর বাইরে যে ওষুধ রয়েছে, সেগুলোর মূল্য নির্ধারণ করে ওষুধ কোম্পানিগুলো। এক্ষেত্রে সরকারের নজরদারি বাড়ানো প্রয়োজন বলে তিনি মনে করেন। তা নাহলে দেশের চিকিৎসাখাত নিম্নবিত্ত মানুষের আওতার বাইরে চলে যাবে এবং যার সার্বিক প্রভাব জনস্বাস্থ্যের ওপর পড়বে বলে তিনি জানান।

তিনি দুটি উপায়ের কথা বলেছেন, সরকার অতি প্রয়োজনীয় ওষুধের দাম নির্ধারণ করে দিতে পারে, যেন এর বেশি দামে কেউ বিক্রি করতে না পারে।অথবা সরকার নিজেই উৎপাদন করে অল্প দামে ক্রেতাদের কাছে সরবরাহ করতে পারে।

“জীবনরক্ষাকারী ওষুধগুলোর দাম প্রাইভেট মার্কেটের ওপর ছেড়ে দেয়া যাবে না। এই দামের ওপর সরকারের নিয়ন্ত্রণ থাকা উচিত, তিনি বলেন, “বাংলাদেশের মানুষকে চিকিৎসা নিতে পকেট থেকেই বেশি খরচ করতে হয়, স্বাস্থবীমা নেই বললেই চলে তাই এই দামের ওপর সরকারি নজরদারির প্রয়োজন।”

বাংলাদেশে দেড় হাজারের বেশি ধরণের ৩৫ হাজারেরও বেশি ব্র্যান্ডের ওষুধ রয়েছে এরমধ্যে কেবল ১১৭টি ওষুধের মূল্য সরকার নিয়ন্ত্রণ করতে পারে।

সূত্রঃ  বিবিসি

নিউজটি শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এ জাতীয় আরো খবর..
© All rights reserved © 2021 SomoyerKonthodhoni
Theme Dwonload From ThemesBazar.Com