বিএনপি জনগণের কাছে যায় না, যায় বিদেশিদের কাছে আর বিদেশি দূতাবাসের কাছে। বিএনপি নতজানু, ভঙ্গুর ও পরনির্ভর একটি রাজনৈতিক দল।’ আজ বুধবার (২ ফেব্রুয়ারি) আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রী ওবায়দুল কাদের সচিবালয়ে নিজ কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে এসব মন্তব্য করেন।
ওবায়দুল কাদের বিএনপি নেতাদের দেশের জনগণের কাছে যাওয়ার পরামর্শ দিয়ে বলেন, ‘ক্ষমতায় বিদেশিরা বসাবে না, ক্ষমতায় বসাবে এদেশের জনগণ।’
তিনি আরও বলেন, ‘বিএনপি দেশের বিরুদ্ধে লবিস্ট নিয়োগ দিয়ে প্রথম দিকে অস্বীকার করলেও এখন স্বীকার করছে, এখন বলছে প্রবাসী একজন বাংলাদেশি এ কাজ করছেন।’
আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বিএনপি নেতাদের কাছে প্রশ্ন রেখে বলেন, ‘এই প্রবাসী বাংলাদেশি কে? তার পরিচয় কেন প্রকাশ করেননি?’
বিএনপি নেতারা বলেছেন এ ধরনের কার্যক্রমে তাদের নৈতিক সমর্থন আছে এবং তারা এতে এ সংহতি প্রকাশ করেন, ওবায়দুল কাদের মনে করেন এ থেকেই সবকিছু স্পষ্ট হয়। জনগণ এসব কৌশলী জবাব কথামালার চাতুরিতে বিভ্রান্ত হয় না উল্লেখ করে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘জনগণ জানে বিএনপির আসল পরিচয়।’
বিএনপি মহাসচিবের ডেভেলপমেন্ট পার্টনারদের কাছে চিঠি লেখা প্রসঙ্গে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘তাদের ভাষায় নাকি মানবাধিকার আর গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের জন্য চিঠি লিখেছেন। অন্তত চিঠি লেখার কথাতো স্বীকার করেছেন!’
ওবায়দুল কাদের আবারও প্রশ্ন রেখে বলেন, তারা কথায় কথায় সার্বভৌমত্বের কথা বলেন, গণতন্ত্রের কথা বলেন, তবে কি বিদেশিদের কাছে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার আহ্বান জানানো স্বাধীন দেশের রাজনৈতিক দলের কাজ হতে পারে? ‘যারা জীবন্ত মানুষকে পেট্রলবোমায় পুড়িয়ে মারে, সংখ্যালঘুদের ওপর নির্যাতনের স্টিমরোলার চালায়, হাওয়া ভবনের নামে অনিয়ম আর লুটপাট চালায়, তারাই আজ মানবাধিকারের কথা বলে- যা শুনলে হাসি পায়’ বলেও মন্তব্য করেন ওবায়দুল কাদের।
আন্দোলন ও নির্বাচনে প্রত্যাখ্যাত হয়ে বিএনপি আবার লুটপাটের নেশায় ক্ষমতায় যেতে বিদেশিদের হস্তক্ষেপ চায় উল্লেখ করে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘এটি বিএনপির মতো মেরুদণ্ডহীন এবং জনগণের সঙ্গে সম্পর্কহীন রাজনৈতিক দলের পক্ষেই সম্ভব।’
বিদেশে নাকি বাংলাদেশ গণতন্ত্রহীন, ন্যায়বিচারহীন দেশ হিসেবে পরিচিত, বিএনপি নেতাদের এমন অর্থহীন বক্তব্য প্রসঙ্গে ওবায়দুল কাদের আরও বলেন, ‘বিশ্ব অর্থনীতিতে বাংলাদেশের উত্তরণ বিএনপি চোখে দেখে না।’বাংলাদেশকে যখন উন্নয়ন ও অর্জনের রোল মডেল বলা হয় তখন বিএনপি কানে শোনে না- এমন মনে করে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘বিএনপি চায় এ দেশ সমস্যা জর্জরিত রক্তাক্ত জনপদ হয়ে যাক, মুক্তিযুদ্ধের বিরোধী স্রোতধারায় চলুক।’
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে দেশের যে অব্যাহত অগ্রযাত্রা, তা অদম্য গতিতে এগিয়ে যাবে উল্লেখ করে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘বাংলাদেশ আর কোনোদিন বিএনপির সেই অন্ধকার যুগে ফিরে যাবে না।’
‘বিদেশে বিএনপি শুধু মিলিয়ন ডলার খরচ করে লবিস্ট ফার্ম নিয়োগ করে নাই, তারা এফবিআইকে ভাড়া করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার তথ্য ও প্রযুক্তিবিষয়ক উপদেষ্টা সজীব ওয়াজেদ জয়কে কিডন্যাপ করার ষড়যন্ত্র করেছিল’ উল্লেখ করে ওবায়দুল কাদের এ প্রসঙ্গে সকলকে স্মরণ করে দিয়ে বলেন, “প্রধানমন্ত্রীর সন্তান ও জাতির পিতার দৌহিত্র সজীব ওয়াজেদ জয়কে ‘ফিজিক্যালি হার্ম’ করার পরিকল্পনা প্রমাণিত হয় যুক্তরাষ্ট্রে বসবাসরত বিএনপিকর্মী রিজভী আহমেদ সিজারের বিরুদ্ধে।”
তিনি বলেন, ‘মামলা চলাকালীন রিজভী আহমেদ সিজার আদালতে জানান তিনি ও তার সহযোগী ইয়োহানেস থেলার মিলে সজীব ওয়াজেদ জয় ও তার পরিবারের সদস্যদের অপহরণের উদ্দেশে তথ্য সংগ্রহ করতে একজন এফবিআই স্পেশাল এজেন্টকে ঘুস দেন।’
আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেন- রিজভী আহমেদ সিজার আদালতে আরও জানান, ‘এ কাজের জন্য বিএনপির হাইকমান্ড হতে সাড়ে ৪ কোটি টাকা পুরস্কার হিসেবে পাওয়ার প্রতিশ্রুতি পেয়েছিল- মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের আদালতের নথিতে যা লিপিবদ্ধ আছে। এ বিষয়ে বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংবাদ মাধ্যমে প্রকাশিত হয় হয়।’