চুয়াডাঙ্গায় ঘটতে যাচ্ছিল আরেক সীতাকুণ্ড ট্রাজেডি। কিন্তু নাইটগার্ডের সর্তকতা ও ফায়ার সার্ভিসের কর্মীদের সাথে স্থানীয় যুবসমাজ ঝুঁকি নিয়ে কাজ করায় বড় বিপদ থেকে রক্ষা পাওয়া গেছে।
বুধবার রাত দেড়টার চুয়াডাঙ্গা জেলা শহরের ব্যবসায়ী এলাকা ফেরিঘাট রোডের একটি গোডাউনে হঠাৎ ভয়াবহ আগুন লাগার এই ঘটনা ঘটে।
তবে দ্রুত আগুন নেভানোর উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়। ফায়ার সার্ভিসের কর্মীদের সাথে ঝুঁকি নিয়েই আগুন নিয়ন্ত্রণে নেমে পড়ে স্থানীয় যুবসমাজ। আর এতেই এড়ানো গেছে কোটি কোটি টাকার ক্ষয়ক্ষতি ও হতাহতের ঘটনা।
জানা গেছ, সর্বপ্রথম আগুনের ফুলকি দেখেন একজন নাইটগার্ড। এরপর তিনি স্থানীয়দের জানালে ফায়ার সার্ভিসকে খবর দিলে ফায়ার সার্ভিসের একটি ইউনিট ঘটনাস্থলে পৌঁছে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনতে কাজ শুরু করে। এরপর আগুনের ভয়াবহতা মারাত্মক আকার ধারণ করলে ফায়ার সার্ভিসের আরো তিনটি দল এসে কাজ শুরু করে। পরে সম্মিলিত প্রচেষ্টায় মধ্যরাতের এই আগুন ৫ ঘণ্টা পর সকালে নিয়ন্ত্রণে আসে।
ফেরিঘাট রোডের বাসিন্দা সাইদুর রহমানের তিনতলা ভবনের নিচের গোডাউনটি ভাড়া নেয় সুপারস্টার কোম্পানির স্থানীয় ডিলার মামুন এন্টারপ্রাইজ। তারা এই গোডাউনে বাল্ব, ফ্যানসহ ইলেকট্রনিকের নানা পণ্য রাখতো। কিন্তু গতরাতে হঠাৎ করেই এই গোডাউনে আগুন লেগে যায়। বিদ্যুৎ-এর শর্ট সার্কিট থেকে এই আগুনের সুত্রপাত বলে ধারণা করা হলেও তা নিশ্চিত হওয়া যায়নি। তবে এ ঘটনায় এলইডি বাল্পসহ অর্ধকোটি টাকার ইলেকট্রনিক পণ্য পুড়ে গেছে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
প্রত্যক্ষদর্শী ও স্থানীয়রা জানান, রাত ২টার দিকে তিনতলা ওই ভবনের নিচতলায় আগুনের শিখা দেখতে পান তারা। এরপর ফায়ার সার্ভিসকে খবর দেয়া হয়।
ফায়ার সার্ভিসের সদস্যরা ঘটনাস্থলে পৌঁছে গোডাউনের শাটার ভেঙে আগুনের ভয়াবহতা দেখতে পান। এরপর শুরু হয় নিয়ন্ত্রণ কাজ। অন্তত ৫ ঘণ্টা চলে এ কার্যক্রম।
ওই ভবনের মালিক নাগিব মাহফুজ জানান, বাড়িটির নিচতলা গোডাউন হিসেবে ভাড়া দেয়া আছে। ওই গোডাউনে এলইডি বাল্ব, বৈদ্যুতিক পাখা ও বৈদ্যুতিক তার রাখা হতো। ইলেকট্রিক পণ্যের কারণে আগুন ভয়াবহ পর্যায়ে পৌঁছায়। তবে আগুন ছড়িয়ে না পড়ায় আশপাশে ক্ষয়ক্ষতি খুব বেশি হয়নি।
চুয়াডাঙ্গা ফায়ার সার্ভিস অ্যান্ড সিভিল ডিফেন্সের সহকারী পরিচালক রফিকুল ইসলাম জানান, রাত ২টার পর খবর পেয়ে আগুন নেভাতে কাজ শুরু করে ফায়ার সার্ভিসের ৪টি দল। একটানা কয়েক ঘণ্টার প্রচেষ্টায় আগুন নিয়ন্ত্রণে আসে। গোডাউনের প্রবেশ পথ ও জায়গা সরু হওয়ায় আগুন নিয়ন্ত্রণে বেগ পেতে হয়। এছাড়া গোডাউন ইলেকট্রিক জিনিসপত্র থাকার কারণে দ্রুতই আগুনের ছড়িয়ে পড়ে।
তিনি আরো বলেন, প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে, শর্টসার্কিট থেকে আগুনের সূত্রপাত। তবে, কী পরিমাণ ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে তা এখনো নিশ্চিত হওয়া যায়নি।