ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের (ইবি) শেখ হাসিনা হলে নবীন ছাত্রীকে নির্যাতনের ঘটনায় অভিযুক্তদের বিষয়ে চুড়ান্ত সিদ্ধান্ত আটকে আছে লাল ফিতার দৌরাত্ম্যে। এ ঘটানায় অভিযুক্ত পাঁচ ছাত্রীকে কেন স্থায়ী বহিষ্কার করা হবে না, তার কারণ দর্শানো নোটিশ দিয়েছিল বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। কারণ দর্শানোর সময় শেষ হওয়ার দুই সপ্তাহ পার হলেও এখন পর্যন্ত এ বিষয়ে কোনো সিদ্ধান্ত নেয়নি বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।
জানা গেছে, তদন্ত কমিটির তদন্তে অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় হাইকোর্টের নির্দের্শে গত ৪ মার্চ অভিযুক্ত অন্তরাসহ পাঁচ ছাত্রলীগ কর্মীকে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সাময়িক বহিষ্কার করা হয়। এছাড়া তাদের কেন স্থায়ী বহিষ্কার করা হবে না, তার কারণ দর্শানোর নোটিশ দেয়া হয়। গত ১৫ মার্চের মধ্যে তাদের কারণ দর্শাতে বলা হলেও শেষ পর্যন্ত পাঁচজনের মধ্যে দু‘জন নোটিশের জাবাব দেন।
এদিকে সাময়িক বহিষ্কার হওয়া ছাত্রলীগ নেত্রী সানজিদা চৌধুরী অন্তরাসহ অন্য তিনজন জবাব না দিয়ে সময় বাড়ানোর আবেদন করেন। একইসাথে তারা উচ্চ আদালতের নির্দেশনা এবং তদন্ত কমিটিসমূহের প্রতিবেদন চেয়ে আবেদন করেন। অভিযুক্তরা নতুন করে সময় বাড়ানোর আবেদন করার দুই সপ্তাহ পেরুলেও এখনো এ বিষয়ে কোনো সিদ্ধান্ত নেয়নি বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।
অ্যাকাডেমিক শাখা সূত্রে নির্ধারিত সময়ের মধ্যে তাবাসসুম ইসলাম ও মুয়াবিয়া জাহান জবাব দিয়েছেন। এছাড়া তারা সাময়িক বহিষ্কারে থাকা সত্ত্বেও অ্যাকাডেমিক পরীক্ষায় অংশগ্রহণের আবেদন জানান। একইসাথে পরীক্ষায় অংশ নেয়ার সুযোগ না দিলে আইনি ব্যবস্থা নিতে চেয়ে আইনি নোটিশ দেন তাবাসসুম। তবে তাদের পরীক্ষার সুযোগ নেই বলে সিদ্ধান্ত জানিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। এদিকে সানজিদা চৌধুরী অন্তরা, হালিমা আক্তার ঊর্মী ও ইসরাত জাহান মীম কার্যদিবসের শেষে সময় বাড়ানোর আবেদন করেন। অন্তরা নতুন করে এক মাস সময় চেয়েছেন বলে জানা গেছে। একইসাথে তারা হল, বিশ্ববিদ্যালয় ও জেলা প্রশাসনের তদন্ত কমিটির প্রতিবেদন চেয়েছেন।
অভিযুক্তদের পক্ষ থেকে আবেদনের দুই সপ্তাহ পার হলেও এ বিষয়ে কোনো সিদ্ধান্ত জানায়নি প্রশাসন। এছাড়া তাদের দাবিকৃত তদন্ত প্রতিবেদনও প্রেরণ করেননি বলে জানা গেছে।
এ বিষয়ে সানজিদা চৌধুরী অন্তরা বলেন, বিশ্ববিদ্যালয় থেকে আমাকে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেয়া হলেও আমার বিরুদ্ধে কোনো অভিযোগ তারা উল্লেখ করেনি। শুধু একটি রিট পিটিশন নম্বর দিয়েছে। এজন্য আমি ৬ তারিখে কাগজপত্র চেয়ে আবেদন করি। পরে কাগজ না পেয়ে আমি ১৩ তারিখ সময় চেয়ে আবেদন করি। এখনো কাগজপত্র বা সময় বাড়ানোর সিদ্ধান্ত কিছুই পাইনি। তারা আমাকে কাগজপত্র দিলে আমি সময়ের মধ্যেই জবাব দিতে পারতাম।
অ্যাকাডেমিক শাখার উপ-রেজিস্ট্রার আলীবদ্দীন খান বলেন, ‘আমার কাছে আবেদন আসার পর আমি রেজিস্ট্রার দফতরে পাঠিয়েছি। সেখান থেকে ভিসির কার্যালয় আবার আমার কাছে আসার কথা। কিন্তু এখনো ফাইল ফেরৎ আসেনি।’
ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার এইচএম আলী হাসান বলেন, ‘আমি ফাইল এন্ট্রি করে আইন প্রশাসককে পাঠিয়েছি। তিনি মতামত দিলে ভিসির কাছে দিব।’
আইন প্রশাসক ড. আনিচুর রহমান বলেন, ‘ফাইলটি আমার অফিসে আছে। আমি এখন ঢাকায় আছি, ফিরে এসে ফাইলটি ভালোভাবে দেখে আমার মতামত জানাবো।’