কুষ্টিয়া সিভিল সার্জন অফিসের নিয়োগ পরীক্ষার আগে জেলার ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতালের আরএমওর (রেসিডেন্ট মেডিকেল অফিসার) বাসায় কিছু পরীক্ষার্থীর অবস্থানের অভিযোগ উঠেছে।
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হওয়া ভিডিওতে দেখা যায়, পরীক্ষার দিন সকালে ২৫–৩০ জন প্রার্থী একসঙ্গে ওই বাসা থেকে বের হচ্ছেন। আগের রাতে অ্যাম্বুলেন্সে করে বাসায় প্রবেশের বিষয়টি ব্যাপক সমালোচনার জন্ম দিয়েছে।
তবে আরএমও ডা. মোহাম্মদ হোসেন ইমাম অভিযোগটি ভুলভাবে ব্যাখ্যা করা হচ্ছে বলে দাবি করেছেন।
অন্যদিকে, কুষ্টিয়ার জেলা প্রশাসক আবু হাসনাত মো. আরেফিন বিষয়টি তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন।
কুষ্টিয়া দুর্নীতি দমন কমিশনের এক সূত্র জানায়, তারা বিষয়টি জানতে পেরেছে এবং অনানুষ্ঠানিকভাবে অনুসন্ধান শুরু করেছে।
অভিযোগকারীরা বলছেন, বৃহস্পতিবার (২৪ অক্টোবর) ভোররাতে আরএমও ডা. হোসেন ইমামের পৈতৃক বাসায় পরীক্ষার্থীরা উপস্থিত ছিলেন।
তাদের দাবি, সেখানে আগেভাগেই প্রশ্নপত্র দেখিয়ে মুখস্থ করানো হয়েছে। স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, জেলার বিভিন্ন উপজেলা থেকে ২৫–৩০ জন প্রার্থীকে দুটি অ্যাম্বুলেন্স ও একটি সিএনজিচালিত অটোরিকশায় বাসায় আনা হয়েছিল। সেখানে তাদের অনুশীলনমূলক পরীক্ষা এবং প্রশ্ন প্রদর্শনের অভিযোগও উঠেছে।
পরিস্থিতি সন্দেহজনক মনে হওয়ায় স্থানীয়রা গণমাধ্যমকে খবর দেন।
সাংবাদিকরা ঘটনাস্থলে পৌঁছালে পরীক্ষার্থীরা দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে। কেউ বলেন তারা বন্ধুর বাসায় এসেছিলেন, আবার কেউ কোনো মন্তব্য না করে দ্রুত চলে যান।
একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হয়। ভিডিওতে দেখা যায়, ভোররাতে পরীক্ষার্থীরা অ্যাম্বুলেন্সে করে আরএমওর বাসায় ঢুকছেন এবং কিছুক্ষণ পর বের হচ্ছেন।
এই ঘটনায় ক্ষোভ প্রকাশ করে এক পরীক্ষার্থী আব্দুস সালাম বলেন, “সীমাহীন নিয়োগ বাণিজ্য ও দুর্নীতির কারণে আমি এ বছর পরীক্ষা থেকে বিরত থাকলাম।”
আরেক পরীক্ষার্থীর স্বামী মো. মহিদুল ইসলাম বলেন, “সোশ্যাল মিডিয়ার যুগে কিছুই গোপন থাকে না। ভিডিওতে দেখা গেছে, ভোররাতে পরীক্ষার্থীরা অ্যাম্বুলেন্সে আরএমওর বাসায় ঢুকছে ও বেরোচ্ছে। শুনেছি, এই চাকরির জন্য ১৪–১৫ লাখ টাকা পর্যন্ত লেনদেন হচ্ছে। নতুন সরকারের আমলে দুর্নীতি কমবে ভেবেছিলাম, কিন্তু বাস্তবে আরও বেড়েছে।”
অভিযোগ অস্বীকার করে আরএমও ডা. মোহাম্মদ হোসেন ইমাম বলেন, “ভোররাতের ঘটনায় আমি কিছুই জানি না। আমার পৈতৃক বাড়িতে আমি ও আমার ভাই ছাড়াও তিনটি ফ্লোরে মেস রয়েছে। পরীক্ষার্থীরা ওই মেসে এসেছিল। গণমাধ্যম কর্মীদের দেখলে তারা কেন পালিয়েছে, তা আমার অজানা।”
খুলনা স্বাস্থ্য বিভাগের পরিচালক ও নিয়োগ পরীক্ষার কমিটির সভাপতি ডা. মজিবুর রহমান বলেন, “নিয়োগ পরীক্ষা সম্পূর্ণ সুষ্ঠুভাবে হয়েছে। প্রশ্নপত্র প্রণয়ন, বিতরণ ও উত্তরপত্র সংগ্রহে কোনো দুর্বলতা ছিল না। কেউ যদি অনৈতিকভাবে সুবিধা নিতে চায়, তার দায়ভার তাকে নিতে হবে। আমরা চাই, মেধার ভিত্তিতে প্রার্থী নির্বাচন হোক।”




















