চলতি বছরের এসএসসি ও সমমান পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হলেও প্রায় সোয়া লাখ শিক্ষার্থী দেশের বিভিন্ন কলেজ ও মাদ্রাসায় একাদশ শ্রেণিতে ভর্তি হয়নি। এর ফলে মাধ্যমিকের গণ্ডি পেরিয়েই তাদের ঝরে পড়ার শঙ্কা তৈরি হয়েছে।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের (আইইআর) অধ্যাপক মোহাম্মদ আলী জিন্নাহ মনে করেন, এসব শিক্ষার্থী ঝরে পড়ার ঝুঁকিতে রয়েছেন। তার মতে, কেন তারা ভর্তিতে অংশ নেয়নি, তা জানার জন্য আলাদা গবেষণা প্রয়োজন। তিনি আশঙ্কা করছেন, অর্থনৈতিক অসচ্ছলতা, কর্মক্ষেত্রে প্রবেশ বা অন্যান্য কারণে তারা পড়ালেখা চালিয়ে যেতে পারছে না।
অন্যদিকে আন্তঃশিক্ষা বোর্ড সমন্বয় কমিটি জানিয়েছে, এখনই সঠিকভাবে বলা সম্ভব নয় শিক্ষার্থীরা কোথায় গেছে। কারিগরি শিক্ষা বোর্ডের ভর্তি প্রক্রিয়া শেষ হলে সঠিক চিত্র পাওয়া যাবে।
গত ১০ জুলাই এসএসসি ও সমমান পরীক্ষার ফল প্রকাশিত হয়। এতে ১১টি শিক্ষা বোর্ডের অধীনে ১৩ লাখ ৩ হাজার ৪২৬ জন শিক্ষার্থী পাস করে। পরে পুনঃনিরীক্ষণের ফলে ১০ আগস্ট এ সংখ্যা বেড়ে দাঁড়ায় ১৩ লাখ ৮ হাজার ৩৫৪ জনে। এদের মধ্যে কারিগরি শিক্ষা বোর্ডের অধীনে এসএসসি ও দাখিল ভোকেশনাল পরীক্ষায় উত্তীর্ণ ছিলেন ১ লাখ ১ হাজার ৭৫৭ জন।
কেন্দ্রীয় ভর্তি প্রক্রিয়ায় অংশ নেয় সাধারণ শিক্ষা বোর্ডের এসএসসি এবং মাদ্রাসা বোর্ডের দাখিল উত্তীর্ণ শিক্ষার্থীরা। তবে কারিগরি শিক্ষা বোর্ডের অধীনে এইচএসসি বিএম, বিএমটি ও ডিপ্লোমা ইন ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের ভর্তি প্রক্রিয়া আলাদাভাবে চলছে। তাই কারিগরি শিক্ষার্থীদের বাদ দিলে একাদশে ভর্তিযোগ্য শিক্ষার্থীর সংখ্যা দাঁড়ায় ১২ লাখ ৬ হাজার ৫৯৭ জন।
আন্তঃশিক্ষা বোর্ড সমন্বয় কমিটির সভাপতি ও ঢাকা মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান অধ্যাপক খন্দোকার এহসানুল কবির বলেন, “১০ লাখ ৮০ হাজার শিক্ষার্থী ভর্তি মনোনয়ন পেয়েছে। তবে বাকি শিক্ষার্থীরা কোথায় গেছে তা জানতে কারিগরি বোর্ডের ভর্তি তথ্যের জন্য অপেক্ষা করতে হবে।”
অধ্যাপক মোহাম্মদ আলী জিন্নাহ মনে করেন, সোয়া লাখ শিক্ষার্থী যদি মাধ্যমিক পেরিয়েই শিক্ষা থেকে বাদ পড়ে, তবে তাদের পুনরায় অন্তর্ভুক্তির উদ্যোগ নিতে হবে। তিনি বলেন, “শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের উচিত সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে আলোচনা করে নন-ফরমাল শিক্ষা, ভোকেশনাল বা ডিপ্লোমা কোর্সে তাদের অন্তর্ভুক্তির ব্যবস্থা করা। তা না হলে এ শিক্ষার্থীরা সমাজের জন্য বোঝা হয়ে উঠবে।”