জুলাই–আগস্ট আন্দোলনের সময় রাজধানীর চানখারপুল এলাকায় ছয়জন নিহত হওয়ার ঘটনায় দায়িত্বরত সাবেক ডিএমপি কমিশনার হাবিবুর রহমানসহ আটজনের বিরুদ্ধে মানবতাবিরোধী অভিযোগে দায়ের হওয়া মামলায় আজ ষষ্ঠ দিনের সাক্ষ্যগ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে।
বৃহস্পতিবার (১১ সেপ্টেম্বর) আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এর চেয়ারম্যান বিচারপতি মো. গোলাম মর্তূজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন বিচারিক প্যানেল এ সাক্ষ্যগ্রহণ শুরু করবেন।
এর আগে, ৭ সেপ্টেম্বর চতুর্থ দিনের মতো সাক্ষ্য দিয়েছেন তিনজন। এর মধ্যে একজন শহীদ শাহরিয়ার খান আনাসের মা সানজিদা খান দীপ্তি। বাকি দু’জন হলেন—আনাসকে গুলি করতে দেখা প্রত্যক্ষদর্শী রাব্বি হোসেন এবং ব্যবসায়ী আবদুল গফুর।
সাক্ষ্যগ্রহণের পর স্টেট ডিফেন্স ও আসামিপক্ষের আইনজীবীরা তাদের জেরা করেছেন। প্রসিকিউশনের পক্ষে শুনানি পরিচালনা করেন প্রসিকিউটর মিজানুল ইসলাম ও প্রসিকিউটর গাজী এমএইচ তামিম।
গত ২১ আগস্ট চতুর্থ দিনের সাক্ষ্যগ্রহণ ও জেরা শেষে শহীদ রাকিব হোসলাদারের বাবা মো. জাহাঙ্গীর হোসেন এবং বড় ভাই রাহাত হাওলাদার জবানবন্দি দিয়েছেন। তারা হত্যাকারীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চেয়েছেন।
১৩ আগস্ট তৃতীয় দিনে শহীদ ইয়াকুবের মা রহিমা আক্তার, প্রতিবেশী চাচা শহীদ আহমেদ এবং শহীদ মো. ইসমামুল হকের ভাই মহিবুল হক সাক্ষ্য দিয়েছেন। ১২ আগস্ট দ্বিতীয় দিনে জবানবন্দি দিয়েছেন দু’জন—একজন কলেজের সহযোগী অধ্যাপক আঞ্জুয়ারা ইয়াসমিন এবং অপরজন শহীদ শেখ মাহদী হাসান জুনায়েদের বাবা শেখ জামাল হাসান।
১১ আগস্ট চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম মামলার সূচনা বক্তব্য প্রদান করেন। এরপর প্রথম সাক্ষী হিসেবে শহীদ আনাসের বাবা শাহরিয়ার খান পলাশ সাক্ষ্য দেন। এ পর্যন্ত মোট ১১ জন জবানবন্দি দিয়েছেন।
আজও কারাগার থেকে চারজন আসামিকে ট্রাইব্যুনালে হাজির করবে পুলিশ। তারা হলেন—শাহবাগ থানার সাবেক ওসি (অপারেশন) মো. আরশেদ হোসেন, কনস্টেবল মো. সুজন মিয়া, মো. ইমাজ হোসেন ইমন এবং মো. নাসিরুল ইসলাম।
পলাতক আসামিরা হলেন—সাবেক ডিএমপি কমিশনার হাবিবুর রহমান, ডিএমপির সাবেক যুগ্ম কমিশনার সুদীপ কুমার চক্রবর্তী, রমনা অঞ্চলের সাবেক অতিরিক্ত উপকমিশনার শাহ আলম মো. আখতারুল ইসলাম এবং রমনা অঞ্চলের সাবেক সহকারী কমিশনার মোহাম্মদ ইমরুল।
গত ১৪ জুলাই ট্রাইব্যুনাল চানখারপুল মামলাটিতে চারজন পলাতকসহ আটজনের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করে বিচার শুরুর আদেশ দেন।
উল্লেখ্য, ২০২৪ সালের ৫ আগস্ট চানখারপুল এলাকায় শিক্ষার্থীদের শান্তিপূর্ণ আন্দোলনের সময় পুলিশের গুলিতে শাহরিয়ার খান আনাস, শেখ জুনায়েদ, মো. ইয়াকুব, মো. রাকিব হাওলাদার, মো. ইসমামুল হক এবং মানিক মিয়া শাহরিক নিহত হন।