বুধবার, ০১:৪৯ অপরাহ্ন, ০৩ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ১৯শে ভাদ্র, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ , ই-পেপার
নোটিশ :
মানব সেবায় নিয়োজিত অলাভজনক সেবা প্রদানকারী সংবাদ তথ্য প্রতিষ্ঠান।

ভালো পোস্টিং পেতে ৫০ লাখ টাকা ঘুষ দেন এসপি হান্নান

সময়ের কণ্ঠধ্বনি ডেস্ক:
  • আপডেট টাইম : বুধবার, ৩ সেপ্টেম্বর, ২০২৫
  • ৩ বার পঠিত

নরসিংদীর পুলিশ সুপার (এসপি) মো. আব্দুল হান্নান। পুলিশের ২৭তম ব্যাচের এই কর্মকর্তার বিরুদ্ধে পোস্টিংয়ের জন্য ৫০ লাখ টাকা ঘুষ লেনদেনের অভিযোগ উঠেছে। ২০২৪ সালের ৫ আগস্টের আগে ভালো জেলায় পোস্টিংয়ের জন্য রবিউল মুন্সি নামে এক ব্যক্তিকে তিনি ৫০ লাখ টাকা দিয়েছিলেন। শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর তিনি সেই টাকা উদ্ধারের চেষ্টা করেন। লেনদেনের নথিপত্রে তার স্বাক্ষরের প্রমাণও মিলেছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগের (সিআইডি) ফরেনসিক পরীক্ষায়। এরপর তাকে চাকরি থেকে কেন বরখাস্ত করা হবে না- জানতে চেয়ে ১০ দিনের সময় বেঁধে দিয়েছে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।

গত ২৫ আগস্ট স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগের সিনিয়র সচিব নাসিমুল গনি স্বাক্ষরিত একটি চিঠি আব্দুল হান্নানের বর্তমান ও স্থায়ী ঠিকানায় পাঠানো হয়। সেই চিঠি থেকে এসব তথ্য পাওয়া গেছে।

ঘুষ লেনদেন ও স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের চিঠির বিষয়ে আমাদের সময়ের পক্ষ থেকে জানতে চাইলে এসপি আব্দুল হান্নান বলেন, ‘নরসিংদী আসেন কথা বলব।’ অভিযোগের বিষয়ে আপনার কিছু বলার আছে কিনা? এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, ‘না’।

জননিরাপত্তা বিভাগের চিঠিতে বলা হয়, ২০২৪ সালের ৩০ আগস্ট নরসিংদী জেলায় যোগদানের আগে ২০২৩ সালে পুলিশ সুপার হিসেবে জেলায় পদায়ন পেতে আপনি (আব্দুল হান্নান) রবিউল মুন্সিকে ৫০ লাখ টাকা দেন। কিন্তু ২০২৪ সালের ৫ আগস্ট রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের কারণে রবিউল মুন্সি আপনাকে পুলিশ সুপার হিসেবে পদায়নের ব্যবস্থা করে দিতে ব্যর্থ হন। পরবর্তী সময় আপনি গত বছরের ৩০ আগস্ট নরসিংদী জেলায় পুলিশ সুপার হিসেবে যোগদান করেন। এরপর রবিউল মুন্সির কাছ থেকে টাকা উদ্ধারের চেষ্টা শুরু করেন।

একাধিক সূত্রে জানা গেছে, ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) সাবেক কমিশনার হাবিবুর রহমানের ঘনিষ্ঠ হিসেবে পরিচিত রবিউল মুন্সি।

জননিরাপত্তা বিভাগের চিঠিতে আরও বলা হয়, রবিউল মুন্সির কাছ থেকে টাকা উদ্ধারের জন্য ২০২৪ সালের ৯ নভেম্বর আপনি এবং আপনার অধীন ডিবি ইনচার্জ পুলিশ পরিদর্শক (নিরস্ত্র) এসএম কামরুজ্জামান ঢাকায় আসেন কর্তৃপক্ষের অনুমতি ছাড়াই। তেজগাঁওয়ের মনিপুরিপাড়ার বিজয় সরণির রবিউল মুন্সির অফিসে গিয়ে ৫ লাখ টাকা আদায় করেন। অবশিষ্ট ৪৫ লাখ টাকা উদ্ধারের জন্য পুলিশ পরিদর্শক এসএম কামরুজ্জামান নিজ হাতে একটি লিখিত ডকুমেন্ট তৈরি করেন। ক্ষমতার অপব্যবহার করে জোরপূর্বক রবিউল মুন্সির স্বাক্ষর নেন এবং আপনিও গ্রহণকারী হিসেবে স্বাক্ষর দেন। সিআইডির ফরেনসিক পরীক্ষায় স্বাক্ষরের বিষয়টি প্রমাণিত হয়। আপনার কাজে পুলিশের ভাবমূর্তি ক্ষুণœ হয়েছে। সরকারি দায়িত্ব-বহির্ভূতভাবে অধস্তন পুলিশ সদস্যকে অবৈধ পন্থায় ব্যক্তিগত কাজে নিয়োজিত করেছেন, যা কাম্য নয়।

চিঠিতে উল্লেখ করা হয়, আপনার এ ধরনের কর্মকা- অকর্মকর্তাসুলভ ও দুর্নীতিপরায়ণতা, শিষ্টাচারবহির্ভূত আচরণ এবং বিভাগীয় শৃঙ্খলা পরিপন্থি। যা সরকারি কর্মচারী (শৃঙ্খলা ও আপিল) বিধিমালা ২০১৮-এর ৩ (খ) বিধি অনুসারে অসদাচরণ ও দুর্নীতিপরায়ণতার পর্যায়ভুক্ত শাস্তিযোগ্য অপরাধ। আপনাকে অসদাচরণ ও দুর্নীতিপরায়ণতার দায়ে অভিযুক্ত করা হলো। চিঠিতে আরও বলা হয়, আপনাকে চাকরি হতে কেন বরখাস্ত অথবা অন্য কোনো উপযুক্ত দ- প্রদান করা হবে না, তা অভিযোগনামা প্রাপ্তির ১০ কার্যদিবসের মধ্যে লিখিতভাবে জানানোর জন্য বলা হলো। আত্মপক্ষ সমর্থনে আপনি ব্যক্তিগত শুনানির ইচ্ছা পোষণ করেন কিনা, সেটিও বর্ণিত নির্ধারিত সময়ের মধ্যে যথাযথ কর্তৃপক্ষের মাধ্যমে লিখিতভাবে জানানোর জন্য আপনাকে নির্দেশ দেওয়া হলো।

নিউজটি শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এ জাতীয় আরো খবর..
© All rights reserved © 2021 SomoyerKonthodhoni
Theme Dwonload From ThemesBazar.Com