বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে (বাকৃবি) চলমান আন্দোলনের সমাধানের লক্ষ্যে শিক্ষার্থী ও বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনের মধ্যে আলোচনা হয়েছে। এ সময় শিক্ষার্থীদের যৌক্তিক দাবি এবং আন্দোলন-পরবর্তী সময়ে শিক্ষার্থীদের বিরুদ্ধে যেন কোনো ধরনের ব্যবস্থা নেওয়া না হয় এসব বিষয়েও বিস্তারিত আলোচনা হয়।
গতকাল মঙ্গলবার সন্ধ্যা সাড়ে ৭টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের কৃষি অনুষদের সম্মেলন কক্ষে প্রশাসন এবং ভেটেরিনারি ও পশুপালন অনুষদের প্রতিনিধি শিক্ষার্থীদের সঙ্গে এই আলোচনা শুরু হয়। প্রায় সাড়ে ৪ ঘণ্টাব্যাপী আলোচনায় শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা নিজেদের মতামত তুলে ধরেন। তবে একক কম্বাইন্ড ডিগ্রির বিষয়ে এখনো কোনো চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত আসেনি।
আজ বুধবার ক্যাম্পাস ও হল খোলার বিষয়ে জরুরি সিন্ডিকেট সভায় সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। এর প্রেক্ষিতে শিক্ষার্থীরা আন্দোলন কর্মসূচি প্রত্যাহার করেছেন।
আলোচনার এক পর্যায়ে বাকৃবি উপাচার্য অধ্যাপক ড. এ. কে. ফজলুল হক ভূঁইয়া ভার্চুয়ালি যুক্ত হন। তিনি শিক্ষার্থীদের দাবিগুলোর বিষয়ে আলোচনা করেন এবং তাদের বিরুদ্ধে কোনো ধরনের ব্যবস্থা নেওয়া হবে না বলে জানান।
আলোচনা শেষে বাকৃবির ছাত্র বিষয়ক উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মো. শহীদুল হক বলেন, ‘আমরা দীর্ঘ সময় ধরে শিক্ষার্থীদের সঙ্গে আলোচনা করেছি। তাদের প্রথম দাবি ছিল হল বন্ধের আদেশ প্রত্যাহার এবং দ্বিতীয় দাবি ছিল আন্দোলনে জড়িত থাকায় যেন তারা হয়রানির শিকার না হয়। আমরা এই দুটি বিষয়েই তাদের আশ্বস্ত করেছি। সিন্ডিকেট সভায় হল খোলা নিয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হবে এবং আগামী সপ্তাহের মধ্যে ক্লাস-পরীক্ষা শুরুর ব্যাপারেও সিদ্ধান্ত আসবে। পাশাপাশি একাডেমিক কাউন্সিলে যে তিনটি ডিগ্রির প্রস্তাবনা ছিল, সেটি নিয়েও শিক্ষার্থীদের সঙ্গে বিস্তারিত আলোচনা হয়েছে।’
এ সময় আন্দোলনকারী শিক্ষার্থী এহসানুল হক হিমেল বলেন, ‘স্যারদের সঙ্গে ফলপ্রসূ আলোচনা হয়েছে। আলোচনার মাধ্যমে বিশ্ববিদ্যালয় ও হল খুলে দেওয়ার বিষয়ে আমরা একমত হয়েছি। সিন্ডিকেট মিটিংয়ে হল বন্ধের আদেশ প্রত্যাহার করা হবে এবং আগামী সাত দিনের মধ্যে ক্লাস-পরীক্ষা শুরু করার ব্যাপারে স্যাররা আমাদের আশ্বস্ত করেছেন। সেজন্য আমরা বুধবার কোনো কর্মসূচি রাখছি না। তবে একক কম্বাইন্ড ডিগ্রির বিষয়ে পরবর্তীতে আলোচনা ফলপ্রসূ না হলে আমরা আবার আন্দোলনে ফিরে যাব।’
আন্দোলনকারী আরেক শিক্ষার্থী মো. শিবলী সাদী বলেন, ‘একক কম্বাইন্ড ডিগ্রির বিষয়ে এখনো কোনো চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত আসেনি, এ বিষয়ে সামনে আরও আলোচনা হবে। পাশাপাশি আন্দোলনের সঙ্গে সম্পৃক্ত কোনো শিক্ষার্থীকে একাডেমিক বা প্রশাসনিক হয়রানির সম্মুখীন হতে হবে না বলে স্যাররা আমাদের আশ্বস্ত করেছেন। এই বিষয়ে আমরা প্রশাসনের কাছে একটি লিখিত বিবৃতি চেয়েছি, স্যাররা আগামীকাল সে ব্যাপারে জানাবেন বলে জানিয়েছেন।’