অনুষ্ঠানজুড়ে গুগলের আলোচনার মূল বিষয়বস্তু ছিল, কিভাবে জেমিনি এআই দৈনন্দিন জীবনে কাজে লাগানো যাবে। মেড বাই গুগল ইভেন্টে সাধারণত নতুন ডিভাইসগুলোর হার্ডওয়্যার বা সফটওয়্যারের সঙ্গে পরিচয় করিয়ে দেওয়ার প্রতি জোর দেওয়া হয়ে থাকে। আলোচনার ফোকাস পরিবর্তনেই বোঝা গেছে, নতুন পিক্সেলগুলোর হার্ডওয়্যারে তেমন নতুনত্ব নেই।
নতুন স্মার্টফোন
চারটি নতুন মডেলের পিক্সেল স্মার্টফোন উন্মোচিত হয়েছে এবার—পিক্সেল ১০, পিক্সেল ১০ প্রো, পিক্সেল ১০ প্রো এক্সএল এবং পিক্সেল ১০ প্রো ফোল্ড। প্রতিটি ফোনে ব্যবহৃত হয়েছে গুগলের নিজস্ব টেনসর জি৫ প্রসেসর। এটি টিএসএমসি-এর ৩ ন্যানোমিটার প্রযুক্তিতে তৈরি। পিক্সেল ১০-এর মূল ক্যামেরা ৪৮ মেগাপিক্সেল, আলট্রাওয়াইড ১৩ মেগাপিক্সেল এবং টেলিফটো ১০.৮ মেগাপিক্সেল রেজল্যুশনের।
স্মার্টওয়াচ ও হেডফোন
নতুন কোয়ালকম স্ন্যাপড্রাগন ডব্লিউ৫ জেন ২ প্রসেসর আর বাঁকানো ‘ডোম’ ডিসপ্লে সংবলিত নতুন পিক্সেল ওয়াচ ৪ উন্মোচিত হয়েছে। গুগলের দাবি, আগের মডেলগুলোর তুলনায় অন্তত ২৫ শতাংশ বেশি ব্যাটারি লাইফ এবং পারফরম্যান্স পাওয়া যাবে এতে।
পিক্সেল বাডসের বাজেট ‘বাডস ২এ’ মডেলটিও উন্মোচন করেছে গুগল। টেনসর এ১ চিপ সংবলিত হেডফোনটি নয়েজ ক্যানসেলিংসহ সাত ঘণ্টা ব্যাকআপ দিতে সক্ষম।
পারফরম্যান্স নিয়ে সংশয়
ডব্লিউসিসিএফটেকের রিপোর্ট অনুযায়ী, পিক্সেল ১০ সিরিজে ব্যবহৃত টেনসর জি৫ প্রথম প্রসেসর, যা পুরোপুরি গুগলের নিজস্ব ডিজাইনে তৈরি। এটি অত্যন্ত শক্তিশালী বলে গুগল দাবি করলেও বাস্তব পারফরম্যান্সে অ্যাপল বা কোয়ালকমের প্রসেসরগুলোর চেয়ে বেশ পিছিয়ে। প্রতিষ্ঠানটির চালানো বিভিন্ন পরীক্ষায় দেখা গেছে, নতুন এ প্রসেসরটির সিপিইউ ও জিপিইউ দুটোই অ্যাপল এ সিরিজ বা স্ন্যাপড্রাগন ৮ সিরিজের তুলনায় দুর্বল। পিক্সেল ১০ মডেলটিতে ভেপর চেম্বার দেয়া হয়নি। ফলে দীর্ঘ সময় ভারী অ্যাপ ব্যবহার করলে ফোনটি গরম হয়ে পারফরম্যান্স কমে যায়। তবে ফিচারটি পিক্সেল ১০ প্রো মডেলে দেয়া হয়েছে।
নতুনত্বের অভাব
সমালোচকদের মতে, প্রযুক্তিগত নতুনত্ব বা বাস্তবসম্মত উদ্ভাবনের কোনো রকম ছিটেফোঁটাও দেখাতে পারেনি গুগল। টেক ক্রাঞ্চ সরাসরি গুগলের এ ইভেন্টটিকে ‘ক্রিঞ্জ’ আখ্যায়িত করেছে। অ্যানড্রয়েড অথরিটি এবং টেক রাডার বলেছে, পিক্সেল ৯-এর পুনরাবৃত্তি পিক্সেল ১০। ক্যামেরার হার্ডওয়্যার, র্যাম, স্টোরেজ প্রায় একই। ওয়াইফাই ৭ বা ভেপর চেম্বারের মতো অতি প্রয়োজনীয় ফ্ল্যাগশিপ ফিচারও দেওয়া হয়নি। পিক্সেল ১০-এর বেস মডেলে ৪৮ মেগাপিক্সেল ও ১৩ মেগাপিক্সেল লেন্স এবং ১০.৮ মেগাপিক্সেল টেলিফটো রয়েছে। প্রো মডেলে উন্নত জুম সুবিধা থাকলেও ছবির রং ও অপটিমাইজেশন অনেক ব্যবহারকারীর কাছে সন্তোষজনক নয়। এবারও গুগল সেটি ঠিক করেনি, ডেমো ইউনিটে তোলা ছবিগুলো তার প্রমাণ।
মূল্য
পিক্সেল ১০-এর মূল্য ৭৯৯ ডলার থেকে শুরু। পিক্সেল ১০ প্রো ও এক্সএল-এর মূল্য শুরু ৯৯৯ ও এক হাজার ১৯৯ ডলার থেকে। পিক্সেল ১০ প্রো ফোল্ডের মূল্য শুরু এক হাজার ৭৯৯ ডলার থেকে। পিক্সেল ওয়াচ ৪-এর মূল্য ফিচার ও মডেলভেদে ৩৪৯ থেকে ৪৯৯ ডলার পর্যন্ত। পিক্সেল বাডস ২এ-এর মূল্য ধরা হয়েছে ১২৯ ডলার।