এই সেপ্টেম্বর আকাশপ্রেমীদের জন্য অপেক্ষার ক্ষণ ফুরোচ্ছে না। ৭ থেকে ৮ সেপ্টেম্বর ২০২৫ তারিখে একটি দুর্লভ পূর্ণ চন্দ্রগ্রহণ হবে, যা চাঁদকে লাল আভায় আলোকিত করে ‘ব্লাড মুন’ রূপে উপস্থাপন করবে।
এই গ্রহণের স্থায়িত্ব প্রায় ৮২ মিনিট, যা সাম্প্রতিক বছরগুলোর মধ্যে অন্যতম দীর্ঘতম বলে মনে করছেন জ্যোতির্বিজ্ঞানীরা। এশিয়া, আফ্রিকা, ইউরোপ এবং অস্ট্রেলিয়ার আকাশ থেকে স্পষ্টভাবে দেখা যাবে এই দৃশ্য, ফলে কোটি কোটি মানুষ সারা বিশ্বে এটি উপভোগের সুযোগ পাবেন।
পূর্ণ চন্দ্রগ্রহণ ঘটে তখন, যখন পৃথিবী সূর্য ও চাঁদের মাঝখানে অবস্থান নেয়। পৃথিবীর অন্ধকারতম ছায়া, যা ‘অম্ব্রা’ নামে পরিচিত, চাঁদের উপর পড়তে থাকে।
তবে চাঁদ সম্পূর্ণ অদৃশ্য হয় না। বরং এটি লালচে আভায় দীপ্তিময় হয়ে ওঠে। এর কারণ হলো সূর্যের আলো পৃথিবীর বায়ুমণ্ডলকে ভেদ করে চাঁদের দিকে পৌঁছায়। ছোট তরঙ্গদৈর্ঘ্যের রং, যেমন নীল ও বেগুনি, বায়ুমণ্ডলে ছড়িয়ে যায়, কিন্তু লাল ও কমলা রঙ সহজেই পৌঁছে চাঁদে প্রতিফলিত হয়। এই প্রক্রিয়াটি ‘রে-লি স্ক্যাটারিং’ নামে পরিচিত, যা সূর্যাস্তের আকাশ লাল হওয়াসহ একই বৈজ্ঞানিক নিয়মের ফল।
দীর্ঘ স্থায়িত্ব: প্রায় ৮২ মিনিট ধরে চলা এই পূর্ণগ্রহণ সাম্প্রতিক সময়ের অন্যতম দীর্ঘতম।
বিস্তৃত দৃশ্যমানতা: বেশিরভাগ চন্দ্রগ্রহণ শুধু নির্দিষ্ট অঞ্চলে দেখা যায়, কিন্তু এই রক্তিম চাঁদ প্রায় পুরো পূর্ব গোলার্ধে দৃশ্যমান হবে, ফলে কোটি কোটি মানুষ তা উপভোগ করতে পারবেন।
যদিও সাধারণভাবে এটি ‘ব্লাড মুন’ নামে পরিচিত, জ্যোতির্বিজ্ঞানীরা পরিষ্কার জানিয়েছেন—এতে কোনো রহস্যময়তা বা অলৌকিক ঘটনা নেই। এটি শুধুমাত্র পৃথিবীর বায়ুমণ্ডলের আলো ভাঁজ হওয়ার একটি প্রকৃতিক ও বৈজ্ঞানিক ফলাফল।
৭–৮ সেপ্টেম্বর রাতের আকাশে চাঁদ এক ঘণ্টারও বেশি সময় ধরে রক্তিম আভায় ঝলমল করবে। এটি জ্যোতির্বিজ্ঞানপ্রেমী, আকাশপ্রেমী এবং আলোকচিত্রীদের জন্য এক অনন্য ও বিরল অভিজ্ঞতা।
তাই ক্যালেন্ডারে তারিখ চিহ্নিত করুন, খুঁজে নিন নির্মল আকাশ, আর প্রস্তুত থাকুন প্রকৃতির এই অসাধারণ প্রদর্শন উপভোগ করার জন্য।