প্রথমবারের মতো রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে বড় পরিসরে জাতীয় সমাবেশ আয়োজন করতে যাচ্ছে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী।
শনিবার (১৯ জুলাই) দুপুর ২টায় শুরু হতে যাওয়া এই সমাবেশ ঘিরে সারাদেশে চলছে ব্যাপক প্রচারণা ও প্রস্তুতি।
মহানগর, জেলা, উপজেলা এমনকি পাড়া-মহল্লা পর্যন্ত ছড়িয়ে পড়েছে মিছিল, পথসভা ও পোস্টারিংয়ের মাধ্যমে সমাবেশের বার্তা।
জামায়াত বলছে, এই সমাবেশে অন্তত ১০ লাখ মানুষের উপস্থিতি আশা করা হচ্ছে। আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে এই সংখ্যা আরও বাড়তে পারে বলে তাদের ধারণা।
এই লক্ষ্যে সারাদেশ থেকে প্রায় ১০ হাজার বাস, লঞ্চ এবং রিজার্ভ ট্রেনের ব্যবস্থা করা হয়েছে।
উত্তরাঞ্চলের জেলাগুলো থেকে দেড় হাজারের মতো বাস ইতোমধ্যে রিজার্ভ করা হয়েছে।
১৮ জুলাই রাতে চট্টগ্রাম থেকে একটি বিশেষ ট্রেন ঢাকায় আসবে, যা সব নিয়ম মেনে ভাড়া দিয়ে বুকিং দেওয়া হয়েছে।
পাশাপাশি নৌপথেও ঢাকা অভিমুখে যাত্রার জন্য লঞ্চ বুকিং দেওয়া হয়েছে।
অনেকেই যেহেতু ঢাকায় আত্মীয়স্বজনের বাসায় উঠবেন, তাই তারা আগেভাগেই রাজধানীতে আসছেন। ফলে পুরো শহরে সমাবেশ ঘিরে এক ধরনের উৎসবমুখর পরিবেশ দেখা দিয়েছে।
দলটির সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল অ্যাডভোকেট এহসানুল মাহবুব জুবায়ের জানিয়েছেন, সমাবেশ সফল করতে এরই মধ্যে লঞ্চ ও ট্রেন বাদ দিয়ে শুধু ১০ হাজার বাস ভাড়া করা হয়েছে।
তিনি আশা করছেন— ১০ লক্ষাধিক নেতাকর্মীর সমাগম ঘটবে এবং এর জন্য শুধু ছয় হাজার স্বেচ্ছাসেবক সার্বিক শৃঙ্খলা ও অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তার জন্য নিয়োজিত থাকবে।
জামায়াতের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, এই সমাবেশে দলটির ঘোষিত সাত দফা দাবি তুলে ধরা হবে। এ নিয়ে চলছে নিবিড় প্রস্তুতি। শুধু দলের কর্মী-সমর্থকরাই নয়, বিভিন্ন সমমনা দল ও সংগঠনের নেতৃবৃন্দকেও দাওয়াত দেওয়া হয়েছে।
ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ, জাতীয় নাগরিক পার্টি, গণঅধিকার পরিষদসহ ‘জুলাই অভ্যুত্থান’পন্থী বেশিরভাগ দলই দাওয়াত পেয়েছে।
সমাবেশ সফল করতে একটি বাস্তবায়ন কমিটি গঠন করা হয়েছে, যারা মঞ্চ নির্মাণ, মাইকিং, ডিজিটাল ডিসপ্লে, স্যানিটেশন, বিশুদ্ধ পানির ব্যবস্থা, স্বাস্থ্যসেবা এবং আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সঙ্গে সমন্বয়সহ সার্বিক প্রস্তুতি তদারকি করছে।
মঙ্গলবার বাস্তবায়ন কমিটির এক বৈঠকে এসব বিষয়ে বিস্তারিত সিদ্ধান্ত হয়। স্বেচ্ছাসেবকদের নির্দিষ্ট দায়িত্ব বণ্টন করে মাঠে নামানো হবে এবং তারা আগতদের সব ধরনের সহযোগিতা করবেন। সমাবেশের বার্তা গণমাধ্যম ও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে দিতে মিডিয়া কমিটিকে আরও সক্রিয় করা হয়েছে।
এছাড়া, জাতীয় সমাবেশ বাস্তবায়নে পুলিশের সহযোগিতা ও আনুষঙ্গিক বিষয় নিয়ে জামায়াত নেতারা ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) সঙ্গে বৈঠক করেছেন। সাত সদস্যের একটি প্রতিনিধি দল অ্যাডভোকেট এহসান মাহবুব জুবায়েরের নেতৃত্বে ডিএমপির কর্মকর্তাদের সঙ্গে আলোচনায় অংশ নেয়।