বছরের পর বছর ধরে বাংলা নববর্ষের শোভাযাত্রা বাঙালির প্রাণের উৎসব হয়ে উঠেছে। আগেরকার দিনে এই উৎসবের শোভাযাত্রায় গ্রামীণ ঐতিহ্যের সব উপকরণ নিয়ে সাধারন মানুষ অংশগ্রহন করত। কিন্তু সময়ের সঙ্গে সঙ্গে হারিয়ে গেছে বাঙালীর অনেক পুরানো সেই ঐতিহ্য ও সংস্কৃতি। হারিয়ে যাওয়া সেসব ঐতিহ্যের অন্যতম হলো উপকরণ হলো “পালকী”। যা এক সময়ে গ্রামের বিয়ে থেকে শুরু করে বিভিন্ন ক্ষেত্রে ব্যবহার হতো।
যান্ত্রিকতার ছোয়ায় বাঙালী সংস্কৃতি থেকে হারিয়ে যাওয়া ঐতিহ্যবাহী বাহন “পালকী” এবার নববর্ষের শোভাযাত্রায় ফিরিয়ে এনে এক ব্যতিক্রমী দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন বরিশালের গৌরনদী উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও পৌর প্রশাসক মোঃ আবু আবদুল্লাহ খান। এবারের শোভাযাত্রায় সবার নজর কেড়ে নেয় ফুল ও আলপনায় সজ্জিত এই পালকি। পালকির ভিতরে স্থান পায় একটি শিশু, যার পোশাকে ছিল গ্রামীণ নববর্ষের প্রতীকী রূপ। এ ছাড়াও কৃষকরা পাকা ধানের ছড়া নিয়ে শোভাযাত্রায় অংশগ্রহন করে। ফলে পুরো শোভাযাত্রাটিতে বাঙালীর ঐতিহ্যে প্রানবন্ত হয়ে ফুটে উঠে।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও পৌর প্রশাসক মোঃ আবু আবদুল্লাহ খান বলেন, যান্ত্রিকতার যুগে গ্রাম-বাঙলার অনেক ঐতিহ্য হারিয়ে গেছে। আজকের প্রজন্মের অনেকে জানেই না আসলে পালকী কি। তারা শুধু বইয়ের পাতায় দেখে। তাই আমরা চেয়েছি হারিয়ে যাওয়া এই ঐতিহ্য চোখের সামনে তুলে ধরতে। যাতে তারা আমাদের বাঙালী সংস্কৃতি ও ইতিহাস সম্পর্কে জানতে পারে। উপজেলা প্রশাসনের আয়োজনে সোমবার সকাল ৮টায় জাতীয় সংগীত ও বৈশাখী গানের মধ্যদিয়ে নববর্ষের সূচনা করা হয়। এরপর ভাষা সৈনিক কাজী গোলাম মাহবুব চত্বর থেকে শোভাযাত্রা বের হয়ে উপজেলা সদরের প্রধান প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ করে। পরে উপজেলা শিশু পার্কে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। অনুষ্ঠান শেষে পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন সহকারী কমিশনার (ভূমি) মোঃ রাজিব হোসেন, উপজেলা নির্বাহী অফিসারের সহধর্মিনী অ্যাড. ফাতিমা আক্তারসহ অতিথিবৃন্দগন। অনুষ্ঠানে উপজেলা প্রশাসনের বিভিন্ন দপ্তরের কর্মকর্তা, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান সমুহের প্রধান গন, বীর মুক্তিযোদ্ধ, জনপ্রতিনিধি, সাংবাদিকসহ নানা শ্রেণি-পেশার মানুষ ও শিক্ষার্থীরা অংশগ্রহন করেন।