দক্ষিণ কোরিয়ার ক্ষমতাচ্যুত প্রেসিডেন্ট ইউন সুক ইওল রাজধানী সিউলের প্রেসিডেনশিয়াল বাসভবন ত্যাগ করেছেন।গতকাল শুক্রবার বিদায়ের সময় তিনি উপস্থিত সমর্থকদের আলিঙ্গন করেন ও করমর্দন করেন।
সে সময়, বাসভবনের বাইরে ‘ইউন অ্যাগেইন’ লেখা প্ল্যাকার্ড হাতে বহু মানুষ ভিড় করেন। পুলিশ পাহারায় একটি বহর তাকে নিয়ে বাসভবন ত্যাগ করে।
গত সপ্তাহে সাংবিধানিক আদালত ৬৪ বছর বয়সী ইউনের সব ধরনের ক্ষমতা ও সুবিধা কেড়ে নেয়। ৩ ডিসেম্বর মার্শাল ল’ জারি করার ঘটনাকে ‘বিপর্যয়কর’ আখ্যা দিয়ে আদালত এ রায় দেয়। সে সময় পার্লামেন্টে সেনা মোতায়েন করে দেশজুড়ে বিস্ময় সৃষ্টি করেছিলেন ইউন। তবে তার ওই উদ্যোগ কয়েক ঘণ্টার বেশি স্থায়ী হয়নি।
শুক্রবার ইউন তার সমর্থকদের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে বলেন, ‘আপনারা ঠান্ডার মধ্যেও যে সাহসিকতা ও নিষ্ঠার পরিচয় দিয়েছেন, তা আমার হৃদয়ে গেঁথে থাকবে। আপনারা স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব রক্ষার লড়াইয়ে পাশে ছিলেন।’
আইনজীবীদের মাধ্যমে প্রকাশিত বিবৃতিতে ইউন আরও বলেন, ‘আজ থেকে আমি কোরিয়ার একজন সাধারণ নাগরিক হিসেবে নতুন করে দেশ ও জনগণের সেবা করার পথ খুঁজে নেব।’
সিউলের সেওচো জেলায় ইউনের বাসায় তাকে স্বাগত জানাতে আরও শত শত সমর্থক অপেক্ষা করছিলেন। কেউ কেউ ফুল হাতে এসেছিলেন।
বাসার প্রবেশপথের সামনে টানানো একটি ব্যানারে লেখা ছিল, ‘অ্যান্ড মিসেস প্রেসিডেন্ট, আপনাদের সেবার জন্য ধন্যবাদ – আবাসিক সমিতি।’
ইউনের এক প্রতিবেশী বলেন, ‘প্রয়োজনে আমি আবারও তাকে ভোট দেব, তবে নিরাপত্তা নিয়ে কিছুটা উদ্বেগ আছে। আগেরবার অতিরিক্ত নিরাপত্তা ও আলাদা লিফট ব্যবস্থায় আমরা বেশ বিরক্ত হয়েছিলাম। তাছাড়া, উনি তার সব পোষা প্রাণী নিয়ে কী করবেন?’ সাবেক এই প্রেসিডেন্টের বর্তমানে ১১টি বিড়াল ও কুকুর রয়েছে।
প্রেসিডেন্সি ছাড়লেও ইউন এখনও রাষ্ট্রদ্রোহমূলক অভ্যুত্থান ঘোষণার কারণে ফৌজদারি মামলার মুখোমুখি।
এদিকে আগামী ৩ জুন দক্ষিণ কোরিয়ায় প্রেসিডেন্ট নির্বাচন অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে। এতে প্রধান বিরোধীদলীয় প্রার্থী লি জায়ে-মিয়ং এগিয়ে রয়েছেন। শুক্রবার লি তার নির্বাচনী নীতির রোডম্যাপ প্রকাশ করে জানান, তিনি দেশকে সাম্প্রতিক রাজনৈতিক সংকট থেকে পুনরুদ্ধার করতে চান।
২০২২ সালের নির্বাচনে ইউনের কাছে অল্প ব্যবধানে পরাজিত হয়েছিলেন লি। তবে তিনি আইনি ঝামেলা ও চলমান বিচার প্রক্রিয়ার মধ্যেও প্রধান বিরোধীদলের নেতা হিসেবে রাজনীতিতে প্রত্যাবর্তন করেছেন।