গাজীপুরের শ্রীপুরে মোহনগঞ্জগামী যাত্রীবাহী একটি ট্রেনে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছে।আজ বৃহস্পতিবার বেলা ১১টা ৫ মিনিটে ঢাকা-ময়মনসিংহ রেলসড়কের সাতখামাইর স্টেশনের কাছে এ ঘটনা ঘটে। এতে ওই রুটে ট্রেন চলাচল বন্ধ রয়েছে।
জানা গেছে, ট্রেনের পাওয়ার কারে অগ্নিকাণ্ডের সৃষ্টি হয়। এ সময় ওই বগিতে থাকা যাত্রী ও ছাদে থাকা যাত্রীরা আগুন আতঙ্কে ডাক-চিৎকার শুরু করেন।চিৎকার শুনে চালক ট্রেনটি থামাতে সক্ষম হন। তবে কোনো হতাহতের ঘটনা ঘটেনি। পরে স্থানীয়রা আগুন নেভানোর চেষ্টা করে ব্যর্থ হন। খবর পেয়ে ফায়ার সার্ভিসের দুটি ইউনিট ঘটনাস্থলে এসে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে।
দুপুর সাড়ে ১২টায় রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত সড়কে ট্রেন চলাচল বন্ধ রয়েছে। উদ্ধার করা হয়নি ট্রেনটি।
যাত্রীরা জানান, বেলা ১১টার একটু আগে মোহনগঞ্জগামী মহুয়া কমিউটার ট্রেনটি শ্রীপুর স্টেশন ছাড়ে। কিছুদূর যেতেই ট্রেনের পাওয়ার কারে ধোঁয়া দেখতে পান তারা। তাৎক্ষণাৎ ট্রেনে আগুন ধরে যায়। এ সময় পাওয়ার কারে থাকা ১০-১২ জন যাত্রী আগুন আতঙ্কে বাঁচাও বাঁচাও চিৎকার করতে থাকেন।
এ সময় ছাদে থাকা যাত্রীরা চিৎকার করে চালকের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন। পরে চালক ট্রেনটির গতি নিয়ন্ত্রণ করে সাতখামাইর স্টেশনের প্রবেশ মুখে থামাতে সক্ষম হয়। আতঙ্কিত যাত্রীরা প্রাণ ভয়ে লাফিয়ে পড়েন।
পাওয়ার কারে থাকা যাত্রী মাইনুদ্দিন বলেন, ‘পাওয়ার কারে ১০-১২ জন যাত্রী ছিলাম। হঠাৎ ধোঁয়ার সৃষ্টি হয়। পর মুহূর্তেই আগুন ধরে যায়। আমরা জীবন বাঁচাতে চিৎকার করতে থাকি। তখন কেউ শুনতে পায়নি। আগুন বিকট হতে থাকলে অন্য যাত্রীরা দেখে চালককে জানায়। পরে ট্রেন থামলে প্রাণে বাঁচি।’
গফরগাঁওয়ের যাত্রী রেশমা বলেন, ‘ট্রেনে বাড়ি যাচ্ছিলাম। ট্রেনে আগুন দেখে চিৎকার করতে থাকি। ট্রেন থামলে নিরাপদে নামতে পারি।’
গাড়ির টিটি শহিদুল ইসলাম বলেন, ‘আমি অন্য বগিতে ছিলাম। পেছনের বগিতে ধোঁয়া দেখে চালকের সঙ্গে যোগাযোগ করি। পরে ট্রেন থামানো হয়। স্থানীয়দের সঙ্গে নিয়ে পানি বালু দিয়ে আগুন নেভানোর চেষ্টা করি।’
ট্রেনের লোকোমাস্টার-১ লুৎফোর রহমান জানান, ছয় বগির পেছনে পাওয়ার কারে আগুন লাগে। ট্রেন ছাদে থাকা যাত্রীরা তাকে চিৎকার করে জানায় ট্রেনে আগুন লেগেছে। পেছনে তাকিয়ে প্রচণ্ড ধোঁয়া দেখতে পান তিনি। তাৎক্ষণিক ট্রেনটি সাতখামাইর স্টেশনে প্রবেশ করার সময় বেলা ১১টা ৫ মিনিটের দিকে ট্রেনটি থামাতে সক্ষম হন।
জানতে চাইলে ট্রেনের পরিচালক মো. শাহাদাত হোসেন বলেন, ‘আগুন লাগার বিষটি জানামাত্রই চালক ট্রেন থামায়। আমরা প্রথমে পাওয়ার কারটিকে ট্রেন থেকে আলাদা করি। এতে আগুন অন্য বগিতে ছড়াতে পারেনি। খবর পেয়ে ফায়ার সার্ভিস এসে আগুন নিয়ন্ত্রণ করে। কেউ হতাহত হয়নি।’
ফায়ার সার্ভিস গাজীপুরের উপ সহকারী পরিচালক মো. মামুন জানান, ১১টা ১১ মিনিটে খবর পান। দ্রুত সময়ে দুটি ইউনিট ঘটনাস্থলে পৌঁছে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে।কেউ হতাহত হয়নি। আগুনে পুরো টাওয়ার কার পুড়ে গেছে।
অগ্নিকাণ্ডের কারণ ও ক্ষতির পরিমাণ তাৎক্ষণিকভাবে জানা যায়নি।