বিএনপির চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা ও সাবেক সাংসদ এম. জহির উদ্দিন স্বপন বলেছেন, জাতিসংঘের মানবঅধিকার কমিশন লিখিত ভাবে তাদের প্রতিবেদনে বলেছে শেখ হাসিনার নির্দেশে দেশে গুম, খুন ও বিচার বহির্ভূত হত্যা করা হয়েছে।
শুক্রবার বিকেলে বরিশালের আগৈলঝাড়া উপজেলা সদরের ভেগাই হালদার পাবলিক একাডেমী মাঠে অনুষ্ঠিত এক বিশাল জনসমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তৃতাকালে তিনি এ কথা বলেন।
দেশব্যাপী গুম, খুন ও বিচার বহির্ভূত হত্যার বিচারের দাবীতে আগৈলঝাড়া উপজেলা বিএনপি ওইদিন বিকেল তিনটায় এ জনসমাবেশের আয়োজন করে।
নির্ধারিত সময়ের প্রায় একঘন্টা পরে বিকেল ৪টায় শুরু হওয়া ওই জনসমাবেশে তিনি আরো বলেন, অবৈধ প্রধানমন্ত্রী ফ্যাসিষ্ট শেখ হাসিনা নিজে ওই হত্যা, গুম, খুনের নির্দেশ দিয়েছেন। অন্তর্র্বতীকালীন সরকারকে বলতে চাই। এ সব হত্যাকান্ডের বিচার বিলম্ব হলে তাদেরকেও জবাবদিহি করতে হবে। ছাত্র-জনতার আন্দেলনের ওপর হেলিকপ্টার থেকে গুলিকরা হয়েছে। যারা জানালায় দাড়িয়ে দেখছিলো তাদের ও শিশুদেরকে গুলি করে হত্যা করা হয়েছে। জাতিসংঘ যখন এমন অভিযোগ করেছে, তার পরেও কেনো বিচারে বিলম্ব করা হচ্ছে। পুলিশের ক্রসফায়ার নাটকে নিহত আগৈলঝাড়া উপজেলার টিপু, কবির ও সাগরসহ হাজার হাজার হত্যাকারিদের যতোদিন বিচারের কাঠগড়ায় দাড়াতে না দেখবো, আমরা ততোদিন আন্দোলন করে যাবো। এই হত্যার মূল হোতাদেকে বিচারে আওতায় আনতে হবে।
এম. জহির উদ্দিন স্বপন বলেন, টিপু, কবির ও সাগর হাত্যার বিচারে আগে যদি হত্যাকারিরা মারা যায় তাহলে তাদের মরনোত্তর বিচার করতে হবে। দেশের সকল সমস্যার একমাত্র সমাধান জাতীয় নির্বাচন। নির্বাচনে জনগণ যাতে অবাধে ভোট দিতে পারে তার জন্য সংস্কার দরকার। আমরা শর্ত দিয়েছি অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য যে সংস্কার দরকার অবিলম্বে তা করতে হবে, তা করতে বিলম্ব হলে আমরা আমাদের কণ্ঠস্বরকে কঠিন করব, বিলম্বকে আমরা বরদাশত করব না।
আগৈলঝাড়া উপজেলা বিএনপির ভারপ্রাপ্ত আহবায়ক সিকদার হাফিজুল ইসলামের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত ওই জনসমাবেশে বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন, বরিশাল উত্তর জেলা বিএনপির আহবায়ক বীর মুক্তিযোদ্ধা দেয়ান মোহাম্মদ শহীদুল্লাহ। উত্তর বরিশাল জেলা বিএনপির সদস্য সচিব মো.মিজানুর রহমান খান মুকুল, জাতীয়তাবাদী মুক্তিযোদ্ধা দল কেন্দ্রীয় সাংসদ সহসভাপতি ও গৌরনদী বিএনপির আহবায়ক বীর মুক্তিযোদ্ধা সৈয়দ সরোয়ার আলম বিপ্লব।
আগৈলঝাড়া বিএনপির সদস্য সচিব মোল্লা বশির আহমেদ পান্নার সঞ্চালনায় অনুষ্ঠিত জনসমাবেশে আরো বক্তব্য রাখেন, শাহ মোহাম্মদ বখতিয়ার, সারোয়ার হোসেল সিকদার, সঞ্জয় দাস গুপ্ত, মিজানুর রহমান মিঠু, শহীদ কবির মোল্লার স্ত্রী, শহীদ টিপু হাওলাদারের বোন ফারহানা আক্তার, বদিউজ্জামান মোল্লা সরল, জামাল বখতিয়ার, দীনেস চন্দ্র হালদার, সাইদুল আলম সেন্টু, এ্যাডভোকেট সাজেদা প্রমূখ।
এর আগে শুক্রবার সকাল ১১টায় তিনি গৌরনদী উপজেলার লাখেরাজ কসবা গ্রামে সমাহিত সর্বদলীয় রাষ্ট্রভাষা সংগ্রাম কমিটির আহবায়ক মরহুম ভাষা সৈনিক এ্যাডভোকেট কাজী গোলাম মাহাবুব (ছরুকাজী)’র কবর জেয়ারত করেন এবং তার সমাধীতে ফুল দিয়ে একুশের ভাষা শহীদদের প্রতি গভীর শ্রদ্ধা নিবেদন করেন। এর পর বেলা সাড়ে ১১টায় তিনি গৌরনদী উপজেলার টরকী বন্দর বর্নিক সমিতির নেতৃবৃন্দ ও সদস্যদের সাথে মতবিনিময় করেন। বনিক সমিতির সভাপতি শরীফ শাহাবুব হাসানসহ নেতৃবৃন্দগন বন্দরের নানা সমস্য তার কাছে তুলে ধরে এর সমাধান দাবি করেন। জবাবে তিনি ব্যবসায়ীদের সকল সমস্যা সমাধানে সর্বাত্বক সহযোগীতার আশ^াস দেন।