মঙ্গলবার, ০৫:২৭ অপরাহ্ন, ০৮ জুলাই ২০২৫, ২৪শে আষাঢ়, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ , ই-পেপার
নোটিশ :
মানব সেবায় নিয়োজিত অলাভজনক সেবা প্রদানকারী সংবাদ তথ্য প্রতিষ্ঠান।
শিরোনাম :

বোন বিয়েতে রাজি না হওয়ায় ভাইকে খুঁটিতে বেঁধে নির্যাতন

সময়ের কণ্ঠধ্বনি ডেস্ক:
  • আপডেট টাইম : মঙ্গলবার, ৮ জুলাই, ২০২৫
  • ৬ বার পঠিত

প্রেমের প্রস্তাবে রাজি হয়নি স্কুল পড়ুয়া মেয়েটি। এরপর দেওয়া হয় বিয়ের প্রস্তাব। এতে সায় দেয়নি ওই মেয়ের পরিবার। এতে ক্ষিপ্ত হয় যুবক।

প্রেম ও বিয়ের প্রস্তাবে রাজি না হওয়ায় ওই স্কুলছাত্রীর ভাইকে আটক করে বিদ্যুতের খুঁটিতে বেঁধে চালায় নির্যাতন। এতে গুরুতর আহত হয় ওই ভাই।

খবর পেয়ে গ্রাম পুলিশের সহায়তায় তাকে উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করে স্বজনরা।

ঘটনাটি ভোলার চরফ্যাশন উপজেলার চরমাদ্রাজ ইউনিয়নের মেয়াজানপুর গ্রামের ৯ নম্বর ওয়ার্ডের তালুকদার চৌরাস্তা এলাকার। এ ঘটনার একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে।

ভুক্তভোগী ভাইয়ের নাম জাহিদুল ইসলাম (২৫)। তিনি উপজেলার শশীভূষণ থানাধীন হাজারীগঞ্জ ইউনিয়নের মো. মাজেদ ঢালীর ছেলে। আর অভিযুক্তের নাম তুহিন। এক সময় জাহিদুলের কাছের বন্ধু ছিল তুহিন।

স্থানীয় এক যুবক বলেন, ‘অভিযুক্ত তুহিন, যুবদল নেতা ইমন তালুকদারসহ নির্যাতনে জড়িত যুবকদের প্রায় সবাই মাদকে আসক্ত। তারা এলাকায় ত্রাস সৃষ্টি করে রেখেছে। তাদের ভয়ে পুরো গ্রামে আতঙ্ক বিরাজ করছে।’

মঙ্গলবার সকালে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন জাহিদুল জানান, প্রতিবেশী তুহিনের সঙ্গে তার বন্ধুত্ব বহুদিনের। সেই সুবাদে তুহিন তাদের বাড়িতে যাওয়া-আসা করত।

একপর্যায়ে তুহিন জাহিদুলের নবম শ্রেণিতে পড়ুয়া ছোট বোনকে প্রেমের প্রস্তাব দেয়। বিষয়টি ছোট বোন ভাই ও পরিবারকে জানালে তুহিনের সঙ্গে তাদের দূরত্ব সৃষ্টি হয়।

পরে তুহিন ওই মেয়েটিকে বিয়ের প্রস্তাব দেয়। তবে পরিবারের পক্ষ থেকে প্রস্তাবে রাজি না হওয়ায় ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠে তুহিন ও তার সহযোগীরা।

গত শুক্রবার ভোরে তুহিন ফোন করে জানায়, তিনি সমস্যায় পড়েছে। এর জেরে চৌরাস্তায় যায় জাহিদুল। সেখানে গেলে তুহিন, যুবদল নেতা ইমন তালুকদার, আমিনুল ইসলাম ও মো. সিদ্দিক তার উপর অতর্কিত হামলা চালায়।

তাকে বিদ্যুতের খুঁটির সঙ্গে বেঁধে অমানুষিক নির্যাতন চালায়। ফ্লাশ লাইটের ব্যাটারি দিয়ে তার হাত-পায়ের নখ তুলে ফেলে।

মারধরে জাহিদুল জ্ঞান হারালে তাকে পানিতে চুবিয়ে জ্ঞান ফিরিয়ে পুনরায় নির্যাতন চালানো হয়।

তুহিনসহ অন্যরা নির্যাতনের ভিডিও মোবাইলে ধারণ করে এবং পরে মাদক দিয়ে ফাঁসানোর চেষ্টা করে।

বারবার অনুনয় করলেও নির্যাতনকারীরা থামেনি।পরবর্তীতে জাহিদুলের বাবা মাজেদ ঢালী স্থানীয় রিকশাচালকের মাধ্যমে ঘটনাটি জানতে পেরে স্ত্রী এবং গ্রাম পুলিশ বজলু রহমানকে সঙ্গে নিয়ে ছেলেকে উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তি করান।

জাহিদুলের মা আছমা বেগম বলেন, ‘তুহিন দীর্ঘদিন ধরে আমার মেয়েকে উত্যক্ত করে আসছিল। প্রথমে ভয়ে প্রতিবাদ করতে পারেনি।

পরে উত্যক্তের মাত্রা বাড়ায় মেয়ে স্কুলে যাওয়া বন্ধ করে দেয়। ঘটনা জানানো হলেও তুহিনের পরিবার কোনো ব্যবস্থা নেয়নি।’ তিনি ছেলে জাহিদুলকে মারধরের বিচার দাবি করেন।

জাহিদুলের বাবা মাজেদ ঢালী বলেন, ‘আমার ছেলেকে মধ্যযুগীয় কায়দায় নির্যাতনের পরও থেমে থাকেনি চক্রটি। থানায় জানালে মেয়েকে এসিডে ঝলসে দেওয়া ও ছেলেকে হত্যার হুমকি দেয়।’

বিষয়ে জানতে অভিযুক্তদের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তাদের পাওয়া যায়নি। তুহিনের বাবা মো বেল্লাল হোসেন বলেন, ‘ঘটনাটি আমার জানা নেই। তুহিনও এখন বাড়িতে নেই। পরে বিস্তারিত জেনে বলতে পারব।’

চরফ্যাশন থানার ওসি মো. মিজানুর রহমান হাওলাদার বলেন, ‘ঘটনাটি আমরা শুনেছি। হাসপাতালে পুলিশ পাঠিয়ে যাচাই করা হয়েছে।

তবে এখনও ভুক্তভোগী পরিবারের পক্ষ থেকে কোনো লিখিত অভিযোগ পাওয়া যায়নি। অভিযোগ পেলে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

নিউজটি শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এ জাতীয় আরো খবর..
© All rights reserved © 2021 SomoyerKonthodhoni
Theme Dwonload From ThemesBazar.Com