পাহাড়ি এলাকায় গড়ে ওঠা সশস্ত্র সংগঠন কুকি-চিন ন্যাশনাল ফ্রন্টের (কেএনএফ) ৭ দফা নিয়ে সংগঠনটির সাথে শান্তি কমিটির সমঝোতা চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়েছে।
মঙ্গলবার (৫ মার্চ) এ বিষয়ে দ্বিতীয় দফা বৈঠকে চুক্তিটি স্বাক্ষরিত হয়। এ সাত দফার মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো- কেএনএফের বিরুদ্ধে দায়ের করা মামলা প্রত্যাহার, নতুন করে সঙ্ঘাতে না জড়ানো ও কেএনএফ সদস্যদের পুনর্বাসন ও সহায়তা।
এদিন সকাল সাড়ে ১০টা থেকে বান্দরবানের রুমা উপজেলার ব্যাথেল পাড়ায় সাড়ে তিন ঘণ্টা ধরে চলে এ বৈঠক।
আগামীতে আরো বেশ কয়েক দফা বৈঠকের মাধ্যমে পুরোপুরি শান্তি প্রক্রিয়া সম্পন্ন হবে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা।
বৈঠকে ১৪ সদস্যের শান্তি প্রতিষ্ঠা কমিটির নেতৃত্ব দেন কমিটির সভাপতি ও বান্দরবান পার্বত্য জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ক্যশৈহ্লা। বৈঠকে জেলা প্রশাসন পুলিশ ও নিরাপত্তা বাহিনীর কর্মকর্তাসহ অন্যরা উপস্থিত ছিলেন।
অন্যদিকে কেএনএফের আট সদস্যের নেতৃত্ব দেন সংগঠনটির কেন্দ্রীয় কমিটির সাধারণ সম্পাদক লালজংময় বম ওরফে ব্রিগেডিয়ার মুইয়া।
এর আগে, গত বছরের ৫ নভেম্বর প্রথম সরাসরি বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়েছিল মুনলাই পাড়ায়। ওই বৈঠকে শান্তি প্রতিষ্ঠায় নতুন করে সঙ্ঘাতে না জড়ানোসহ উভয়পক্ষের মধ্যে ছয় দফা নিয়ে একটি সমঝোতা চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়েছিল।
দ্বিতীয় দফা বৈঠকে এলাকায় বিভিন্ন জাতি গোষ্ঠীর মধ্যে শান্তি প্রতিষ্ঠা ও কেএনএফ সদস্যদের স্বাভাবিক জীবনে ফিরিয়ে আনাসহ আরো বিভিন্ন বিষয় নিয়ে আলোচনা হয়েছে বলে জানিয়েছেন শান্তি প্রতিষ্ঠা কমিটির নেতারা।
২০২১ সালে নতুন সশস্ত্র সংগঠন কুকি-চিন ন্যাশনাল ফ্রন্ট (কেএনএফ) বান্দরবান-রাঙ্গামাটি সীমান্তে একটি পাড়ায় হামলার মধ্যে দিয়ে আত্মপ্রকাশ করে। পরে নিরাপত্তা বাহিনীর সাথে সংগঠনটির সংঘর্ষে পাঁচ সেনা সদস্যসহ কমপক্ষে ২৭ জন নিহত হয়। কেএনএফের ১৭ জনকে আটক করা হয়। এছাড়া নতুন উগ্রবাদী সংগঠন জামাতুল আনসার ফিল হিন্দাল শারক্বীয়ার সদস্যদের প্রশিক্ষণ দেয়ারও অভিযোগ ওঠে কুকি-চিনের বিরুদ্ধে। পাহাড়ে সঙ্ঘাত থামাতে গত বছরের জুন মাসে গঠন করা হয় শান্তি প্রতিষ্ঠা কমিটি।
শান্তি কমিটির সভাপতি ও বান্দরবান জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ক্যশৈহ্লা জানান, সৌহার্দ্য ও শান্তিপূর্ণ পরিবেশে আলোচনা হয়েছে। কেএনএফ শান্তি প্রতিষ্ঠায় আন্তরিক। এলাকায় শান্তি ফিরিয়ে আনতে বিভিন্ন বিষয় নিয়ে আলোচনা হয়েছে।
আগামীকালও (বুধবার) বৈঠক হবে বলে তিনি জানান।
কেএনএফের কেন্দ্রীয় কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক লালসাংলম বম জানান, এক দিনেই শান্তি প্রক্রিয়া আসলে সম্ভব নয়। পর্যায়ক্রমে আলোচনার মাধ্যমে এলাকায় শান্তি ফিরে আসবে বলে আশা করা হচ্ছে। তবে একটি মহল তাদের বিরুদ্ধে চাঁদাবাজির কথা বলে তাদেরকে ফাঁসানোর চেষ্টা করছে।