ভারত ও যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিরক্ষা ও পররাষ্ট্রমন্ত্রীদের মধ্যে দ্বিপক্ষীয় বৈঠকে বাংলাদেশ ও কানাডা প্রসঙ্গ উঠে এসেছে। বৈঠকে বাংলাদেশ নিয়ে ভারতের চিন্তাভাবনা যুক্তরাষ্ট্রকে জানানো হয়। পাশাপাশি, কানাডায় খালিস্তানপন্থীদের তৎপরতা নিয়ে ভারতের উদ্বেগ প্রকাশ করা হয়।
বৈঠকে ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর ও প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিং যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিঙ্কেন ও প্রতিরক্ষামন্ত্রী লয়েড অস্টিনের সঙ্গে আলোচনা করেন। বৈঠকের পর ভারতের পররাষ্ট্রসচিব বিনয় কোয়াত্রা সাংবাদিকদের সঙ্গে বৈঠকের বিষয়বস্তু নিয়ে কথা বলেন।
বাংলাদেশ প্রসঙ্গ
বাংলাদেশের আসন্ন নির্বাচন নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের আগ্রহ ও চাপের বিষয়ে ভারতের অবস্থান পরিষ্কার করে দেওয়া হয় বৈঠকে। ভারতের পররাষ্ট্রসচিব বলেন, বাংলাদেশ একটি স্বাধীন দেশ এবং সে দেশের উন্নয়ন ও নির্বাচন কেমন হবে তা সে দেশের জনগণই নির্ধারণ করবে। ভারত বাংলাদেশের গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ার প্রতি শ্রদ্ধাশীল এবং সে দেশের স্থিতিশীলতা ও সমৃদ্ধি নিশ্চিত করতে ভারত সহায়তা করবে।
কানাডা প্রসঙ্গ
কানাডায় খালিস্তানপন্থীদের তৎপরতা নিয়ে ভারত উদ্বিগ্ন। বৈঠকে ভারতের এই উদ্বেগ যুক্তরাষ্ট্রকে জানানো হয়। ভারতের পররাষ্ট্রসচিব বলেন, কানাডায় সম্প্রতি ভারতবিরোধী একটি ভিডিও ভাইরাল হয়েছে। এটি ভারতের নিরাপত্তার জন্য হুমকি। ভারত কানাডা সরকারকে খালিস্তানপন্থীদের তৎপরতা বন্ধে পদক্ষেপ নিতে আহ্বান জানিয়েছে।
বৈঠকের মূল বিষয়
বৈঠকের মূল বিষয় ছিল দক্ষিণ এশিয়া ও আন্তর্জাতিক পরিস্থিতি। বৈঠকে ভারত ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে সামরিক সহযোগিতা, অর্থনৈতিক সহযোগিতা ও জলবায়ু পরিবর্তন বিষয়েও আলোচনা হয়।
ভারত ও যুক্তরাষ্ট্রের অবস্থান
ভারতের অবস্থান হলো, বাংলাদেশের উন্নয়ন ও নির্বাচন সে দেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়। বাংলাদেশের জনগণই তা ঠিক করবেন। ভারত বাংলাদেশকে স্থিতিশীল, শান্তিপূর্ণ ও সমৃদ্ধিশালী করে তুলতে সে দেশের দৃষ্টিভঙ্গিকে বরাবর সমর্থন করে আসছে। সেই সমর্থন অব্যাহত থাকবে।
ভারতের যুক্তি হলো, বাংলাদেশের নির্বাচনে যুক্তরাষ্ট্রের হস্তক্ষেপ আঞ্চলিক স্থিতিশীলতা নষ্ট করতে পারে। কারণ, রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা নষ্ট হলে মৌলবাদী শক্তি মাথাচাড়া দেবে। দক্ষিণ এশিয়ায় চীনের প্রভাবও মাত্রাতিরিক্তভাবে বেড়ে যাবে, যা ভারতের পাশাপাশি যুক্তরাষ্ট্রের পক্ষেও বিপজ্জনক হয়ে ওঠবে।
অপরদিকে যুক্তরাষ্ট্রের অবস্থান হলো, বাংলাদেশের নির্বাচন অবাধ, সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ হওয়া জরুরি। যুক্তরাষ্ট্র চায়, আসন্ন জাতীয় নির্বাচন সবার জন্য অংশগ্রহণমূলক হোক।
যুক্তরাষ্ট্রের যুক্তি হলো, বাংলাদেশের নির্বাচনে সকল রাজনৈতিক দলের অংশগ্রহণ নিশ্চিত হলেই তা অবাধ, সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ হবে। এর ফলে বাংলাদেশের গণতন্ত্রের অগ্রগতি হবে এবং দেশটিতে স্থিতিশীলতা বজায় থাকবে।