আওয়ামী যুবলীগের চেয়ারম্যান শেখ ফজলে শামস্ পরশ বলেছেন, ৭৫-এর ১৫ই আগস্টের হত্যাকাণ্ডের মাস্টারমাইন্ড, অবৈধভাবে ক্ষমতা দখলকারী জিয়াউর রহমানের মরণোত্তর বিচারের লক্ষ্যে একটা জাতীয় তদন্ত কমিশন গঠনের মাধ্যমে ঐ ন্যাক্কারজনক হত্যাকাণ্ডের মূলহোতা ও ষড়যন্ত্রকারীদের মুখোস উন্মোচন করতে হবে। এই জাতীয় কমিশনই হবে জিয়ার মরণোত্তর বিচারের সর্বপ্রথম ধাপ এবং প্রারম্ভিক পদক্ষেপ। তাই এই কমিশন গঠন করা এখন অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ এবং এই প্রজন্মের সময়ের দাবি।
শনিবার(২৬ আগস্ট)বঙ্গবন্ধু এভিনিউয়ে ঢাকা মহানগর যুবলীগ দক্ষিণের উদ্যোগে “১৫ আগস্ট ও ২১ আগস্টে শহীদদের স্মরণে” আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। উক্ত আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে এ কথা বলেন তিনি।
শেখ ফজলে শামস্ পরশ বলেন, এই আগস্ট মাসে বাংলার ইতিহাসে সবচেয়ে নিকৃষ্ট এবং জঘণ্যতম হত্যাকাণ্ড চালানো হয়েছিল, হাজার বছরের শ্রেষ্ঠ বাঙালি, বাংলার অবিসংবাদিত নেতা, জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব ও তাঁর পরিবারের সদস্যদের উপর; চালানো হয়েছিল পৃথিবীর সবচেয়ে ন্যাক্কারজনক হত্যাকাণ্ড । এই হত্যাকাণ্ড ছিল সুদূরপ্রসারী এক পরিকল্পিত হত্যাকাণ্ড। এই হত্যাকাণ্ডের মাধ্যমে আমাদের স্বাধীনতার সূর্য সম্পূর্ণরূপে উদিত হওয়ার পূর্বেই আকষ্মিকভাবে অস্তমিত করা হয়েছিল। নস্যাৎ করা হয়েছিল বাঙালির দুই শতাধিক বছরের স্বাধীনতার আকাংক্ষা। এই হত্যাকাণ্ডের মাধ্যমে স্বাধীনতা যুদ্ধে পরাজিত শত্রুরা প্রতিশোধ নিয়েছিল বাঙালি জাতির উপর।
তিনি আরও বলেন, বঙ্গবন্ধুর হত্যা কোন সাধারণ হত্যাকাণ্ড না। এই মহান নেতাকে হত্যা করা হয়েছিল একাধিক অশুভ উদ্দেশ্য সাধণের জন্য। প্রথমত, অভ্যন্তরীণ এবং আন্তর্জাতিক ষড়যন্ত্রকারীরা ১৯৭১ সালের যুদ্ধে তাদের পরাজয় মেনে নিতে পারেনি; দ্বিতীয়ত, তারা বাংলাদেশকে স্বাধীন ধর্মনিরপেক্ষ রাষ্ট্রে পরিণত করা মেনে নিতে পারেনি; তারা পাকিস্তানের ধর্মভিত্তিক সংবিধান প্রত্যাখান করে বাংলাদেশের জন্য একটি ধর্মনিরপেক্ষ সংবিধান প্রণয়ন মেনে নিতে পারেনি।
তিনি বলেন, দীর্ঘ ৩৫ বছর পর বঙ্গবন্ধুর হত্যাকারীদের বিচার হয়। বঙ্গবন্ধুর হত্যাকারীদের বিচারের কাঠগড়ায় দাঁড় করিয়ে নিয়মতান্ত্রিক বিচারিক প্রক্রিয়ার মাধ্যমে ২০১০ সালে ঘাতকদের কয়েকজনের ফাঁসির রায় কার্যকর করার মধ্য দিয়ে বাঙালি জাতিকে কলঙ্কমুক্ত করেন জননেত্রী শেখ হাসিনা। কিন্তু অভিযুক্তদের কেউ কেউ বিভিন্ন দেশে পালিয়ে থাকায় বিচারের রায় আংশিক কার্যকর হয়। তাই আজকে যুবসমাজের দাবি বঙ্গবন্ধু হত্যার পলাতক খুনিদের দেশে ফিরিয়ে এনে বিচারের মুখোমুখি করতে হবে। যুবলীগ আরও দাবি করছে যে ১৫ই আগস্টের হত্যাকাণ্ডের মাস্টারমাইন্ড, অবৈধভাবে ক্ষমতা দখলকারী জিয়াউর রহমানের মরণোত্তর বিচারের লক্ষ্যে একটা জাতীয় তদন্ত কমিশন গঠনের মাধ্যমে ঐ ন্যাক্কারজনক হত্যাকাণ্ডের মূলহোতা ও ষড়যন্ত্রকারীদের মুখোস উন্মোচন করতে হবে। এই জাতীয় কমিশনই হবে জিয়ার মরণোত্তর বিচারের সর্বপ্রথম ধাপ এবং প্রারম্ভিক পদক্ষেপ। তাই এই কমিশন গঠন করা এখন অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ এবং এই প্রজন্মের সময়ের দাবি। যতদিন তদন্ত কমিশনের ফলাফল না বেড় হবে, খুনিরা পদ্মার অন্তরালে থেকে যাবে এবং এই বাংলাদেশে হত্যার রাজনীতির ষড়যন্ত্র অব্যাহত থাকবে।
তিনি আরও বলেন, ২১শে আগস্ট এদেশের রাজনৈতিক শিষ্টাচার ও সংস্কৃতি ধ্বংসের পিছনে এককভাবে দায়ী। কি বর্বর এবং অসহিষ্ণু ওদের রাজনৈতিক মনোবৃত্তি যে বিরোধী মতামত তো দুরের কথা, পুরো দলটাকেই ওরা সাংগঠনিকভাবে নির্মূল করে দিতে চেয়েছিল। তিনি আরও বলেন, আজকেও বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান, সাজাপ্রাপ্ত পলাতক আসামী, তারেক জিয়া বিদেশ থেকে হুকুম দিয়ে বিএনপি নেতা-কর্মীদেরকে নৈরাজ্যের দিকে ঠেলে দিতে চাচ্ছে। তারেক জিয়ার মত একজন কাপুরুষের নেতৃত্বের কারণে বিএনপি আজ সন্ত্রাসী সংগঠন হিসাবে ইতিহাসের আস্তাকুরে নিক্ষেপ হতে চলেছে। তিনি আরও বলেন, উন্নয়নশীল বাংলার যুবসমাজের দাবি, দুর্নীতি ও ২১শে আগস্ট হত্যাকাণ্ডের যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত আসামী, খুনি জিয়াউর রহমানের কু-পুত্র তারেক রহমানকে অনতিবিলম্বে, কান ধরে দেশে ফিরিয়ে এনে রায় কার্যকর করতে হবে এই বাংলার মাটিতে। তাহলেই এই সকল হত্যার রাজনীতি থেকে এই দেশ চিরতরে মুক্তি পাবে।