বরগুনায় স্ত্রী মালতি বেগমকে হত্যার দায়ে বিচারিক আদালতে মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আবদুল জলিল নামে এক ব্যক্তির সাজা পরিবর্তন করে যাবজ্জীবন দণ্ড দিয়েছেন হাইকোর্ট।
মৃত্যুদণ্ডাদেশ অনুমোদনের জন্য ডেথ রেফারেন্স এবং আসামির আপিল শুনানি শেষে বিচারপতি সহিদুল করিম ও বিচারপতি মো: মোস্তাফিজুর রহমান সমন্বয়ে গঠিত একটি হাইকোর্ট ডিভিশন বেঞ্চ রোববার এ রায় দেন।
আদালতে রাষ্ট্রপক্ষে শুনানি করেন ডেপুটি এটর্নি জেনারেল বশির আহমেদ। আসামিপক্ষে ছিলেন- আইনজীবী এম মাসুদ রানা, সাথে ছিলেন আইনজীবী নাফিউল মাজিদ ও আইনজীবী উম্মে ছালমা।
অ্যাডভোকেট এম মাসুদ রানা সাংবাদিকদের জানান, মামলায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি ছিল ত্রুটিপূর্ণ। এছাড়া সাক্ষীদের বক্তব্য পরস্পরবিরোধী ছিল। শুনানিতে এসব বক্তব্য উপস্থাপন করেছি। রায়ে আদালত মৃত্যুদণ্ডাদেশ দণ্ড কমিয়ে যাবজ্জীবন দণ্ড দিয়েছেন। পাশাপাশি ৫০ হাজার টাকা জরিমানা করে অনাদায়ে ছয় মাসের কারাদণ্ড দিয়েছেন।
দণ্ডাদেশপ্রাপ্ত আবদুল জলিল জেলার পাথরঘাটা উপজেলার বাইনচটকি গ্রামের নয়া মিয়ার ছেলে।
১৯৯৮ সালে আবদুল জলিল ও ফরিদপুরের মালতি বেগমের বিয়ে হয়। পারিবারিক কলহের জের ধরে ২০০৩ সালের ২৮ আগস্ট মালতিকে পিটিয়ে হত্যা করা হয়। এরপর তার লাশ বস্তায় ভরে বাড়ির পেছনে পোড়াবাড়ির বাগানে পুঁতে রাখা হয়। পরদিন মালতির লাশ শেয়াল-কুকুরকে খেতে দেখে প্রতিবেশীরা কাকচিড়া পুলিশ ফাঁড়িতে খবর দেন। পরে পুলিশ গিয়ে লাশ উদ্ধার করে।
এ ঘটনায় কাকচিড়া পুলিশ ফাঁড়ির উপপরিদর্শক (এসআই) মো: একরামুল মালতির স্বামী, দুই দেবর, ননদ ও শাশুড়ির বিরুদ্ধে মামলা করেন।
মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ২০০৪ সালের ৮ এপ্রিল সাতজনের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করেন। বিচার শেষে ছয়জনকে খালাস দিয়ে মালতির স্বামী জলিলকে ২০১৭ সালের ৯ মে মৃত্যুদণ্ড দেন বরগুনার অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ আদালত। এরপর মৃত্যুদণ্ডাদেশ অনুমোদনের জন্য ডেথ রেফারেন্স হাইকোর্টে পাঠানো হয়। পাশাপাশি আসামি জেল আপিল ও ফৌজদারি আপিল করেন।
সূত্র : বাসস