সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সম্পাদকের কক্ষে হামলা ও ভাঙচুরের মামলায় সুপ্রিম কোর্টের ২৫ আইনজীবীকে আগাম জামিন দিয়েছেন হাইকোর্ট। মামলায় পুলিশ প্রতিবেদন দেওয়া পর্যন্ত তারা জামিনে থাকবেন বলে জানিয়েছেন আইনজীবীরা।
তাদের মধ্যে আছেন বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব ও সমিতির সাবেক সম্পাদক এম মাহবুব উদ্দিন খোকন, সমিতির সাবেক সম্পাদক রুহুল কুদ্দুস কাজল, জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরামের সুপ্রিম কোর্ট ইউনিটের সাধারণ সম্পাদক গাজী কামরুল ইসলাম সজল, বিএনপির আইন বিষয়ক সম্পাদক কায়সার কামাল।
আজ রবিবার বিচারপতি মো. সেলিম ও বিচারপতি মো. রিয়াজ উদ্দিন খানের হাইকোর্ট বেঞ্চ থেকে তাদের আগাম জামিন হয়। জামিন আবেদনের পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী এম আমীর-উল ইসলাম, এ জে মোহাম্মদ আলী।
২৫ আইনজীবীর আগাম জামিনের পর সুপ্রিম কোর্টের মর্যাদা রক্ষায় সব আইনজীবীকে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বান জানান ব্যারিস্টার এম আমীর-উল ইসলাম। তিনি বলেন, ‘বারের কর্মচারী দিয়ে আইনজীবীদের বিরুদ্ধে মামলা করানো হয়েছে।
এটা খুবই দুর্ভাগ্যজনক। এটার কোনো প্রয়োজন ছিল না।’
গত ১৩ মে দুপুরে হামলা-ভাঙচুর, হাতাহাতির পর রাত সোয়া ১১টায় শাহবাগ থানায় ২৫ জনের নাম উল্লেখ করে মামলা করেন সমিতির সহকারী সুপারিনটেনডেন্ট মো. রফিক উল্লাহ। মামলায় ২৫ জনের নাম উল্লেখের পাশাপাশি অজ্ঞাতপরিচয় আরো ১৫০ জনকে আসামি করা হয়।
তাদের বিরুদ্ধে দণ্ডবিধির ৩২৩, ৩২৫, ৩০৭, ৩৭৯, ৩৫৪, ৪২৭, ১১৪ ধারায় হত্যার উদ্দেশ্যে মারপিট, গুরুতর আঘাত, শ্লীলতাহানি ও চুরির অভিযোগ আনা হয় মামলায়।
গত ১৩ মে দুপুরে সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির নির্বাচন ও ভোট নিয়ে ফের ধাওয়া-পাল্টাধাওয়া, হামলা-ভাঙচুরের ঘটনা ঘটে। দুই মাসেরও কম সময়ে এ নিয়ে তিনবার ঘটল এমন ঘটনা।
গত ১৫-১৬ মার্চ অনুষ্ঠিত বিতর্কিত নির্বাচনের পর নতুন করে নির্বাচনের দাবিতে প্রায় প্রতিদিন কর্মসূচি পালন করছেন বিএনপিপন্থী আইনজীবীরা। বিক্ষোভ সমাবেশ, মিছিল করছে তারা।
তবে এর পাল্টা কর্মসূচিও পালন করছেন আওয়ামীপন্থী আইনজীবীরা। এতে কয়েক দিন পরপরই উত্তপ্ত হয়ে উঠছে সুপ্রিম কোর্ট অঙ্গন।
নির্বাচনের পর গত ৬ এপ্রিল সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির ইফতার আয়োজনে ভাঙচুর, হাতাহাতি, ধাওয়া-পাল্টাধাওয়ার ঘটনা ঘটে। ইফতার আয়োজনের ব্যানার, চেয়ার, টেবিল ভাঙচুর করেন বিএনপিপন্থী আইনজীবীরা। এ ঘটনায় গত ৯ এপ্রিল সমিতির প্রশাসনিক কর্মকর্তা রবিউল হাসান শাহবাগ থানায় এ মামলা করেন। পরে ১০ এপ্রিল এ মামলায় হাইকোর্ট থেকে আগাম জামিন নেন বিএনপিপন্থী ২৪ আইনজীবী।
এরপর গত ৩ মে ফের দুই পক্ষের মধ্যে ধাওয়া-পাল্টাধাওয়া, হাতাহাতি, ভাঙচুরের ঘটনা ঘটে। এতে আহত হন আতাউর রহমান নামের এক বয়োজ্যেষ্ঠ আইনজীবী। এ ঘটনায়ও মামলা হয়। এ মামলায়ও হাইকোর্ট থেকে আগাম জামিন নেন আসামিরা।