ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের (ইবি) নবীন শিক্ষার্থী ফুলপরী খাতুনকে নির্যাতন ও বিবস্ত্র ভিডিও ধারণের ঘটনায় জড়িত শাখা ছাত্রলীগের পাঁচ নেত্রী-কর্মীকে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বহিষ্কারের নির্দেশনা দিয়েছে হাইকোর্ট।
বুধবার (১ মার্চ) হাইকোর্ট নির্দেশ দেয় হাইকোর্ট। একইদিনে অভিযুক্তদের ছাত্রলীগ থেকেও বহিষ্কার করেছে দলটির কেন্দ্রীয় সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক। এর আগে তাদেরকে হল থেকে বহিষ্কার করেছে শেখ হাসিনা হল প্রশাসন। এছাড়া শেখ হাসিনা হলের প্রভোস্টের দায়িত্ব প্রত্যাহার করেছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।
বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রো-ভিসি অধ্যাপক ড. মাহবুবুর রহমান বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
তিনি বলেন, ‘হাইকোর্টের নির্দেশনার লিখিত নির্দেশনা এখনো আমাদের কাছে আসেনি তবে ডেপুটি এ্যাটর্নি জেনারেল তুষার কান্তি রায় আমাদেরকে তাৎক্ষনিক কিছু নির্দেশনা দিয়েছেন। আমাদেরকে হল প্রোভোস্টকে প্রত্যাহার করতে, এছাড়া ভুক্তভোগী ছাত্রীকে নিরাপত্তা দিতে ও তার ইচ্ছামত সিটে আবাসিকতা নিশ্চিত করতে ও অভিযুক্ত ছাত্রীদের বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বহিষ্কার করতে বলেছেন। আমরা প্রভোস্টকে প্রত্যাহার করে সিনিয়র হাউজ টিউটর অধ্যাপক ড. আহসানুল হককে সাময়িকভাবে হল পরিচালনা করতে বলেছি। ফুলপরিকে নিরাপত্তার জন্য এবং হলে সিট নিশ্চিতের জন্য ছাত্রউপদেষ্টাকে নির্দেশনা দিয়েছি। আর অভিযুক্তদের বহিষ্কারের বিষয়ে আগামী শনিবার ভিসি স্যারের উপস্তিতিতে বি্বিবিদ্যালয়ের শৃঙ্খলা কমিটির মিটিংয়ে বাকি সিদ্ধান্ত নেয়া হবে।’
ছাত্রলীগ থেকে সাময়িক বহিস্কৃতরা ছাত্রীরা হলেন শাখা ছাত্রলীগ সহ-সভাপতি পরিসংখ্যান বিভাগের সানজিদা চৌধুরী অন্তরা, ছাত্রলীগ কর্মী ফিন্যান্স ও ব্যাংকিং বিভাগের তাবাসসুম ইসলাম, আইন বিভাগের ইসরাত জাহান মীম, ফাইন আর্টস বিভাগের হালিমা খাতুন উর্মী ও ফিন্যান্স অ্যান্ড ব্যাংকিং বিভাগের মোয়াবিয়া। অন্তরা ২০১৭-১৮ শিক্ষাবর্ষের ও বাকিরা ২০২০-২১ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী।
এর আগে ফুলপরীকে নির্যাতনের ঘটনায় অভিযুক্ত পাঁচ ছাত্রীর আবাসিকতা বাতিল করে দেশরত্ন শেখ হাসিনা হল কর্তৃপক্ষ। তাদের সবাইকে আগামী ১ মার্চের মধ্যে হল ছাড়ার নির্দেশ দেয়া হয়েছে।
উল্লেখ্য, গত ১২ ফেব্রুয়ারি বিশ্ববিদ্যালয়ের শেখ হাসিনা হলে ফিন্যান্স অ্যান্ড ব্যাংকিং বিভাগের ২০২১-২২ শিক্ষাবর্ষের ছাত্রীকে ফুলপরি খাতুনকে রাতভর নির্যাতন ও বিবস্ত্র করে ভিডিও ধারণের অভিযোগ উঠে অন্তরা, তাবাচ্ছুম, মাওয়াবিয়া, মীম ও উর্মিসহ সাত থেকে আটজনের বিরুদ্ধে। এ ঘটনা তদন্তে পৃথক চারটি কমিটি গঠন করে কুষ্টিয়া জেলা প্রশাসন, বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন, হল প্রশাসন ও শাখা ছাত্রলীগ। তদন্তে ওই রাতে নির্যাতনের প্রমাণ পেয়েছে চার তদন্ত কমিটিই। তাদের তদন্ত প্রতিবেদনের আলোকে ব্যবস্থা নিচ্ছেন কমিটি গঠনকারী চার কর্তৃপক্ষ।