কক্সবাজারের উখিয়ায় বালুখালীতে আয়াত উল্লাহ (৪০) ও ইয়াছিন (৩০) নামে দু’রোহিঙ্গাকে গুলি করে হত্যা করেছে দুর্বৃত্তরা। তারা উভয়ই ১৭ নম্বর রোহিঙ্গা ক্যাম্পের বাসিন্দা।
বৃহস্পতিবার ভোরে উপজেলার বালুখালী ইরানী পাহাড় ১৭ নম্বর রোহিঙ্গা ক্যাম্পে এ ঘটনা ঘটে।
উখিয়া থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শেখ মোহাম্মদ আলী বিষয়টি নিশ্চিত করেন।
তিনি জানান, রোহিঙ্গা ক্যাম্পে দুর্বৃত্তরা এসে কয়েক রাউন্ড গুলি ছোঁড়ে। এতে একজন ঘটনাস্থলেই নিহত হন। আরেকজন হাসপাতালে নেয়ার পথে মারা যান। বিচ্ছিন্ন সন্ত্রাসী গ্রুপের সদস্যরা এ হত্যাকাণ্ড ঘটিয়ে থাকতে পারে।
১৪-এপিবিএনের অধিনায়ক সৈয়দ হারুন-উর রশীদ বলেন, ‘দুষ্কৃতকারীরা আধিপত্য বিস্তার করার জন্য এ হত্যাকাণ্ড চালিয়েছে। এ সব তাদের অভ্যন্তরীণ কোন্দলে হয়েছে। মাদকপাচার ও অস্ত্রপাচারে বাঁধা হওয়ায় সাধারণ রোহিঙ্গাদের টার্গেট করে হত্যা করছে দুষ্কৃতকারীরা। ঘটনাস্থলে এপিবিএনের একটি টিম রয়েছে। ক্যাম্পে নজরদারি আরো বাড়ানো হয়েছে বলেও জানান তিনি।’
ক্যাম্প-১০-এর দায়িত্বে থাকা ৮-আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়নের সহকারী পুলিশ সুপার মোহাম্মদ ফারুক আহমেদ বলেন, ‘বুধবার দিবাগত রাত সাড়ে ৩টার দিকে বালুখালীর ক্যাম্প-১০-এর ১৬-এফ ব্লকের ঘর থেকে ডেকে জসিমকে পাশের রাস্তায় নিয়ে যায় কয়েকজন দুর্বৃত্ত। এরপর তার ওপর গুলি চালিয়ে হত্যা করে পালিয়ে যায়। গুলিবিদ্ধ অবস্থায় জসিমকে উদ্ধার করে কুতুপালং আশ্রয়শিবিরের এমএসএফ হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। কিন্তু কী কারণে তাকে হত্যা করা হয়েছে, তা জানা যায়নি। রহস্য উদ্ঘাটনে কাজ করছে পুলিশ।’
নিহতের পরিবার ও পুলিশ সূত্রে জানা যায়, পাঁচ-ছয়জনের একটি রোহিঙ্গা দল জসিমের ঘরে যায় এবং জরুরি কথা বলে ঘর থেকে ডেকে পাশের সড়কে নিয়ে যায়। এরপর তিনটি গুলির শব্দ শোনা যায়। পরে আশপাশের রোহিঙ্গারা ঘটনাস্থলে গিয়ে জসিমকে গুলিবিদ্ধ অবস্থায় মাটিতে পড়ে থাকতে দেখেন। এ সময় তাকে দ্রুত উদ্ধার করে হাসপাতালে নেয়া হয়।
উখিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শেখ মোহাম্মদ আলী বলেন, ‘সকালে পুলিশ এমএসএফ হাসপাতাল থেকে লাশটি উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য কক্সবাজার সদর হাসপাতালের মর্গে পাঠিয়েছে। এ ঘটনায় মামলা প্রক্রিয়াধীন।’
উল্লেখ্য, গত দু’দিনে চার রোহিঙ্গা দুর্বৃত্তদের হাতে নিহত হয়েছেন। এ ছাড়া চলতি মাসে রোহিঙ্গা সন্ত্রাসী ও মিয়ানমারের সশস্ত্র গোষ্ঠী আরাকান স্যালভেশন আর্মির (আরসা) হামলায় কয়েকটি আশ্রয়শিবিরে এক কন্যাশিশুসহ মোট ছয়জন রোহিঙ্গা নিহত হয়েছেন।