কর্মস্থলে অনিয়মের সঙ্গে জড়িত থাকলে বা সরকারি দায়িত্ব পালনে অবহেলা-অনীহা দেখালে এসিল্যান্ডদের (সহকারী কমিশনার-ভূমি) বিরুদ্ধে শাস্তি হিসেবে বিভাগীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এমন নিয়ম রেখে ‘সহকারী কমিশনারদের (ভূমি) পদায়ন নীতিমালা, ২০২৫’ করেছে ভূমি মন্ত্রণালয়। গত সোমবার মন্ত্রণালয় নীতিমালার পরিপত্র জারি করে।
নীতিমালায় বলা হয়েছে, সহকারী কমিশনারের (ভূমি) কর্মকাল সাধারণত দুই বছর হবে। সহকারী কমিশনার (ভূমি) হিসেবে প্রথম পদায়নে জেলা সদর ও রাজস্ব সার্কেলের বাইরে এই নীতিমালায় উল্লেখ করা ‘খ’ ও ‘গ’ শ্রেণির উপজেলায় পদায়ন করা যাবে।
নিজ জেলা ও স্বামী বা স্ত্রীর জেলায় সহকারী কমিশনার (ভূমি) পদে পদায়ন করা যাবে না জানিয়ে নীতিমালায় বলা হয়েছে, স্বামী বা স্ত্রী সহকারী কমিশনার (ভূমি) হিসেবে ন্যস্ত হলে ওই কর্মকর্তার স্ত্রী বা স্বামী প্রজাতন্ত্রের কর্মকর্তা হিসেবে নিয়োজিত থাকলে সরকারের সিদ্ধান্ত অনুসারে একই বিভাগে এবং সম্ভব হলে একই জেলায় পদায়ন করা যাবে।
নীতিমালায় আরও বলা হয়েছে, কর্মস্থলে বিভিন্ন রকম অনিয়ম বা অনৈতিকতার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট থাকা বা সরকারি দায়িত্ব পালনে অনীহা বা শৈথিল্য প্রদর্শন ইত্যাদি ক্ষেত্রে শাস্তিমূলক হিসেবে বিভাগীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
জনসম্পৃক্ততা বিবেচনা করে সব মহানগরীর রাজস্ব সার্কেল বা সহকারী কমিশনারের (ভূমি) শূন্য পদ পূরণ করতে হবে। অর্থনৈতিক অঞ্চল বা অর্থনৈতিকভাবে বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ, এমন অঞ্চল বা সব উপজেলা সদর বা পৌর এলাকাভুক্ত উপজেলায় সহকারী কমিশনার (ভূমি) পদায়নে অগ্রাধিকার দিতে হবে। এ ছাড়া উপজেলা বা সার্কেলের ভূমিসংক্রান্ত কাজের পরিমাণ, ব্যাপকতা, বহুমাত্রিকতা, জনসম্পৃক্ততা, ভূমি অধিগ্রহণ ও ভূমি হুকুমদখল, সায়রাত মহালসহ রাষ্ট্রীয় উন্নয়ন কাজ ইত্যাদি বিষয় বিবেচনা করে সহকারী কমিশনার (ভূমি) পদে পদায়ন/নিয়োগ/বদলির ক্ষেত্রে অগ্রাধিকার নির্ধারণ করতে হবে।
ইউনিয়নের সংখ্যা, জনসংখ্যার অনুপাত, গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনার অবস্থান ইত্যাদির অনুপাতে উপজেলার পদ অগ্রাধিকার ভিত্তিতে পূরণ করা হবে। অপেক্ষাকৃত দুর্গম, প্রাকৃতিক বা ভৌগোলিক কারণে অন্য উপজেলা থেকে বিচ্ছিন্ন, দূরবর্তী উপজেলার জনগণের সেবা পাওয়ার বিষয় বিবেচনা করে সহকারী কমিশনার (ভূমি) হিসেবে একক দায়িত্ব দেওয়া অর্থাৎ নিজ দায়িত্বের অতিরিক্ত দায়িত্ব প্রদান করা যাবে না।
নীতিমালায় আরও বলা হয়েছে, সহকারী কমিশনার (ভূমি) পদে এক বছর দায়িত্ব পালনের পর দক্ষতা, সততা, জনসেবার মানসিকতা ইত্যাদি যাচাই করে এই নীতিমালায় উল্লিখিত ‘ক’ শ্রেণির উপজেলা বা রাজস্ব সার্কেলে পদায়ন করা যাবে। সহকারী কমিশনার (ভূমি) হিসেবে ন্যস্ত করা কর্মকর্তাদের সার্ভে অ্যান্ড সেটেলমেন্ট প্রশিক্ষণ বাধ্যতামূলক করা হবে।
কোনো সহকারী কমিশনার (ভূমি) ‘গ’ শ্রেণির জেলা বা উপজেলায় কর্মরত থাকলে পরবর্তী সময়ে তিনি ‘ক’ ও ‘খ’ শ্রেণির জেলা বা উপজেলায় পদায়ন পাবেন। ‘খ’ শ্রেণির জেলা বা উপজেলায় কর্মরত থাকলে পরবর্তী সময়ে তিনি ‘ক’ ও ‘গ’ শ্রেণির জেলা বা উপজেলায় পদায়ন পাবেন। অন্যদিকে ‘ক’ শ্রেণির জেলা বা উপজেলায় কর্মরত থাকলে পরবর্তী সময়ে তিনি ‘খ’ ও ‘গ’ শ্রেণির জেলা বা উপজেলায় পদায়ন পাবেন বলে নীতিমালায় উল্লেখ করা হয়েছে।