ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজায় সর্বশেষ ইসরায়েলি হামলায় কমপক্ষে আরও ৭৮ ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। এ হত্যাযজ্ঞে গাজায় নিহতের মোট সংখ্যা ৫৮ হাজার ছাড়াল।
আজ মঙ্গলবার কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল জাজিরা এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে ।
ফিলিস্তিনের সরকারি সংবাদ সংস্থা ওয়াফার বরাত দিয়ে এই সংবাদমাধ্যমটির প্রতিবেদনে বলা হয়, গতকাল সোমবার দক্ষিণ গাজার রাফায় একটি ত্রাণ বিতরণকেন্দ্রের কাছে ইসরায়েলি হামলায় ত্রাণ নিতে আসা কমপক্ষে ৫ ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন।
এ হত্যাযজ্ঞের মধ্য দিয়ে ইসরায়েল ও যুক্তরাষ্ট্র-সমর্থিত গাজা হিউম্যানিটারিয়ান ফাউন্ডেশনের (জিএইচএফ) পরিচালিত ত্রাণকেন্দ্রের আশপাশে নিহত ফিলিস্তিনির সংখ্যা বেড়ে হলো ৮৩৮ জন।
এদিকে সোমবার দক্ষিণ গাজার খান ইউনুস শহরে বাস্তুচ্যুতদের এক শিবিরে ইসরায়েলি হামলায় ৯ জন নিহতসহ অনেকের আহত হওয়ার খবর পাওয়া যায়। একই দিনে গাজার বুরেইজ শরণার্থী শিবিরে এক বাণিজ্যিক ভবনে হামলায় প্রাণ হারিয়েছেন আরও ৪ জন।
আল জাজিরার স্থানীয় সংবাদদাতা তারেক আবু আযম জানিয়েছেন, উত্তর গাজা ও গাজা শহরেও হামলার মাত্রা বাড়িয়েছে ইসরায়েলি বাহিনী। এরই অংশ হিসেবে গাজা শহরের তুফাহ ও শুজাইয়া এলাকায় ব্যাপক বিমান হামলায় বহু বাসাবাড়ি ধ্বংস হয়ে গেছে।
অপরদিকে গাজা শহরের অভ্যন্তরে একটি ট্যাংক রকেট হামলায় ইসরায়েলি সেনাদের হতাহতের ঘটনা ঘটে। ইসরায়েলি সেনাবাহিনীর পক্ষ থেকে জানানো হয়, ওই হামলায় তাদের তিন সদস্য নিহত হয়েছেন।
সংবাদ সংস্থা ওয়াফা জানিয়েছে, সোমবার ইসরায়েলি হামলায় শুধুমাত্র গাজা শহরেই ২৪ ফিলিস্তিনি নিহত ও বহুসংখ্যক সাধারণ মানুষ আহত হয়েছেন।
এমন হত্যাযজ্ঞ পরিস্থিতিতেও মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প হোয়াইট হাউসে এক সংবাদ সম্মেলনে বলেন, ‘গাজা নিয়ে ভাল অগ্রগতি হয়েছে।’
এদিকে ফিলিস্তিনের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুসারে, ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর থেকে শুরু হওয়া ইসরায়েলি অভিযানে এখন পর্যন্ত নিহত হয়েছেন ৫৮ হাজারের বেশি মানুষ। এদের মধ্যে অর্ধেকের বেশি নারী ও শিশু। আহত হয়েছেন আরও প্রায় ১ লাখ ৪০ হাজার মানুষ।
প্রসঙ্গত, গত বছরের নভেম্বরে আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালত গাজায় যুদ্ধাপরাধ এবং মানবতাবিরোধী অপরাধের জন্য ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু এবং তার সাবেক প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইয়োভ গ্যালান্টের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেন।অবরুদ্ধ এই ভূখণ্ডে আগ্রাসনের জন্য আন্তর্জাতিক বিচার আদালতে গণহত্যার মামলার মুখোমুখিও হয়েছে ইসরায়েল। এ নিয়ে বিশ্বব্যাপী নিন্দার ঝড় বইলেও থেমে নেই ইসরায়েলি বর্বরতা।