এ. বি সিদ্দিক জেনারেল হাসপাতাল এন্ড ডায়াগনষ্টিক সেন্টার নামের বরিশালের গৌরনদী উপজেলা সদরের একটি স্বাস্থ্যসেবা প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে রোগীর ডায়াবেটিস রোগ নির্নয়ের ক্ষেত্রে ভ‚য়া রিপোর্ট প্রদানের অভিযোগ পাওয়া গেছে। এ ঘটনায় ওই প্রতিষ্ঠানটির বিরুদ্ধে আইনগত ব্যাবস্থা গ্রহন করার জন্য উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তার বরাবরে আবেদন করেছেন রোগীর সন্তান।
রোগীর স্বজনদের সূত্রে জানাগেছে, পার্শ^বর্তি আগৈলঝাড়া উপজেলার কুয়াতিয়ার পাড় গ্রামের চিত্তরঞ্জন মন্ডলের স্ত্রী সবিতা মন্ডল (৬৫) সম্প্রতি অসুস্থ্য হয়ে পড়েন। স্থানীয় চিকিৎকদের কাছ থেকে চিকিৎসা নিয়ে সুস্থ্য না হওয়ায় তার ছেলে ঘনশ্যাম মন্ডল তাকে নিয়ে গত ৭ মে গৌরনদী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে আসেন। এরপর নশ্যাম তার মাকে উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডাঃ মো. মনিরুজ্জামানকে দেখান। ওই স্বাস্থ্য কর্মকর্তা বিভিন্ন ডায়াগনষ্টিক পরীক্ষার জন্য রোগীকে গৌরনদী উপজেলা সদরের এ.বি সিদ্দিক জেনারেল হাসপাতাল এন্ড ডায়াগনষ্টিক সেন্টারে পাঠান। সেখানে পরীক্ষা-নীরিক্ষা শেষে ওই প্রতিষ্ঠানটি রিপোর্ট দেয় যে, রোগীর আরবিএস ১২.৭২ পয়েন্ট। রিপোর্ট দেখে চিকিৎসকের সন্দেহ হয়। তিনি ওই রোগীর আরবিএস টেষ্টের জন্য তাকে অন্যত্র পাঠান। রোগীর ছেলে ঘনশ্যাম মন্ডল তখন তার মাকে নিয়ে আগৈলঝাড়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ও গৈলা বাসস্ট্যান্ডের জননী ডায়াগনষ্টিক সেন্টারে আরবিএস পরীক্ষা করান। ভরা পেটে এবং গøুকোজ খাওানোর আগে ও পরে রোগীর ওই আরবিএস পরীক্ষা দুটি করানো হয়। ওই পরীক্ষা দুটির রিপোর্টে রোগীর আরবিএস লেভেল ৫.১ এবং ৬.৯ দেখানো হয়। ওই রিপোট দুটির দ্বারা চিকিৎসক নিশ্চিত হন যে রোগীর কোন ডায়াবেটিস নেই। এরপর চিকিৎক রোগীক সঠিক চিকিৎসা দেন। গত কয়েক দিনেই রোগী বেশ সুস্থ্য হয়ে উঠেছেন।
অপর দিকে ভ‚য়া ডায়াগনষ্টিক রিপোর্ট পেয়ে ক্ষুব্দ ঘনশ্যাম মন্ডল তার মায়ের ডায়াবেটিস রোগ নির্নয়ের ক্ষেত্রে ভ‚য়া রিপোর্টদাতা প্রতিষ্ঠানটির বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহনের জন্য গত ৮ মে গৌরনদী উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডাক্তার মো. মনিরুজ্জামান বরাবরে একটি আবেদন করেছেন।
ক্ষুব্দ ঘনশ্যাম মন্ডল বলেন, এ. বি সিদ্দিক জেনারেল হাসপাতাল এন্ড ডায়াগনষ্টিক সেন্টারের ভ‚য়া রিপোর্ট দেখে ডাক্তার যদি সন্দেহ পোষন করে আমার মাকে অন্যত্র টেষ্টে র জন্য না পাঠাতেন, তা হলে ভ‚ল চিকিৎসায় আমার মা মরে যেত। ডায়াগষ্টিক টেষ্টের নামে এ রকম জালিয়াতি মেনে নেয়া যায় না। এ জন্য আমি বিচার চেয়ে উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তার কাছে আবেদন করেছি। এখানে সঠিক বিচার না পেলে আমি আরো উপর মহলের স্মরনাপন্ন হব।
গৌরনদী উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডাক্তার মো. মনিরুজ্জামান বলেন, এ. বি সিদ্দিক জেনারেল হাসপাতাল এন্ড ডায়াগনষ্টিক সেন্টারের টেষ্ট রিপোর্ট দেখে যদি আমি রোগীকে ডায়াবেটিসের ঔষধ দিতাম হা হলে সুগার শুন্য হয়ে এতদিনে রোগীটি মারা যেত। রোগীর ছেলে ঘনশ্যাম মন্ডলের কাছ থেকে আবেদন প্রাপ্তির সত্যতা নিশ্চিত করে তিনি বলেন, এ ব্যাপারে তদন্ত সাপেক্ষ আমি আইনগত ব্যাবস্থা গ্রহন করব।
অভিযোগের ব্যাপারে এ. বি সিদ্দিক জেনারেল হাসপাতাল এন্ড ডায়াগনষ্টিক সেন্টারের ব্যাবস্থাপনা পরিচালক মো. আনিচুর রহমান বলেন, কোন রোগী বা তার স্বজনদের পক্ষ থেকে কেউ এ রকম কোন বিষয় নিয়ে আমার সাথে যোগাযোগ করেনি। ফলে বিষয়টি নিয়ে এ মুহুর্তে আমি কিছু বলতে পারছি না। বিষয়টির ব্যাপারে আমি অবগত নই।