জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) উত্তরাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক সারজিস আলমের রাজধানীর বসুন্ধরা আবাসিক এলাকায় যাওয়াকে কেন্দ্র করে চিৎকার-চেঁচামেচির একটি ভিডিও গতকাল বুধবার রাতে ফেসবুকে ভাইরাল হয়েছে। এ ঘটনায় থানায় পাল্টাপাল্টি অভিযোগ করেছে দুই পক্ষ।
গতকাল মধ্যরাতে ভাটারা থানায় গিয়ে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের কিছু শিক্ষার্থীদের বিরুদ্ধে হামলার অভিযোগ করেছেন সারজিস আলমের অনুসারীরা।একই ঘটনায় ভাটারা থানায় পাল্টা অভিযোগ করেছে অপরপক্ষও।
আজ বৃহস্পতিবার সকালে ভাটারা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মাজহারুল ইসলাম বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, ‘পাল্টাপাল্টি অভিযোগ নিয়ে দুই পক্ষ থানায় এসেছে। সারজিস আলমও আছেন। দুই পক্ষই পরস্পরের বিরুদ্ধে হামলার অভিযোগ করেছেন। আমরা তাদের সঙ্গে কথা বলছি।’
ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলে এ বিষয়ে ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলেও জানান ভাটারা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা।
এদিকে হামলার যে ভিডিও গতকাল সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে, সেটি পোস্ট করে কেউ কেউ দাবি করছেন, ‘সাধারণ শিক্ষার্থীরা’ সারজিস আলমকে বসুন্ধরা আবাসিক এলাকায় অবাঞ্ছিত ঘোষণা করেছেন।
কী ঘটেছিল?
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ভাইরাল ভিডিওটির ঘটনাটি ঘটেছে বুধবার রাত ১০টার পর বসুন্ধরা আবাসিক এলাকায় অবস্থিত বেসরকারি নর্থ সাউথ ইউনিভার্সিটির সামনে। বুধবার রাতে ফেসবুকে বিভিন্ন অ্যাকাউন্ট থেকে ওই ঘটনার একটি ভিডিও পোস্ট করা হয়।
ক্যাপশনে লেখা হয়, এনসিপিতে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের বঞ্চিত করার পর সারজিস আলম বুধবার এসেছিলেন বসুন্ধরা আবাসিক এলাকায় তার অনুসারীদের নিয়ে শোডাউন দিতে। এ খবর শুনে নর্থ সাউথ ইউনিভার্সিটি, এআইইউবি (আমেরিকান ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি-বাংলাদেশে), আইইউবির (ইনডিপেনডেন্ট ইউনিভার্সিটি, বাংলাদেশ) সাধারণ শিক্ষার্থীরা জড়ো হয়ে সারজিসের অনুসারীদের ওপর চড়াও হন।
পরে সবার সম্মিলিত প্রতিরোধের মুখে সারজিস তার গাড়িতে উঠে বসুন্ধরা এলাকা থেকে চলে যান। এ সময় সাধারণ শিক্ষার্থীরা সারজিসকে বসুন্ধরা এলাকায় অবাঞ্ছিত ঘোষণা করেন।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, সারজিস আলম বুধবার সন্ধ্যা সাতটার দিকে বসুন্ধরা আবাসিক এলাকায় এসেছিলেন। তিনি ঘণ্টা তিনেক ধরে ওই এলাকার বিভিন্ন বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের শ খানেক শিক্ষার্থীর সঙ্গে আড্ডা দেন। রাত ১০টার পর প্রায় ১৫ জন তরুণ হঠাৎ অন্য পাশ থেকে সারজিসকে লক্ষ্য করে বিভিন্ন স্লোগান দিতে শুরু করেন।
একপর্যায়ে সারজিসের সঙ্গে থাকা শিক্ষার্থীরা এগিয়ে গেলে দুই পক্ষে উত্তপ্ত বাক্যবিনিময় হয়। সারজিসও এগিয়ে গিয়ে দুই পক্ষকে নিবৃত্ত করার চেষ্টা করেন। একপর্যায়ে সারজিস গাড়িতে উঠে সেখান থেকে চলে আসেন। এরপর দুই পক্ষে হাতাহাতির ঘটনা ঘটে।
এদিকে এ ঘটনায় আজ বৃহস্পতিবার ভোররাতে নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক অ্যাকাউন্টে একটি স্ট্যাটাস দিয়েছেন সারজিস আলম। এতে তিনি রাজধানীর এনএসইউ গেটে ছাত্রদলের সন্ত্রাসী হামলার ঘটনার বিস্তারিত তুলে ধরেছেন।
পাশাপাশি ঘটনায় জড়িত ছাত্রদলের নেতা আহমেদ শাকিল ও তার সঙ্গী সন্ত্রাসীদের দ্রুত বিচারের দাবি জানান এবং সময় থাকতে অতীতের ভুল থেকে শিক্ষা নেওয়ার আহ্বান জানান সারজিস আলম।