রবিবার, ০১:৪৩ পূর্বাহ্ন, ১৭ অগাস্ট ২০২৫, ২রা ভাদ্র, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ , ই-পেপার
নোটিশ :
মানব সেবায় নিয়োজিত অলাভজনক সেবা প্রদানকারী সংবাদ তথ্য প্রতিষ্ঠান।
শিরোনাম :
স্বৈরাচার হাসিনা খালেদা জিয়াকে মে’রে ফেলার ষড়যন্ত্র করেছিলো : সেলিমা রহমান গৌরনদীতে খালেদা জিয়ার জন্মদিনের আলোচনা সভা ও দোয়া মাহফিল গৌরনদীতে জন্মাষ্টমীর সমাবেশ ও বর্ণাঢ্য মঙ্গল শোভাযাত্রা সেপ্টেম্বর নয়, ১২ অক্টোবর থেকে টাইফয়েড টিকা দর্শক মাতাচ্ছে রজনীকান্তের ‘কুলি’ ডায়াবেটিস রোগীর জন্য আম কি ক্ষতিকর? ডাক্তাররা কি ওষুধ কোম্পানির দালাল, প্রশ্ন আসিফ নজরুলের পটুয়াখালীতে ব্যাংক বুথে ও দুই দোকানে ডাকাতি, নিরাপত্তাকর্মী আহত বিতর্কিত নির্বাচন হলে দেশ অনিশ্চিত ভবিষ্যতের দিকে এগোবে : সালাহউদ্দিন আগামী সংসদ নির্বাচন পিআর পদ্ধতিতেই অনুষ্ঠিত হবে: জামায়াত সেক্রেটারি

‘কবরস্থানের’ বিমানগুলো আবার ডানা মেলবে!

সময়ের কণ্ঠধ্বনি ডেস্ক:
  • আপডেট টাইম : মঙ্গলবার, ১১ অক্টোবর, ২০২২
  • ১১১ বার পঠিত

করোনা মহামারীর কারণে বেসামরিক বিমান চলাচল প্রায় থমকে গিয়েছিল৷ যাত্রীরা এখন আবার বিপুল সংখ্যায় বিমানবন্দরে ভিড় করছে৷ স্পেনের এক কোম্পানি বহুদিন ধরে অব্যবহৃত বিমানের রক্ষণাবেক্ষণ করেছে৷

মাঠঘাট ও শুকনা খেতের মাঝে মরীচিকার মতো বস্তুগুলো দেখলে অবাক লাগতে পারে৷ অসংখ্য বিমান সেখানে চোখে পড়ে৷ করোনা মহামারির শুরু থেকেই স্পেনের আরাগন অঞ্চলে তেরুয়েল ইউরোপের সবচেয়ে বড় বিমান রাখার জায়গা হয়ে উঠেছে৷

ব্রিটিশ এয়ারওয়েজ, এয়ার ফ্রান্স ইত্যাদি বিশ্বের বিভিন্ন বিমান সংস্থার শতাধিক বিমান সেখানে দাঁড়িয়ে রয়েছে৷ এক তৃতীয়াংশ জেট জার্মানির লুফটহানসা সংস্থার৷ করোনা মহামারীর ফলে বিমান চলাচল থমকে যাওয়ার পর সেগুলোর প্রয়োজন ফুরিয়ে গিয়েছিল৷

স্টেফান ভিস ও মাটিয়াস হোহর্স্ট এবার একটি এয়ারবাস বিমান ফ্রাংকফুর্টে ফিরিয়ে নিয়ে যেতে এসেছেন৷ কারণ, মানুষ আবার বিপুল সংখ্যায় বিমানের টিকিট কাটছেন৷ এমন চাহিদা মেটাতে এই বিমানটিরও প্রয়োজন হয়ে পড়েছে৷ হোহর্স্ট বলেন, ‘জায়গাটিকে সত্যি মিউজিয়ামের মতো দেখতে লাগছে৷ বিমানবন্দরের প্রাণশক্তির কিছুই এখানে নেই৷ অদ্ভুত নীরবতা, কোনো চলাচল নেই৷ গাড়িঘোড়াও চোখে পড়ে না৷ সত্যি বিচিত্র পরিবেশ৷ ওই সময়ে আমি নিজে কোনো বিমান এখানে উড়িয়ে আনিনি৷ তবে সহকর্মীদের কাছে অনেক কিছু শুনেছি, ছবিও দেখেছি৷ সে সব দেখেশুনে জায়গাটিকে কবরস্তান মনে হয়েছিল৷ বিমানগুলো এখানে নিয়ে আসা হয়েছে৷ তখন মনে হয়েছিল সেগুলি সম্ভবত সেখানেই থেকে যাবে৷ এখন আবার আমাদের বিমান ফেরত নেবার পালা৷ সেটা অসাধারণ এক অনুভূতি৷’

তেরুয়েল ছোট শহর, জনসংখ্যা প্রায় ৩৬,০০০৷ বাতিল বিমানগুলো শহরের জন্য আখেরে সুফল বয়ে এনেছে৷ টারমাক নামের কোম্পানির ১৩০ জন কর্মীর পাকা চাকরি তো আছেই৷ সেই সংখ্যা আরো বাড়ানো হচ্ছে৷ প্রতি সপ্তাহে বেশিরভাগ বিমানের রক্ষণাবেক্ষণের কাজ করতে হয়৷ কারণ ইঞ্জিন ও চাকা আবার আকাশে ওড়ার যোগ্য রাখা জরুরি৷

করোনা কোনো এক সময়ে নির্মূল হয়ে গেলেও টারমাক কোম্পানির কাজের অভাব থাকবে না৷ কারণ আগামী ২০ বছরে বিশ্বজুড়ে প্রায় ১৫,০০০ বিমান বাতিল করে টুকরো টুকরো করতে হবে৷ নির্দিষ্ট সময় ওড়ার পর অথবা বাণিজ্যিক উপযোগিতা আর না থাকলে বিমানের এমন দশা হয়৷

কোম্পানির তিন বর্গ কিলোমিটার জমিতে আর জায়গা হচ্ছে না৷ তাই দাঁড়িয়ে থাকা বিমানগুলোর পাশেই নতুন হ্যাঙার তৈরি হচ্ছে৷

টারমাক কোম্পানির প্রধান পেদ্রো সায়েস বলেন, এ ক্ষেত্রে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের তুলনায় ইউরোপের অবস্থা অনেক ভালো৷ অ্যামেরিকায় বাতিল বিমান প্রায়ই মরুভূমিতে ফেলে রাখা হয়৷ সময়ের সঙ্গে সঙ্গে সেগুলি ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়৷ পেদ্রো সায়েস বলেন, ‘মনে রাখতে হবে, রিসাইক্লিং প্রক্রিয়ায়ও আমরা কিন্তু বিমানের ওজনের ৯৪ শতাংশের বেশি উপাদান উদ্ধার করি৷ দামী উপাদানগুলো উদ্ধার করে এক তালিকা করা হয়৷ মালিকের জন্য সেটা জরুরি৷ কিছু যন্ত্রাংশ আবার নতুন করে বিমান তৈরির শিল্পে কাজে লাগানো হয়৷ গড়ে সেই তালিকায় দেড় থেকে দুই হাজার যন্ত্রাংশ থাকে, যেগুলো বাতিল বিমান থেকে উদ্ধার করা হয়েছে৷’

এবার পাইলটদের ককপিটে যাবার পালা৷ বিমান ফেরত নিয়ে যাবার এই প্রক্রিয়ায় সাধারণ উড়ালের তুলনায় অনেক বেশি প্রস্তুতি লাগে৷ কারণ তেরুয়েল মোটেই প্রচলিত কোনো বিমানবন্দর নয়৷ সেখানে এয়ার ট্রাফিক কন্ট্রোল ও ইলেকট্রনিক গাইডেন্স সিস্টেম নেই৷ পাইলটদের তাই কাগজের মানচিত্রের ওপর নির্ভর করে বিমান ওড়াতে হয়৷

পাইলট হিসেবে মাটিয়াস হোহর্স্ট বলেন, ‘এয়ার ট্রাফিক কনট্রোলের কর্মীদের সঙ্গে কথা বলার সুযোগ নেই৷ রানওয়ের দিকে এগোনোর সময় তথাকথিত ইউনিকম ফ্রিকুয়েন্সিতে কথা বলতে হয়৷ এই অঞ্চলে সব বিমানই নিজেদের মধ্যে সেই তরঙ্গদৈর্ঘ্যে কথা বলে৷ সেই ফ্রিকুয়েন্সিতে আমরা নিজেদের পরিকল্পনা জানিয়ে আকাশে উড়ি৷ আমাদের নির্দিষ্ট কোনো ডিপার্চার রুট থাকে না, যা সাধারণত এয়ার ট্রাফিক কনট্রোল দিয়ে থাকে৷ আমরা উত্তর দিকে রওনা হয়ে নিচে হাইওয়ে দেখে সারাগোসার দিকে উড়ে যাই৷ পথে কাছের এয়ার ট্রাফিক কনট্রোলের সঙ্গে যোগাযোগ হয়৷ সেখান থেকে আমাদের আকাশে আরও উপরের স্তরে যাবার নির্দেশ আসে৷ তারপর থেকে স্বাভাবিকভাবে উড়াল চলে৷’

এয়ারবাস এ৩৪০ বিমানটির উড়ালের ছাড়পত্র পেতে আড়াই ঘণ্টা সময় লাগল৷ ফ্রাংকফুর্টে পৌঁছে বিমানটির আরো দুই সপ্তাহ ধরে রক্ষণাবেক্ষণ হলো৷ তারপরই সেটি যাত্রীবাহী রুটে চলার জন্য উপযুক্ত হিসেবে স্বীকৃতি পেল৷ ছুটি কাটিয়ে আমেরিকা, আফ্রিকা বা এশিয়ায় চলাচল শুরু করল বিমানটি৷
সূত্র : ডয়চে ভেলে

নিউজটি শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এ জাতীয় আরো খবর..
© All rights reserved © 2021 SomoyerKonthodhoni
Theme Dwonload From ThemesBazar.Com