সোমবার, ০২:২০ অপরাহ্ন, ১৫ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ৩১শে ভাদ্র, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ , ই-পেপার
নোটিশ :
মানব সেবায় নিয়োজিত অলাভজনক সেবা প্রদানকারী সংবাদ তথ্য প্রতিষ্ঠান।

দ্বিমতের জায়গা নেই, জুলাই সনদ নিয়ে সমঝোতায় আসতেই হবে

সময়ের কণ্ঠধ্বনি ডেস্ক:
  • আপডেট টাইম : সোমবার, ১৫ সেপ্টেম্বর, ২০২৫
  • ৫ বার পঠিত

দফায় দফায় বৈঠক আর আলোচনার পরও জুলাই জাতীয় সনদ নিয়ে জটিলতার সুরাহা করতে পারেনি জাতীয় ঐকমত্য কমিশন। গতকাল রোববারও রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে বৈঠকে বসে কমিশন। এতে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস উপস্থিত থেকে বক্তব্য দেন। তবে এ বৈঠক থেকেও কোনো সমাধান আসেনি বলে জানিয়েছেন এতে অংশ নেওয়া রাজনৈতিক দলের নেতারা। এমন পরিস্থিতিতে রাজনৈতিক দলগুলোকে জুলাই সনদ প্রসঙ্গে একমত হয়ে নির্বাচনের দিকে এগিয়ে যাওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সভাপতি প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস। তিনি বলেন, চব্বিশের জুলাই অভ্যুত্থান এ জাতিকে নতুন করে জন্ম দেওয়ার যে সুযোগ এনে দিয়েছে, মতভিন্নতার কারণে তা যেন হারাতে না হয়। এই একমাত্র সুযোগ। আমাদের এটা গ্রহণ করতেই হবে। এটা থেকে বিচ্যুত হওয়ার উপায় নেই। সমঝোতা বলেন, ঐক্য বলেন, যা-ই বলেন, যখন নির্বাচনে যাব, একমত হয়ে সবাই যাব। এর মধ্যে কোনো দ্বিমত আর আমরা রাখব না।’ একই সঙ্গে আগামী বছরের ফেব্রুয়ারির প্রথমার্ধেই সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে বলে দৃঢ় প্রত্যয় ব্যক্ত করেছেন প্রধান উপদেষ্টা। তিনি বলেন, আগামী ফেব্রুয়ারিতেই জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে এবং সেটি হবে জাতির নবজন্মের মহোৎসব।

এদিকে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের মেয়াদ আরও বাড়ছে বলে সংশ্লিষ্ট সূত্র জানিয়েছে। পাশাপাশি গতকালও জুলাই সনদ নিয়ে আবারও বিশেষজ্ঞদের সঙ্গে মতবিনিময় করেছে ঐকমত্য কমিশন। গত ১২ ফেব্রুয়ারি ঐকমত্য কমিশন গঠন করা হয়। সর্বশেষ গত ১২ আগস্ট এক প্রজ্ঞাপনের মাধ্যমে ১৫ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত কমিশনের মেয়াদ বাড়ানো হয়। সেই হিসেবে আজ সোমবার কমিশনের মেয়াদ শেষ হওয়ার কথা।

ফেব্রুয়ারিতেই নির্বাচনের কথা পুনর্ব্যক্ত প্রধান উপদেষ্টার : রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে গতকাল বিকেলে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সংলাপে অংশ নেন প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস। এটি ছিল তৃতীয় ধাপের সংলাপের দ্বিতীয় দিন। আইন উপদেষ্টা ড. আসিফ নজরুল, জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সহসভাপতি অধ্যাপক আলী রিয়াজ, বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাউদ্দিন আহমদ, জামায়াতে ইসলামীর সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল হামিদুর রহমান আযাদ, এনসিপির সদস্য সচিব আখতার হোসেন প্রমুখ এদিনের সংলাপে বক্তব্য দেন। অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী (ঐকমত্য গঠন) মনির হায়দার।

ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেন, জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের মাধ্যমে দেশের রাজনৈতিক দলগুলো ঐকমত্যের পথে যে অগ্রগতি অর্জন করেছে তা শুধু বাংলাদেশের জন্য নয়, গোটা বিশ্বের জন্যই এক অনন্য দৃষ্টান্ত হয়ে থাকবে। তিনি স্পষ্ট করে জানান, আগামী ফেব্রুয়ারিতেই জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে এবং সেটি হবে ‘জাতির নবজন্মের মহোৎসব’।

প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ‘শুরুতে যখন কমিশনের ধারণা এলো, আমি নিশ্চিত ছিলাম না, এটা টিকবে কি না। কিন্তু আজ দীর্ঘ পথ অতিক্রম করার পর আপনাদের আলোচনা ও সিদ্ধান্তে আমি অভিভূত হয়েছি। কমিশনের অভিজ্ঞতা ভবিষ্যতে অন্য দেশগুলোও অনুসরণ করবে। এটা শুধু বাংলাদেশের অভিজ্ঞতা হয়ে থাকবে না, সারা দুনিয়া লক্ষ করবে আমরা কীভাবে সমস্যার সমাধান করলাম। জাতির সামনে আর কোনো বিকল্প পথ নেই। যে পথে আমরা শুরু করেছি, সেই পথ থেকে বের হওয়ার কোনো সুযোগ নেই। এই সমতায় আমাদের আসতেই হবে। এটাই ছাত্র-জনতার দেওয়া সুযোগ, যেখান থেকে নতুন বাংলাদেশ গড়ে উঠবে।’

আগামী জাতীয় নির্বাচনের বিষয়ে ড. ইউনূস বলেন, ‘আমরা বারবার বলেছি—ফেব্রুয়ারিতে নির্বাচন হবে, ফেব্রুয়ারির প্রথমার্ধেই নির্বাচন হবে। সেটি হবে মহোৎসবের নির্বাচন, যদি আমরা ঐকমত্যের মাধ্যমে ফয়সালা করতে পারি। এই নির্বাচন শুধু নির্বাচন নয়, এটি হবে জাতির নবজন্ম। জাতি সত্যিকার নবজন্ম হবে, এটা শুধু নির্বাচন না, এটা নবজন্ম। এই যে এত ত্যাগ, এত রক্ত—এগুলো সার্থক হবে যদি আমরা এই নবজন্মটা লাভ করতে পারি।’

তিনি সতর্ক করে দিয়ে বলেন, ‘বিভাজন বা দ্বিমতের কোনো স্থান নেই। আমরা অনেক কথা বলতে পারি, কিন্তু দ্বিমত রেখে সমাপ্ত করতে পারব না। যখন ঐকমত্যে পৌঁছাব, তখনই নির্বাচন সার্থক হবে।’

শান্তিতে নোবেলজয়ী অধ্যাপক ইউনূস উদাহরণ টেনে বলেন, ‘আমাদের হাতে এখন আলাদিনের প্রদীপের মতো সুযোগ এসেছে। ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থান সেই শক্তি এনে দিয়েছে। আমরা চাইলে ছোটখাটো বিষয় চাইতে পারি, আবার চাইলে পুরো জাতিকে নতুনভাবে গড়তে পারি। এই সুযোগ একবারই এসেছে, আর আসবে না।’ রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে আলোচনা চালিয়ে যাওয়ার প্রয়োজনীয়তার ওপরও গুরুত্বারোপ করেন প্রধান উপদেষ্টা।

তিনি বলেন, ‘আমরা হাইওয়ে বানিয়ে ফেলেছি, এখন শুধু সাইনবোর্ড বসানো বাকি। পথ ঠিক আছে, গন্তব্য পরিষ্কার। এই নির্বাচন হবে উৎসবের নির্বাচন, দেশের শান্তি ও নতুন যাত্রার সূচনা। আমাদের সংস্কারের মূল লক্ষ্য হলো সব পথঘাট বন্ধ করা, যাতে কোনো স্বৈরাচার আর ফিরে আসতে না পারে। এজন্য সবাইকে একমত হতে হবে।’

ঐকমত্য কমিশনের কাজকে অভূতপূর্ব অর্জন বলে অভিহিত করেন ড. ইউনূস। তিনি কমিশনের সদস্য ও রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দের পরিশ্রমের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানিয়ে বলেন, ‘আপনারা ইতিহাসের এক স্মরণীয় অধ্যায় রচনা করেছেন। এখন শুধু এটিকে নিখুঁতভাবে সমাপ্ত করা দরকার। এর মধ্য দিয়েই নতুন জাতির জন্ম ঘটবে।’

বিএনপি-জামায়াত ও এনসিপির বক্তব্য : গত ১৫ বছরে আওয়ামী লীগ আমলে বিএনপি সবচেয়ে বেশি অবিচারের শিকার হয়েছে উল্লেখ করে দলটির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমদ বলেন, ‘আমরা গুম-হত্যা-নির্যাতনের শিকার হয়েছি। সংস্কার, বিচার এবং নির্বাচন কোনোভাবেই মিউচ্যুয়ালি ইন্টারডিপেনডেন্ট নয়। সংস্কার সংস্কারের মতো চলবে, এটা কন্টিনিউ প্রসেস। বিচার চলবে, এটা আমাদের ও জাতির কমিটমেন্ট। কিন্তু নির্বাচনকে কন্ডিশনাল করা যাবে না। আবারও ফ্যাসিবাদী শক্তি সুযোগ পেলে সেটা আমাদের জাতীয় জীবনের জন্য; অনেকে বলছেন, এটা জাতীয় নিরাপত্তার জন্য হুমকি হবে। আমি বলছি, এটা আঞ্চলিক নিরাপত্তার জন্য থ্রেট হতে পারে। এখানে দুইটা রিজিওনাল শক্তি, আমরা বাংলাদেশকে সেখানে নিতে চাই না। নির্ধারিত টাইম লাইনে নির্বাচন হতেই হবে।’ গতকাল জুলাই সনদ বাস্তবায়ন প্রক্রিয়া নিয়ে প্রধান উপদেষ্টার উপস্থিতিতে ঐকমত্য কমিশনের বৈঠকে এসব কথা বলেন বিএনপির এই নেতা।

ফ্যাসিবাদবিরোধী জাতীয় ঐক্য ধরে রাখা প্রসঙ্গে সালাহউদ্দিন আহমদ বলেন, ‘আমরা কম্প্রোমাইজ করব। আলাপ-আলোচনার মাধ্যমে কোনো পন্থা বের করতে পারলে তাতে একমত হব। জুলাই সনদের চূড়ান্ত খসড়াতেও কিছুটা বিভ্রান্তি আছে। এটা আমরা কারেকশন করে দেব, এটা মেজর কিছু নয়। তবে এটি জাতীয় দলিল, রাজনৈতিক সমঝোতার দলিল, ঐতিহাসিক দলিল হবে, সেজন্য এটা নির্ভুল হওয়া বাঞ্ছনীয়। যেসব বিষয় আলোচিত হয়নি, সেগুলো এতে অন্তর্ভুক্ত করা ঠিক হবে না। বিতর্ক যত কম করা যায়।’

শেষ সময়ে এসে সনদের আইনি ভিত্তি দেওয়া না হলে স্বাক্ষর না করা নিয়ে কয়েকটি দলের অবস্থান প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘আমরা বলেছি, আইনি ভিত্তি নিয়ে আলোচনা হলে তাতে আমরা অংশ নেব। সেই আলোচনা শুরু হয়েছে। তার আগে কমিশন বিশেষজ্ঞদের মতামত নিয়েছে। সেখান থেকে অঙ্গীকারনামার যে ড্রাফট দেওয়া হয়েছে, তাতে আমরা লিখিত মতামত দিয়েছি। যেসব বিষয় পরে টিকবে না, সেগুলো এতে উত্থাপন করা ঠিক হবে না।’

জামায়াতে ইসলামীর সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল হামিদুর রহমান আযাদ বলেন, ‘সমঝোতার কথা আমরা বারবার বলতে চাই। রাজনৈতিকভাবে আমরা যদি ঐকমত্যে পৌঁছাতে পারি, সেটা উৎকৃষ্ট উদাহরণ হবে। আগামী নির্বাচন জুলাই সনদের ভিত্তিতে হলে একটি সুন্দর সমাপ্তি হবে। জুলাই সনদকে রাজনৈতিক ইতিহাসের দলিল বলতে চাই না, যেটা রাষ্ট্রীয় দলিল হিসেবে থাকবে। যার ভিত্তিতে আগামীর বাংলাদেশ সুশাসন, গণতন্ত্র ও একটা কল্যাণমুখী রাষ্ট্র হিসেবে পরিচালিত হবে। জবাবদিহিমূলক একটি সরকার হবে। এটিই আমাদের প্রত্যাশা। ঐকমত্যের ভিত্তিতে সনদ প্রণীত হলে গোটা বিশ্ব স্বাগত জানাবে। এটা বিশ্বে অনন্য নজির হয়ে থাকবে।’

ঐকমত্য কমিশনের উদ্দেশে তিনি বলেন, ‘আপনাদের এ অক্লান্ত পরিশ্রমের দিকে পুরো জাতি তাকিয়ে আছে। তাই জুলাই সনদে আইনের ভিত্তি যেন থাকে। আইনি ভিত্তি কীভাবে হবে সেটার আমরা লিখিত দিয়েছি। লিখিত বক্তব্য প্রধান উপদেষ্টার কাছে পৌঁছেছে। আমরা একমত হতে না পারলে একটি অপশন হলো গণভোট। জনগণ গণভোট দেবে। জাতীয় সনদ গণভোটে যাবে। জনগণ যে রায় দেবে, সেটা আমরা মানব। শিক্ষাঙ্গনে একটি সুন্দর পরিবেশ নিশ্চিত হয়েছে। চারটি বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র সংসদ নির্বাচন হচ্ছে। সুন্দর সুষ্ঠু একটি নির্বাচনের মাধ্যমে আপনাদের সমাপ্তি হোক, এটা আমরা কামনা করি।’

জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের মেয়াদ বৃদ্ধি এবং কমিশনের সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নে গণপরিষদ নির্বাচনের দাবি জানান এনসিপির সদস্য সচিব আখতার হোসেন। তিনি সংলাপে বলেন, ‘ঐকমত্য কমিশন দীর্ঘ সময় ধরে আলোচনা করেছে, আমরা প্রায় শেষ প্রান্তে এসে পৌঁছেছি। আমরা কমিশনের সভাপতি স্যারের (প্রধান উপদেষ্টা) কাছে বিনীত অনুরোধ করব, আমাদের আলোচনা প্রায় গুছিয়ে নিয়ে এসেছি। কমিশনের সময় প্রায় শেষের দিকে। কমিশন আরও কিছুদিন সময় যদি পায়, সেক্ষেত্রে রাজনৈতিক দলগুলো আলাপ-আলোচনার মধ্য দিয়ে কমিশনের সহযোগিতায় আমরা ইতিবাচক সিদ্ধান্তের দিকে অগ্রসর হতে পারব। কমিশনের সদস্য এবং সভাপতির কাছে আমাদের বিনীত আহ্বান কমিশনের সময় বৃদ্ধি করে বাস্তবায়নের পথ নিশ্চিতভাবে সবার কাছে প্রস্ফুটিত করে আমরা যেন এ কমিশনের কার্যক্রমকে সফলভাবে সমাপ্ত করতে পারি।’

আখতার হোসেন বলেন, ‘যেগুলো সংবিধানের সঙ্গে সম্পর্কিত নয়, সেগুলো এ সরকারের সময় থেকেই অর্ডিন্যান্স বা নির্বাহী আদেশের মাধ্যমে বাস্তবায়ন করা সম্ভব হবে। কিন্তু রাষ্ট্র কাঠামোর অনেক বিষয় নিয়ে আমরা কথা বলেছি, যাতে সংবিধানের অনেক মৌলিক জায়গায় পরিবর্তন আসবে। এত বড় ধরনের পরিবর্তন শুধু সংশোধনের মধ্যদিয়ে এগুলোকে টেকসই করা সম্ভব কি না, সেই আশঙ্কার জায়গাটি আমাদের মধ্যে বিদ্যমান রয়েছে। এনসিপি মনে করে, গণপরিষদ নির্বাচনের মধ্য দিয়েই নতুন সংবিধানে নতুনভাবে লিখিত ধারা, উপধারা এবং অনুচ্ছেদের মধ্য দিয়ে আমরা যে সংশোধনীর ও সংস্কারের বিষয়ে একমত হয়েছি, সেগুলোকে টেকসই করা সম্ভব। সে ক্ষেত্রে রাজনৈতিক দলগুলোকে অবশ্যই একটু ঐকমত্যের জায়গায় পৌঁছাতে হবে।’

দফায় দফায় আলোচনা শেষে সাত দফা অঙ্গীকারনামার ভিত্তিতে জুলাই জাতীয় সনদের খসড়া চূড়ান্ত করেছে জাতীয় ঐকমত্য কমিশন। এখন তাতে স্বাক্ষর করলে এই সনদ নিয়ে আদালতে কোনো প্রশ্ন তুলতে পারবে না রাজনৈতিক দলগুলো। স্বাক্ষরের জন্য এই চূড়ান্ত খসড়া গত বৃহস্পতিবারই রাজনৈতিক দলগুলোকে পাঠানো হয়। তবে কখন সনদ স্বাক্ষর হবে, তা এখনো চূড়ান্ত হয়নি।

গতকালের বৈঠক প্রসঙ্গে ১২ দলীয় জোটের সমন্বয়ক ও বাংলাদেশ জাতীয় দলের চেয়ারম্যান সৈয়দ এহসানুল হুদা কালবেলাকে বলেন, ‘বৈঠকে প্রধান উপদেষ্টার বক্তব্যে আমরা দিকনির্দেশনা আশা করেছিলাম। কিন্তু তার বক্তব্যে তেমন কিছুই পাইনি। বিশেষ করে জুলাই সনদ বাস্তবায়নের বিষয়ে তার কোনো সুস্পষ্ট বক্তব্য পাইনি। ফলে জাতীয় নির্বাচন নিয়েও পরিস্থিতি ঘোলাটে হওয়ার আশঙ্কা থেকেই যায়।’

বিশেষজ্ঞদের সঙ্গে কমিশনের সভা: জুলাই জাতীয় সনদ বাস্তবায়নের উপায় ও পদ্ধতি নিয়ে বিশেষজ্ঞদের সঙ্গে আবারও সভা করেছে জাতীয় ঐকমত্য কমিশন। গতকাল সকালে রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে অনুষ্ঠিত এই আলোচনায় বিশেষজ্ঞ হিসেবে অংশ নেন সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগের অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি এমএ মতিন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন অনুষদের ডিন মোহাম্মদ ইকরামুল হক, সুপ্রিম কোর্টের সিনিয়র অ্যাডভোকেট ড. শরিফ ভূঁইয়া, ব্যারিস্টার তানিম হোসেইন শাওন ও ব্যারিস্টার ইমরান সিদ্দিক। সভায় সনদ বাস্তবায়ন সম্পর্কিত রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আলোচিত বিষয়গুলো সম্পর্কে বিশেষজ্ঞদের অবহিত করে কমিশন। পাশাপাশি সনদ বাস্তবায়নের উপায় ও পদ্ধতি নিয়ে রাজনৈতিক দল এবং বিশেষজ্ঞদের কাছ থেকে আগে পাওয়া সুপারিশগুলোও আলোচনায় উঠে আসে।

সভায় কমিশনের পক্ষে উপস্থিত ছিলেন সহসভাপতি অধ্যাপক আলী রীয়াজ, সদস্য ড. বদিউল আলম মজুমদার, বিচারপতি মো. এমদাদুল হক, ড. ইফতেখারুজ্জামান ও ড. মো. আইয়ুব মিয়া এবং প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী মনির হায়দার।

নিউজটি শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এ জাতীয় আরো খবর..
© All rights reserved © 2021 SomoyerKonthodhoni
Theme Dwonload From ThemesBazar.Com