সোমবার, ০৫:১৬ অপরাহ্ন, ১১ অগাস্ট ২০২৫, ২৭শে শ্রাবণ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ , ই-পেপার
নোটিশ :
মানব সেবায় নিয়োজিত অলাভজনক সেবা প্রদানকারী সংবাদ তথ্য প্রতিষ্ঠান।

তদন্তে চমক : হাবিবুরের নির্দেশে ছাত্র-জনতার ওপর ‘গুলি’ চালানো হয়!

সময়ের কণ্ঠধ্বনি ডেস্ক:
  • আপডেট টাইম : সোমবার, ১১ আগস্ট, ২০২৫
  • ৫ বার পঠিত

তৎকালীন ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) কমিশনার হাবিবুর রহমান ২০২২ সালের জুলাইয়ের গণ-অভ্যুত্থানে রাজধানীতে সংঘটিত সব গণহত্যার পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করেন।

১ জুলাই থেকে ৫ আগস্ট পর্যন্ত বেপরোয়া রকমে ছাত্র-জনতার নিরস্ত্র আন্দোলন দমনের দায়িত্বে ছিলেন তিনি। তার নেতৃত্বে পুলিশ ১৯ জুলাই রামপুরায় আন্দোলনকারীদের ওপর গুলি চালিয়ে নাদিম ও বৃদ্ধ মায়া ইসলামকে হত্যা করে। একই ঘটনায় আহত হন ছয় বছর বয়সী বাসিত খান মুসা ও আমির হোসেন নামে এক যুবক।

পুলিশের গুলিতে ওই দিন অন্তত ২৩ জন নিহত এবং অসংখ্য আহত হয়েছেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। রামপুরায় সংঘটিত মানবতাবিরোধী এই ঘটনার মামলার অভিযোগপত্রে এসব তথ্য উঠে এসেছে।

গতকাল রোববার আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১ মামলাটি আনুষ্ঠানিকভাবে গ্রহণ করে। এ মামলায় ডিএমপির সাবেক কমিশনার হাবিবুর রহমানসহ চার আসামির বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করা হয়েছে, যারা বর্তমানে পলাতক। বিচারপতি মো. গোলাম মর্তূজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের ট্রাইব্যুনাল এই মামলায় গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেন। ট্রাইব্যুনালের অন্য দুই সদস্য হলেন বিচারপতি মো. শফিউল আলম মাহমুদ ও বিচারপতি মো. মোহিতুল হক এনাম চৌধুরী।

মামলার পাঁচ আসামির মধ্যে একজন গ্রেপ্তার, তিনি হলেন রামপুরা পুলিশ ফাঁড়ির সাবেক সহকারী উপপরিদর্শক চঞ্চল চন্দ্র সরকার, যাকে ট্রাইব্যুনালে হাজির করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। পরবর্তী শুনানি নির্ধারিত হয়েছে ১৭ আগস্ট।

অভিযোগপত্রে বলা হয়েছে, ১৯ জুলাই রামপুরায় পুলিশের গুলিতে শিশু বাসিত খান মুসার মাথায় এবং তার দাদি মায়া ইসলামের পেটে গুলি লাগে। এ ঘটনায় দাদি মায়া ইসলাম চিকিৎসাধীন অবস্থায় পরদিন মারা যান। একই দিনে নাদিম নামে এক ব্যক্তিও নিহত হন।

প্রসিকিউটর বিএম সুলতান মাহমুদ জানান, মামলায় ঢাকা মহানগর পুলিশের সাবেক কমিশনার হাবিবুর রহমানসহ পাঁচজনকে আসামি করা হয়েছে এবং অভিযোগপত্র আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে দাখিল করা হয়েছে।

অভিযোগপত্রে আরও বলা হয়েছে, সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ক্ষমতায় রাখতে ডিএমপি কমিশনার হাবিবুর রহমান আইন ও সংবিধান লঙ্ঘন করে জনগণের প্রতি দায় ও কর্তব্য ভুলে নিরস্ত্র আন্দোলন দমনের জন্য প্রাণঘাতী অস্ত্র সজ্জিত পুলিশ মোতায়েন করেন। ৫ আগস্ট সকালে চানখাঁরপুল এলাকায় পুলিশ গুলি চালিয়ে ৬ জনকে হত্যা করে।

তদন্তে পাওয়া অডিও ক্লিপে হাবিবুর রহমানের গুলি করার নির্দেশের তথ্য রয়েছে। তদন্তকালে জানা যায়, তিনি সরাসরি তত্ত্বাবধান ও নির্দেশনা প্রদান করেছেন এবং তার নেতৃত্বে নৃশংস নির্যাতন ও হত্যাকাণ্ড সংঘটিত হয়েছে।

অভিযোগে বলা হয়, ১৯ জুলাই বাংলাদেশের ইতিহাসের রক্তক্ষয়ী দিনে পরিণত হয়। ওই দিন দুপুর রামপুরায় বনশ্রী জামে মসজিদের সামনে পুলিশ নিরস্ত্র ছাত্র-জনতার ওপর ১ হাজার ৭০২ রাউন্ড গুলি চালায়, যার ফলে নাদিম নিহত হন এবং বহু আহত হন। একই দিনে পুলিশের গুলিতে গুরুতর আহত হন আমির হোসেন, যিনি নির্মাণাধীন ভবনের ছাদের পাইপ ধরে লুকানোর চেষ্টা করছিলেন।

নিউজটি শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এ জাতীয় আরো খবর..
© All rights reserved © 2021 SomoyerKonthodhoni
Theme Dwonload From ThemesBazar.Com