শনিবার, ০৪:০৬ অপরাহ্ন, ২১ জুন ২০২৫, ৭ই আষাঢ়, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ , ই-পেপার
নোটিশ :
মানব সেবায় নিয়োজিত অলাভজনক সেবা প্রদানকারী সংবাদ তথ্য প্রতিষ্ঠান।

আসনভিত্তিক জরিপ চালাচ্ছে বিএনপি

সময়ের কণ্ঠধ্বনি ডেস্ক:
  • আপডেট টাইম : শনিবার, ২১ জুন, ২০২৫
  • ৬ বার পঠিত

ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন সামনে রেখে আসনভিত্তিক জরিপ চালাচ্ছে বিএনপি। এ বিষয়ে দলের বিশ^স্ত তিনজন সরেজমিনে কাজ করছেন। তারা খোঁজ-খবর নিচ্ছেন, দলের সম্ভাব্য প্রার্থীদের কার কী অবস্থা। জরিপে বেশিমাত্রায় গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে অপেক্ষাকৃত তরুণ, মেধাবী ও ইমেজসম্পন্ন নেতাদের। ২০০১ সাল থেকে ২০১৮ পর্যন্ত যারা দলীয় মনোনয়নে এমপি হয়েছেন বা মনোনয়ন পেয়েছিলেন তাদের বিষয়েও খোঁজ নেওয়া হচ্ছে। তবে ২০১৮ সালের মতো এবার এক আসনে একাধিক জনকে দলীয় মনোনয়নের চিঠি দেওয়া হবে না। জানতে চাইলে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাউদ্দিন আহমদ বলেন, এবার দলের সিদ্ধান্ত একক প্রার্থী নির্ধারণ করার। ২০১৮ সালের মতো একাধিক প্রার্থী হবে না?।

দলীয় সূত্রে জানা গেছে, ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের পর বিভিন্ন আসনে বিএনপির একাধিক সম্ভাব্য প্রার্থী মাঠে নামেন। কোথাও কোথাও নেতৃত্ব নিয়ে সংঘাতও হয়। এ সব সংঘাত এড়িয়ে চলতে দলের শীর্ষ পর্যায় থেকে কয়েকটি নির্বাচনী এলাকায় কিছু নেতাকে সবুজ সঙ্কেত দেওয়া হয়েছে। যদিও সেসব এলাকায়ও একাধিক প্রার্থী মাঠে কাজ করছেন।

জানা গেছে, বিএনপির প্রার্থী বাছাইয়ে ২০০১, ২০০৮ ও ২০১৮ সালের নির্বাচনে অংশ নেওয়া প্রার্থীদেরও বিবেচনায় রাখা হবে।

বিএনপি সূত্রে জানা গেছে, নির্বাচনকেন্দ্রিক সব কার্যক্রম আনুষ্ঠানিকভাবে শুরু হবে নির্বাচন কমিশনের তফসিল ঘোষণার পর। সম্ভাব্য প্রার্থীদের সাক্ষাৎকারের পর একক প্রার্থী চূড়ান্ত করে বিএনপির পার্লামেন্টারি বোর্ড। দলটির গঠনতন্ত্রের ১৪ অনুচ্ছেদে বলা আছে ‘জাতীয় সংসদ নির্বাচনের জন্য কিংবা অন্য যে কোনো নির্বাচনের জন্য দলের প্রার্থী মনোনয়নে দলের একটি পর্লামেন্টারি বোর্ড থাকবে। জাতীয় স্থায়ী কমিটিই হবে দলের পার্লামেন্টারি বোর্ড।

জাতীয় সংসদ নির্বাচনের কিংবা যে কোনো নির্বাচনে দলের প্রার্থী মনোনয়নের দায়িত্ব পার্লামেন্টারি বোর্ড পালন করবে এবং এ ব্যাপারে বোর্ডের সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত বলে গণ্য হবে।’

এ প্রসঙ্গে বিএনপির স্থায়ী কমিটির একাধিক নেতা বলেন, পৃথিবী এখন একটি গ্লোবাল ভিলেজ। এখন রাজনীতি করতে হলে নেতাদের বিভিন্ন বিষয়ে আপডেট থাকতে হয়। ফলে তরুণ ও শিক্ষিত এবং জনপ্রিয়তা আছে- এবারের নির্বাচনে এমন অনেক প্রার্থী দেওয়া হবে। এর ফলে অনেক সিনিয়র ও প্রভাবশালী নেতা মনোনয়ন না-ও পেতে পারেন। মিত্র রাজনৈতিক দলের নেতাদের ছাড় দেওয়া হবে। সে কারণেও কেউ কেউ মনোনয়নবঞ্চিত হতে পারেন। সব মিলিয়ে আগামী জাতীয় নির্বাচন দলের জন্য একটি কঠিন পরীক্ষা।

জানা গেছে, মিত্র দলগুলোর বেশ কয়েকজন নেতাকে ইতোমধ্যে নির্বাচনী এলাকায় কাজ করার ইঙ্গিতও দিয়েছে বিএনপি হাইকমান্ড। আবার ঢাকার দুই-তিনটি আসনও মিত্রদের ছাড়তে হতে পারে বলে বিএনপির একাধিক সিনিয়র নেতা ইঙ্গিত দিয়েছেন। তবে নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার পর আলাপ-আলোচনার মাধ্যমে সব কিছু চূড়ান্ত হবে বলে জানিয়েছে বিএনপি সূত্র।

এদিকে জাতীয় নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার আগে দল পুনর্গঠনের কাজ শেষ করতে চায় বিএনপি। ইতোমধ্যে দল পুনর্গঠনের সঙ্গে যুক্ত নেতাদের এমন নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। বরিশাল বিভাগীয় সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক আকন কুদ্দুসুর রহমান আমাদের সময়কে বলেন, আমরা দ্রুতই কাউন্সিলের মাধ্যমে সকল কমিটি করব। দলের শীর্ষ পর্যায় থেকে এমন নির্দেশনা পেয়েছি।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, গত জানুয়ারি মাসে বরিশাল বিভাগে বিএনপির সাংগঠনিক কাঠামো পুনর্গঠনের উদ্যোগ শুরু হয়। পাঁচ মাস পেরিয়ে গেলেও সে কার্যক্রমে কোনো অগ্রগতি নেই। এ বিষয়ে জানতে চাইলে ভোলা জেলা সম্মেলন প্রস্তুতি কমিটির আহ্বায়ক আবু নাসের মোহাম্মদ রহমতুল্লাহ বলেন, আমরা ভোলায় ইতোমধ্যে কয়েক দফা সভা করেছি। আশা করি, শিগগিরই উপজেলা কমিটিগুলো গঠন করতে পারব। জুলাইয়ের মধ্যেই জেলা কমিটিও গঠনের পরিকল্পনা রয়েছে।

রাজশাহী বিভাগের দায়িত্বপ্রাপ্ত নেতা চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আবদুস সালাম। তিনিও গত কয়েক দিন ধরে কাজ করে যাচ্ছেন। তিনি বলেন, আমরা আমাদের কার্যক্রম অব্যাহত রেখেছি।

চট্টগ্রাম বিভাগের সাংগঠনিক সম্পাদক মেহবুবুর রহমান শামীম বলেন, দলের হাইকমান্ডের নির্দেশনা অনুযায়ী চট্টগ্রাম বিভাগের প্রতিটি ইউনিটে কার্যক্রম চালু আছে।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক উত্তরাঞ্চলের একটি বিভাগের গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্বে থাকা বিএনপির এক নেতা জানান, কমিটি গঠনে তারা কাজ করে যাচ্ছেন। তিনি বলেন, বিএনপি বড় দল। দলে অনেক নেতা আছেন, আবার সবাই দলের নেতৃত্ব দিতে চান। কিন্তু সবাই তো আহ্বায়ক-সদস্যসচিব হবেন না। কেউ বাদ পড়ে গেলেই তাদের অনুসারীদের বিক্ষোভ করতে দেখা যাচ্ছে। যদিও পরে আবার তা সমাধানও করা হচ্ছে। কমিটিতে ত্যাগীদের মূল্যায়নের বিষয়টি সবচেয়ে বেশি প্রাধান্য দেওয়া হচ্ছে। আওয়ামী লীগের সাড়ে ১৫ বছরে বিএনপি কোথাও সম্মেলন করতে পারেনি, কেন্দ্র থেকে কমিটি দেওয়া হয়েছে। এবার ওয়ার্ড থেকে জেলা পর্যন্ত নির্বাচনের মাধ্যমে কমিটি গঠনের চেষ্টা করা হচ্ছে।

ফরিদপুর বিভাগের দায়িত্বপ্রাপ্ত ভাইস চেয়ারম্যান ড. আসাদুজ্জামান রিপন বলেন, জেলা থেকে তৃণমূল পর্যন্ত গণতান্ত্রিক উপায়ে কাউন্সিলের মাধ্যমে কমিটিগুলো হচ্ছে। ৫ আগস্টের আগে সাড়ে ১৫ বছর ধরে আমরা সাংগঠনিক কর্মকা- করতে পারিনি। ঘরে বসে করতে হয়েছে, প্রেস বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে করতে হয়েছে। তখন অন্য এক ধরনের বাস্তবতা ছিল। এখন আমরা কর্মীদের অংশগ্রহণের মাধ্যমেই কমিটি করছি। সংগঠনকে প্রাণবন্ত রাখতে হলে একটা গণতান্ত্রিক ধারায় কর্মীদের অংশগ্রহণ এবং তাদের আকাক্সক্ষা ও ইচ্ছার প্রতিফলন থাকতে হবে কমিটিতে। তাদের ভোটে কমিটি হতে হবে। এটিই হচ্ছে আমাদের স্পিরিট। সে অনুয়ায়ী কাজ হচ্ছে।

নিউজটি শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এ জাতীয় আরো খবর..
© All rights reserved © 2021 SomoyerKonthodhoni
Theme Dwonload From ThemesBazar.Com