গাজীপুরের শ্রীপুরে মাথায় লাল কাপড় বেঁধে, রাম দা নিয়ে মহড়া ও প্রকাশ্যে চাঁদা চাওয়ার ঘটনায় বহিষ্কৃত সেই যুবদল নেতা জাহাঙ্গীর আলম পিন্টুর বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে।গতকাল শনিবার রাতে ব্যবসায়ী হযরত আলী বাদী হয়ে মামলাটি দায়ের করেন।
পুলিশ জানিয়েছে, মামলায় জাহাঙ্গীর আলমসহ আরও চারজনকে আসামি করা হয়েছে। শ্রীপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. জয়নাল আবেদীন মন্ডল এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন- উপজেলার মুলাইদ মধ্যপাড়া গ্রামের মৃত দুলাল উদ্দিনের ছেলে হাসেম (৩৯), আইনুুদ্দিনের ছেলে আসাদুল ইসলাম (২৪) ও মৃত ছমির উদ্দিনের ছেলে সুমন মিয়া (২৮) এবং টেপিরবাড়ি গ্রামের দেওচালা এলাকার মো. মাইজ উদ্দিনের ছেলে হৃদয় হাসান রাকিব (২৬)।
ওসি মো. জয়নাল আবেদীন জানান, শনিবার বিকেলে এমসি বাজারে চাঁদাবাজিতে অভিযুক্ত যুবদল নেতাসহ পাঁচজন এবং অজ্ঞাত ২০ থেকে ২৫ জনের বিরুদ্ধে থানায় মামলা হয়েছে। রাতেই অভিযান চালিয়ে চারজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। উদ্ধার করা হয়েছে একটি রাম দা। মূলহোতা জাহাঙ্গীর আলমসহ বাকিদের গ্রেপ্তারে অভিযান চলছে।
এর আগে শনিবার বিকেল এমসি বাজারে যুবদলের সদস্য জাহাঙ্গীর আলম পিন্টু দলবল নিয়ে স্বপ্নপুরী হোটেলের সামনে হ্যান্ড মাইকে প্রকাশ্যে চাঁদাবাজির ঘোষণা দেন।বাজারের ব্যবসায়ীদের জিম্মি করে টাকা হাতিয়ে নেন তিনি। প্রকাশ্যে চাঁদাবাজির ভিডিও ফেসবুকে ভাইরাল হলে রাতেই ওই জাহাঙ্গীরকে যুবদলের কেন্দ্রীয় কমিটি বহিষ্কার করে।
বহিস্কৃত যুবদল নেতা জাহাঙ্গীর আলম পিন্টু (৩৫) উপজেলার তেলিহাটি ইউনিয়নের মুলাইদ গ্রামের নূরু বেপারীর ছেলে। তিনি শ্রীপুর উপজেলা যুবদলের আহ্বায়ক কমিটির সদস্য।
জানা যায়, শনিবার বিকেলে ওই নেতার চাঁদাবাজির ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে।ভিডিওতে তাকে বলতে শোনা যায়, ‘জাহাঙ্গীর ভাইয়ের অ্যাকশন ডাইরেক্ট অ্যাকশন, বিসমিল্লাহির রহমানির রহিম প্রিয় দোকানদার ভাইয়েরা আমি জেল থেকে এসে ঘোষণা দিয়েছিলাম যে, এমসি বাজারটাকে আমি আমার নিজস্ব লোক ও আপনাদের সহযোগিতার সুন্দরভাবে পরিচালনা করব। কিন্তু কিছু মানুষের জন্য আমি পারি নাই। আজকে আমি লোকজন নিয়ে বাজারে এসেছি। আপনাদের সঙ্গে সম্পর্ক করতে। আপনাদেরকে সহযোগিতা করতে। আজকের পর থেকে আমি জাহাঙ্গীর যতদিন পর্যন্ত বেঁচে থাকি ততদিন পর্যন্ত আমার নিয়ন্ত্রণে চলবে এমসি বাজার।’
তিনি আরও বলেন, ‘আপনাদেরকে দয়া করে বলছি, এখন এই মুহূর্তে আমার লোকজন খাজনা উঠানো শুরু করবে। কেউ বাধা দেবেন না। বাধা দিলে ভয়াবহ পরিণতি হবে। অনেক খেসারত দিতে হবে। কে বাজার ইজারা নিল- তা আমার জানার বিষয় না। তাই কেউ বাধা দেবেন না। আমাদের কাজ আমাদের করতে দেন। এখনই আমার লোকজন টাকা উঠানো শুরু করবে।’
এ সময় লাল গামছা দিয়ে মাথা-মুখ বাঁধা তার শতাধিক যুবক দেখা গেছে। যাদের হাতে ছিল লম্বা রাম দা ও অন্যান্য দেশীয় অস্ত্র।