মঙ্গলবার, ০১:১৭ পূর্বাহ্ন, ২৮ জানুয়ারী ২০২৫, ১৪ই মাঘ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ , ই-পেপার
নোটিশ :
মানব সেবায় নিয়োজিত অলাভজনক সেবা প্রদানকারী সংবাদ তথ্য প্রতিষ্ঠান।

নতুন জোট গঠনে তৎপর বাম-প্রগতিশীলরা, প্রার্থী ৩০০ আসনেই

সময়ের কণ্ঠধ্বনি ডেস্ক:
  • আপডেট টাইম : শনিবার, ২৫ জানুয়ারি, ২০২৫
  • ৯ বার পঠিত
জাতীয় সংসদ নির্বাচন সামনে রেখে বাম-প্রগতিশীলদের নতুন জোট গঠন করতে আনুষ্ঠানিক কার্যক্রম শুরু হয়েছে। নতুন জোট গঠনে এরই মধ্যে বাম দলগুলোর মধ্যে পারস্পরিক আলোচনা ও বৈঠক শুরু হয়েছে। একই সঙ্গে মহান মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় বিশ্বাসী প্রগতিশীল, গণতান্ত্রিক রাজনৈতিক দল, সামাজিক-সাংস্কৃতিক সংগঠন এবং মুক্তবুদ্ধির চর্চায় বিশ্বাসী বিশিষ্টজনদের সঙ্গেও যোগাযোগ করা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা।বাম সূত্রগুলো বলছে, জুলাই-আগস্ট আন্দোলনের পর দেশের রাজনীতিতে নতুন হিসাব-নিকাশ শুরু হয়েছে।

ত্রয়োদশ সংসদ নির্বাচনের রোডম্যাপ ঘোষণা করা না হলেও এরই মধ্যে রাজনৈতিক দলগুলো জোটবদ্ধ নির্বাচনের লক্ষ্যে সক্রিয় হয়ে উঠছে। বিএনপি ও  জামায়াতে ইসলামী আগামী নির্বাচনকে ঘিরে দেশের ইসলামী দলগুলোকে নিয়ে জোট গঠনের তৎপরতা শুরু করেছে। একই সঙ্গে বাম দলগুলোও নতুন জোট গঠনের চেষ্টায় তৎপর রয়েছে। জোটের পাশাপাশি প্রগতিশীল শক্তিগুলোকে ঐক্যবদ্ধ করতে কাজ শুরু করেছে।
দ্রব্যমূল্য, দেশের আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতিসহ নানা ইস্যুতেও রাজপথে সক্রিয় রয়েছে।বাম দলগুলোর শীর্ষস্থানীয় নেতারা জানান, আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনের জন্য এরই মধ্যে প্রস্তুতি নিতে শুরু করেছে বাম গণতান্ত্রিক জোট। ৩০০ আসনেই তারা প্রার্থী দিতে চায়। সে জন্য জোটের বাইরে বাম ঘরানার অন্য যেসব রাজনৈতিক দল রয়েছে, তাদের সঙ্গে আলাপ-আলোচনা শুরু হয়েছে।
নির্বাচনকে সামনে রেখে নতুন যুক্তফ্রন্ট গঠনের উদ্যোগও নেওয়া হয়েছে। এরই মধ্যে অধ্যাপক সিরাজুল ইসলাম চৌধুরীর নেতৃত্বে কয়েক দফা বৈঠক হয়েছে। সর্বশেষ গত ২১ জানুয়ারি সিপিবি কার্যালয়ে বাম গণতান্ত্রিক জোট ও ফ্যাসিবাদবিরোধী বাম মোর্চার যৌথ বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। বৈঠকে এ বিষয়ে বিস্তারিত আলোচনা হয়েছে।বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক দলের (বাসদ) সাধারণ সম্পাদক বজলুর রশীদ ফিরোজ কালের কণ্ঠকে জানান, সর্বশেষ বৈঠকে দেশের সার্বিক রাজনৈতিক পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনা হয়েছে।

সেখানে সবাই মতামত ব্যক্ত করেছেন, একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধ ও নব্বইয়ের গণ-অভ্যুত্থানের আকাঙ্ক্ষা বাস্তবায়িত হয়নি বলেই চব্বিশের গণ-অভ্যুত্থান ঘটেছে। ফলে শাসক শ্রেণির রাজনৈতিক দলগুলোর বিপরীতে বিকল্প একটি রাজনৈতিক জোট গঠনের প্রতি গুরুত্বারোপ করা হয়েছে। এ নিয়ে অন্যান্য দল ও জোটের সঙ্গে আনুষ্ঠানিক বৈঠক করে সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত করা হবে। চলতি মাসেই গণফোরাম ও বাংলাদেশ জাসদের সঙ্গে আনুষ্ঠানিক বৈঠকের কথা রয়েছে বলে জানান তিনি।নির্বাচনকে সামনে রেখে বৃহত্তর জোট গঠনের প্রক্রিয়া অনেকটা এগিয়েছে বলে জানান বাম গণতান্ত্রিক জোটের শীর্ষ নেতা ও সিপিবির সাধারণ সম্পাদক রুহিন হোসেন প্রিন্স।

কালের কণ্ঠকে তিনি বলেন, ‘নির্বাচনী পরিবেশ সৃষ্টি হলে এবং বিদ্যমান পদ্ধতিতে ভোট হলে বাম গণতান্ত্রিক জোটের ব্যানারে ৩০০ আসনে প্রার্থী দেওয়ার চেষ্টা থাকবে। নির্বাচনে দলীয় নেতাদের পাশাপাশি বাম ও প্রগতিশীল এবং মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় বিশ্বাসী ব্যক্তিদের মনোনয়ন দেওয়া হবে। এরই মধ্যে ভোটের জন্য মাঠ পর্যায়ে নির্বাচনী কার্যক্রম শুরু হয়েছে।

আমাদের নেতাকর্মী এবং সম্ভাব্য প্রার্থীরাও মাঠে রয়েছেন। রাজনৈতিক দলের নেতারা ছাড়াও নির্বাচনে সামাজিক-সাংস্কৃতিক সংগঠন ও পেশাজীবী সংগঠনের নেতা এবং মুক্তবুদ্ধির চর্চায় বিশ্বাসী বিশিষ্টজনদের নির্বাচনে প্রার্থী করার বিষয়ে নতুন জোটের পক্ষ থেকে উদ্যোগ নেওয়া হবে।’

কালের কণ্ঠকে তিনি বলেন, ‘গণ-অভ্যুত্থানের জন-আকাঙ্ক্ষা বাস্তবায়নে বুর্জোয়া দলগুলোকে বাদ দিয়ে একটি নতুন জোট গঠনের উদ্যোগ আছে। এরই মধ্যে আমরা আলোচনা শুরু করেছি। সিপিবি, বাসদ, গণফোরামের সঙ্গে আমাদের আলোচনা হয়েছে।

বাম, গণতান্ত্রিক, প্রগতিশীল, উদারনৈতিক দলকে নিয়ে এ ধরনের একটি জোট গঠনের চেষ্টা চলছে। আগামী বৈঠকে কর্মপরিকল্পনা নিয়ে আলোচনা হবে। নতুন জোটে দ্বিদলীয় ধারার বাইরে বাম-প্রগতিশীল দল, মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় বিশ্বাসী অসাম্প্রদায়িক দল ও সংগঠন, এমনকি ব্যক্তিকেও ঐক্যবদ্ধ করার চেষ্টা থাকবে।’

বাম দলগুলোর নীতিনির্ধারকরা মনে করেন, স্বাধীনতার পর থেকে দেশ শাসন করেছে আওয়ামী লীগ, বিএনপি ও জাতীয় পার্টির মতো বুর্জোয়া রাজনৈতিক দল, যারা মূলত ধনিক শ্রেণির প্রতিনিধিত্ব করে। যে কারণে সাধারণ মানুষের ভাগ্যের পরিবর্তন হয়নি। এ জন্য বুর্জোয়াদের বিপক্ষে দাঁড়িয়ে গণতন্ত্রের পক্ষে লড়াই জোরদার করতে বাম-প্রগতিশীলদের ঐক্যবদ্ধ প্ল্যাটফরম জরুরি। সেই তাগিদ থেকেই যুক্তফ্রন্ট গঠনের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।

এরই মধ্যে এই প্রক্রিয়ার সঙ্গে যুক্ত হয়েছে বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি (সিপিবি), বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক দলসহ (বাসদ) বাম গণতান্ত্রিক জোটভুক্ত দলগুলো, ফ্যাসিবাদবিরোধী বাম জোটের শরিক দলগুলো, গণতান্ত্রিক বাম ঐক্যভুক্ত পাঁচটি দল, বাংলাদেশ জাসদ এবং ঐক্য ন্যাপ। এ ছাড়া পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতি, দলিত ও ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর একাধিক সংগঠন, গণতান্ত্রিক সাংস্কৃতিক ঐক্যসহ বিভিন্ন সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠনের সঙ্গে আলাপ-আলোচনা চলছে।

আগামী মাসে ‘গণতান্ত্রিক যুক্তফ্রন্ট’ নামে নতুন এই জোটের আনুষ্ঠানিক প্রকাশ হবে বলে জানা গেছে।

নিউজটি শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এ জাতীয় আরো খবর..
© All rights reserved © 2021 SomoyerKonthodhoni
Theme Dwonload From ThemesBazar.Com