বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট নিম্নচাপটি আগ্রাসী রূপ নিচ্ছে। এটি আগামীকাল রোববার দুপুরের দিকে উপকূলে আঘাত হানতে পারে। এমনই পূর্বাভাস দিয়েছেন কানাডাভিত্তিক জলবায়ু বিশেষজ্ঞ মোস্তফা কামাল পলাশ। তিনি জানান, গভীর নিম্নচাপটি পায়রা সমুদ্রবন্দর থেকে প্রায় ৬০০ কিলোমিটার দক্ষিণে অবস্থান করছিল এবং ঘণ্টায় প্রায় ১৫ কিলোমিটার বেগে উত্তর দিকে অগ্রসর হচ্ছে।
আবহাওয়া ওয়েবসাইটে পলাশ জানান, জাপানের কৃত্রিম ভূ-উপগ্রহ থেকে প্রাপ্ত চিত্র বিশ্লেষণ করে দেখঅ যাচ্ছে যে গভীর নিম্নচাপটির কেন্দ্র বর্তমানে ১৬.৮ ডিগ্রি উত্তর অক্ষাংশ এবং ৮৯.৪ ডিগ্রি পূর্ব দ্রাঘিমাংশের ওপরে অবস্থান করছে। গভীর নিম্নচাপটি বর্তমানে খুবই আগ্রাসীভাবে শক্তিশালী ও সংগঠিত হচ্ছে। কারণ, বর্তমানে এটি যেখানে অবস্থান করছে, সেখানকার সাগরের পানির তাপমাত্রা ৩০ থেকে ৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস, যা গভীর নিম্নচাপটিকে শক্তি যোগান দিচ্ছে। ফলে আশঙ্কা করা হচ্ছে যে আজ শনিবার সকাল ৯টার আগেই এটি পূর্ণাঙ্গ ঘূর্ণিঝড়ে পরিণত হবে।
পলাশ জানান, ঘূর্ণিঝড় রেমালের কেন্দ্র রোববার সকালের বদলে দুপুর ১২টার পর উপকূল অতিক্রম করতে পারে। আর ঘূর্ণঝড় বৃত্তের পেছনের অর্ধেক অংশ সোমবার সকাল থেকে দুপুরের মধ্যে উপকূল অতিক্রম করতে পারে।
উল্লেখ্য, সাগরে ঘূর্ণিঝড় অথবা নিম্নচাপ সৃষ্টি হলে স্থলভাগে উচ্চ তাপমাত্রা বিরাজ করে। ঘূর্ণিঝড়টি উপকূলে উঠে আসার আগে স্থলভাগে বৃষ্টিপাত বন্ধ হয়ে যায়। ফলে দেশের বিভিন্ন স্থানে তাপপ্রবাহের অবস্থার সৃষ্টি হয়। চলতি মে মাসের শুরু থেকেই বাংলাদেশে তাপপ্রবাহ চলছিল। মাঝখানে এক সপ্তাহ বিরতি দিয়ে আবারো শুরু হয় মৃদু থেকে মাঝারি ধরনের তাপপ্রবাহ। বাংলাদেশ আবহাওয়া অধিদফতর আজ শনিবার সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত দেশের সব বিভাগে মৃদু থেকে মাঝারি ধরনের তাপপ্রবাহ বিরাজ করবে বলে পূর্বাভাস দিয়েছে। গতকাল শুক্রবার রাতের তাপমাত্রা সামান্য বেড়ে যাওয়ার কথা বললেও আজ শনিবার দিনের বেলার তাপমাত্রা আগের মতোই অপরিবর্তিত থাকতে পারে বলে পূর্বাভাস দিয়েছে। গতকাল শুক্রবার দেশে সবচেয়ে বেশি তাপমাত্রা রেকর্ড হয় চুয়াডাঙ্গায় ৪০ ডিগ্রি সেলসিয়াস। ঢাকার সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল ৩৮.৯ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এত তাপমাত্রার মধ্যেও গতকাল সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত এর আগের ২৪ ঘণ্টায় মাঈজদীকোর্টে ৪০ মিলিমিটার বৃষ্টি হয়েছে। এ ছাড়া সীতাকুণ্ডে ১২ মিলিমিটার এবং রাজশাহীতে ৬ মিলিমিটার বৃষ্টি হয়েছে।