প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ‘যারা নির্বাচনের ধোঁয়া তোলে, আর প্রতিদিন আমাদেরকে ক্ষমতা থেকে হটায়, তারা কখনো অবাধ-নিরপেক্ষ নির্বাচন চায় না। তাদের প্রতিষ্ঠাই হয়েছে অবৈধভাবে ক্ষমতা দখলকারীর হাত থেকে।’
সরকারপ্রধান বলেন, ‘ভোট চুরি করা ছাড়া তারা কোনোদিন ক্ষমতায় আসেনি। যে কারণে ২০০৮ এর নির্বাচনে বিএনপি নেতৃত্বাধীন ২০ দলীয় জোট ৩০০ আসনে মাত্র ২৯টি সিট পেয়েছিল। তারপর থেকে তারা নির্বাচন বয়কট, নির্বাচন নিয়ে খেলা, আগুন-সন্ত্রাসে মেতে আছে।’
পদ্মা সেতু রেল সংযোগ প্রকল্পের ঢাকা-ভাঙ্গা অংশের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে আজ মঙ্গলবার মাওয়া রেলস্টেশন প্রাঙ্গণ থেকে প্রধান অতিথির বক্তব্যে প্রধানমন্ত্রী এসব কথা বলেন।
শেখ হাসিনা বলেন, ‘পদ্মা সেতু নির্মাণ নিয়ে অনেক ষড়যন্ত্র হয়েছিল। অনেক চক্রান্ত হয়েছিল। এক ভদ্রলোক… হ্যাঁ বিশ্বজুড়ে নাম জুড়িয়েছে তার, কিন্তু সামান্য একটি ব্যাংকের এমডি পদে থাকতে পারবে না বয়সের কারণে, সেটা বলার কারণে পদ্মা সেতুর টাকা বন্ধ করিয়ে দিয়েছিল বিশ্ব ব্যাংক। তার পক্ষে। সেইদিন বলেছিলাম, নিজের অর্থে পদ্মা সেতু তৈরি করব। ইনশাআল্লাহ আমরা তা করে দেখিয়েছি। ৭ মার্চের ভাষণে জাতির পিতা বলেছিলেন, বাঙালিকে কেউ দাবায়ে রাখতে পারবে না। এই বাঙালিকে কেউ দাবায়ে রাখতে পারবে না। বাঙালি ঐক্যবদ্ধ থাকবে।’
শেখ হাসিনা বলেন, ‘আজকে সুষ্ঠু ভোটের কথা বলে, অবাধ-নিরপেক্ষ নির্বাচনের কথা বলে, আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় আসছে বলেই অবাধ-নিরপেক্ষ নির্বাচন হয়। আর যারা নির্বাচনের ধোঁয়া তোলে, আর প্রতিদিন আমাদেরকে ক্ষমতা থেকে হটায়, তারা কখনো অবাধ-নিরপেক্ষ নির্বাচন চায় না। তাদের প্রতিষ্ঠাই হয়েছে অবৈধভাবে ক্ষমতা দখলকারীর হাত থেকে।’
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘৭৫ সাল থেকে ৯৬, আর ২০০১ থেকে ২০০৮ এই ২৯ বছর যারা ক্ষমতায় ছিল তারা কেন পারেনি বাংলাদেশের সার্বিক উন্নয়ন করতে। আসলে তারা স্বাধীনতায় বিশ্বাস করেনি, মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় বিশ্বাস করেনি, এদেশের মানুষের দিকে ফিরে তাকায়নি। কিন্তু আওয়ামী লীগ সরকার আসার পর আমরাই প্রথম এদেশের মানুষের ভাগ্য পরিবর্তনে যে কর্মসূচি নিয়েছি তার সুফল আজ দেশবাসী পাচ্ছে।’
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, ‘স্মার্ট বাংলাদেশে সব কিছু স্মার্ট হবে এটাই আমাদের লক্ষ্য। আজকে স্বপ্নপূরণের দিন। এই শুভদিনে সবাইকে আন্তরিক শুভেচ্ছা জানাই।’
তিনি বলেন, ‘কারও কাছে হাত পেতে নয়, কারও কাছে মাথা নিচু করে নয়, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবের বাংলাদেশের প্রতিটি মানুষ বিশ্ব দরবারে সম্মানের সাঙ্গে মাথা উঁচু করে চলবে এটাই আমাদের লক্ষ্য।’
এই মাহেন্দ্রক্ষণে তিনি শ্রদ্ধার সঙ্গে স্মরণ করেন বাংলাদেশের স্বাধীনতার স্থপতি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান, চার নেতা, নিহত মুক্তিযোদ্ধা, ’৭৫ এর ১৫ আগস্টে নিহত শহীদদের। বক্তব্য শেষে প্রধানমন্ত্রী পদ্মা সেতু হয়ে ঢাকা-ভাঙ্গা রুটে নতুন ট্রেন চলাচলের উদ্বোধন করেন।
পদ্মা সেতু হয়ে ঢাকা-যশোর পর্যন্ত রেলপথ চলে গেছে ১৭২ কিলোমিটার। এর মধ্যে ফরিদপুরের ভাঙ্গা পর্যন্ত ৮২ কিলোমিটার রেলপথের কাজ শেষ হয়েছে। যা উদ্বোধন হলো আজ।
উদ্বোধনের এক সপ্তাহ পর বাণিজ্যিকভাবে ট্রেন চলাচল শুরু হবে এ রুটে। এরই মধ্যে পরীক্ষামূলকভাবে ট্রেন চালানোর প্রাথমিক পদক্ষেপ সম্পন্ন করেছে রেল কর্তৃপক্ষ।নতুন রেলপথটি ঢাকার গেন্ডারিয়া, কেরানীগঞ্জ, মুন্সিগঞ্জ থেকে পদ্মা সেতু হয়ে মাদারীপুর-ফরিদপুর গেছে। আগামী বছর এই রেলপথের বাকি অংশ ভাঙ্গা থেকে যশোর পর্যন্ত চালুর লক্ষ্য রয়েছে সরকারের।