চিকিৎসার জন্য বিএনপির তিন শীর্ষ নেতার সিঙ্গাপুরে অবস্থান নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন আওয়ামী লীগের যুগ্মসাধারণ সম্পাদক এবং তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী হাছান মাহমুদ।
রোববার এক অনুষ্ঠানে আওয়ামী লীগ নেতা হাছান বলেন, ‘এখন দেখলাম বিএনপির তিন নেতা সিঙ্গাপুর গেছেন। পত্র-পত্রিকা লিখছে এটা কি আদৌ চিকিৎসা? নাকি আরও কোনো ষড়যন্ত্র করার উদ্দেশ্যে তাদের তিন নেতা একই সঙ্গে সিঙ্গাপুর গেলেন। এটি অনেকের প্রশ্ন।’
বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর এবং স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস বর্তমানে সিঙ্গাপুরে অবস্থান করছেন। সঙ্গে তাদের স্ত্রীও রয়েছেন। তাদের আগে চিকিৎসার জন্য সিঙ্গাপুর গেছেন দলের আরেক স্থায়ী কমিটির সদস্য খন্দকার মোশাররফ হোসেন।
জাতীয় প্রেস ক্লাবে আইভি রহমানের ১৯তম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে এক আলোচনা সভায় তথ্যমন্ত্রী বলেন, ‘৫ আগস্টের হত্যাকাণ্ড ঘটিয়েছে মোশতাক এবং জিয়া। আর ২১ আগস্টের হত্যাকাণ্ড ঘটিয়েছে তারেক রহমান। তারা আসলে হত্যার রাজনীতিটাই করে। হত্যার রাজনীতির মাধ্যমেই জিয়াউর রহমানের উত্থান এবং ক্ষমতায় টিকে থাকাটাও হত্যার রাজনীতির মাধ্যমে অব্যাহত রেখেছে। তার (জিয়াউর রহমান) বিরুদ্ধে যখনই সেনাবাহিনীতে ক্যুর প্রচেষ্টা হয়েছে, তখনই নির্বিচারে সেনাবাহিনীর কর্মকর্তা ও সৈনিকদের হত্যা করা হয়েছে।
আইভি রহমান পরিষদের ওই অনুষ্ঠানে হাছান মাহমুদ আরও বলেন, ‘এভাবে জিয়াউর রহমান ক্ষমতাকে নিষ্কণ্টক করার চেষ্টা করেছিল, করতে পারেনি। তার লোকই তাকে হত্যা করেছে। খালেদা জিয়া সোয়া দুই দফায় ১০ বছর ক্ষমতায় ছিলেন, কিন্তু জিয়াউর রহমানের হত্যাকাণ্ডের বিচার করেননি। কারণ কী? কেঁচো খুঁড়তে সাপ বের হবে, সেজন্য জিয়াউর রহমানের হত্যাকাণ্ডের বিচার করেননি। বেগম জিয়া ও তারেক রহমানের নেতৃত্বে আজকের বিএনপিও সেই হত্যার রাজনীতি থেকে বের হয়ে আসতে পারেনি।’
‘ক্ষমতায় যাওয়ার জন্য বেগম খালেদা জিয়া ও তারেক রহমানের নেতৃত্বে মানুষের ওপর বোমা মারে, মানুষ মারে, পেট্রোল বোমা মারে। পুলিশের ওপর হামলা পরিচালনা করে পুলিশ হত্যা করেছে। বিএনপির সময় গাছ কেটেছে। মুরগীবাহী গাড়ির ওপর হামলা। আরে ভাই মুরগী কী দোষ করলো? গরুবাহী ট্রাকের ওপর হামলা। জীবন্ত মানুষ পুড়িয়ে মারাতো আছেই। এরওপর পশু-পাখির ওপর হামলা। প্রকৃতি, পশু-পাখি এর ওপর হামলা। এই হচ্ছে বিএনপির চরিত্র।’
আওয়ামী লীগের এই যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক বলেন, গণতন্ত্র সমুন্নত রাখার স্বার্থে বিএনপিকে নির্বাচনে আসা উচিত। নির্বাচন বর্জন করার অধিকার বিএনপির আছে। কিন্তু নির্বাচন প্রতিহত করার চেষ্টা যদি কেউ করে তাহলে দেশের মানুষ কঠোর হস্তে সেটি প্রতিহত করবে। বিএনপির নির্বাচনের বর্জনের হুকমিতে কিছু যায় আসে না। এটি ২০১৪ সাল নয়। এটি ২০২৩ সাল। এখন ২০১৩-১৪ সালের পুনরাবৃত্তি করবেন, সেটি এই দেশের মানুষ করতে দেবে না।
তিনি আরও বলেন, দেশ থেকে যদি অপরাজনীতি, মানুষ হত্যার রাজনীতি, জিঘাংসার রাজনীতি, প্রতিহিংসার রাজনীতি বন্ধ করতে হয়, তাহলে যারা প্রতিহিংসা ও অপরাজনীতি করে, তাদের রাজনৈতিক দৃশ্যপট থেকে বিদায় করা দরকার। নইলে এই অপরাজনীতি বন্ধ হবে না।
আইভি রহমান পরিষদের আহ্বায়ক ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক ড. আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিকের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য রাখেন আওয়ামী লীগের সাংস্কৃতিক বিষয়ক সম্পাদক অসীম কুমার উকিল, বাংলাদেশ যুব মহিলা লীগের সভানেত্রী ডেইজি সারোয়ার।