মাদারীপুরে রাজীব সরদার হত্যা মামলায় ২৩ জনকে মৃত্যুদণ্ড এবং ছয়জনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছে আদালত।
মঙ্গলবার (২১ মার্চ) অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক লায়লাতুল ফেরদৌস এ রায় দেন।
মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্তরা হলেন, আব্দুল হাই হাওলাদার (৫৫), আব্দুল হক হাওলাদার (৫৮), জহিরুল হাওলাদার (৩৬), রাসেল হাওলাদার (৩৮), রাজা হাওলাদার (৫০), কালু হাওলাদার (৫৫), সোবহান হাওলাদার (৫০) তুষার শরীফ (৩০), ইউসুপ হাওলাদার (৪০), আজিজুল হাওলাদার (৪৮), রহিম হাওলাদার (৫২), রেজাউল হাওলাদার (৫৪), শামিম হাওলাদার (৩০), আহাদ হাওলাদার (২৯), দলিলউদ্দিন হাওলাদার(৫২), অলিলউদ্দিন হাওলাদার (৫৫), জসিম হাওলাদার (৩৮), মনির হাওলাদার (৩৭), সুমন শরীফ (৩২), সাগর শরীফ (৩০, হাফিজুল কাজী (৩৮), কালু কাজী (৪২), আলাউদ্দিন কাজী (৩০)।
যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্তরা হলেন, সেকেন হাওলাদার (৫০), উজ্জ্বল হাওলাদার (৪২), জামাল হাওলাদার (৪৮), রুবেল হাওলাদার (৩২), নুরুল আমিন হাওলাদার (৫৩) ও বাকিবিল্লা হাওলাদার (৫৮)।
আদালতের রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী সিদ্দিকুর রহমান সিংহ বলেন, এটি একটি ঐতিহাসিক রায়। মামার সাথে বিরোধের জেরে তার ভাগ্নেকে নৃশংসভাবে কুপিয়ে হত্যা করে প্রতিপক্ষরা। আজ দীর্ঘ ১১ বছর যুক্তিতর্ক শেষে আদালত এই মামলার ২৩ জনকে ফাঁসির আদেশ দেন। আমরা রাষ্ট্রপক্ষ রায়ে সন্তুষ্ট।
তিনি জানান, মামলা চলাকালে তিন আসামির মৃত্যু হওয়ায় তাদের নাম বাদ দেয়া হয়েছে। এ ছাড়া অভিযোগ প্রমাণিত না হওয়ায় আরো ৪ জনকে বেকসুর খালাস দেয়া হয়।
রাজীব সরদারের (২৫) বাবা-মা নেই। তিনি সদর উপজেলার হরিকুমারিয়া এলাকায় তার মামাবাড়ি থাকতেন। তারাই তাকে বড় করেছেন।
২০১২ সালের ১ সেপ্টেম্বর সকাল সাড়ে ৮টায় বিরোধের জের ধরে প্রতিপক্ষ হরিকুমারিয়া এলাকায় রাজীব সরদারকে কুপিয়ে ফেলে যায়। পরিবারের লোকজন তাকে উদ্ধার করে প্রথমে ফরিদপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যায়। পরে সেখান থেকে তাকে ঢাকায় স্থানান্তর করা হয়। পথে রাজবাড়ী মোড়ে তিনি মারা যান।
এ ঘটনায় তার মামা আলী হাওলাদার ৪৭ জনকে আসামি করে মাদারীপুর সদর থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন।
পরবর্তীকালে সদর থানা পুলিশের তৎকালীন পুলিশের উপ-পরিদর্শক রাজিব হোসেন তদন্তের পর ২০১২ সালের ৩১ ডিসেম্বর ৩৬ জনকে অভিযুক্ত করে আদালতে অভিযোগপত্র জমা দেন।
রায় ঘোষণার সময় আদালতে ২২ আসামি উপস্থিত ছিলেন। বিচার চলাকালে তিন আসামি মারা গেছেন।
আদালত যাবজ্জীবনপ্রাপ্ত ছয় আসামিকে ৫০ হাজার টাকা করে জরিমানাও করেছে।